ব্লু হোয়েলের কথা মনে আছে?২০১৭ সালে তান্ডব চালিয়েছে এই ব্লু হোয়েল। পত্র-পত্রিকা ,টিভি,নিউজ পোর্টালে কেবল এক নিউজ “মরণফাদ ব্লু হোয়েল”। অভিভাবকদের মুখেও এক কথা ! কড়া জবাব, ফের যদি তোকে ফোনে গেম খেলতে দেখেছি,তাহলে তুই আছিস,না হয় তোর ফোন আছে।
তারপর ৩ টা বছর পাড়ি দিলাম । ঝোনঝাটমুক্ত তিনটা বছর । এরই মধ্যে শুরু হলো করোনা,দিলো লকডাউন,আর সেই৩ বছর আগের ঘটনার পুনরাবৃতি আবার ঘটল ! পাবজি , ফ্রিফায়ার বা তার সমগোত্রীয় গেম কে কেন্দ্র করে ঝড়ে গেলো একটা প্রান !
এবং এটিই মূলত পাবজি বা তার সমগোত্রীয় গেম এবং ব্লু হোয়েলের ভেতরকার সাদৃশ্য । অর্থাৎ গেম আপনি যেটাই খেলুন না গেলো , যে পারপাজেই খেলুন না কেনো ঘুরে ফিরে দেখবেন দেশের কোনো না কোনো প্রান্ত থেকে খবর আসবে চলে আসবে “ফ্রি ফায়ার বনাম পাবজি সাপোর্টারের সংঘর্ষ”, “এমবি কেনার টাকা না পেয়ে কিশোরের আত্মহত্যা”।
কিন্তু বৈশাদৃশ্য ঐ একটা জ্যাগাতেই । আত্মহত্যার খবরে হয়তো দেখবেন ব্লু হোয়েল প্লে স্টোর থেকে ব্যান হয়ে যাবে , অথচ পাবজি-ফ্রিফায়ার টিকেই থাকবে। ওহ হ্যা আরেকটা বৈশাদৃশ্য রয়েছে। ব্লু হোয়েল নিজেকে গ্রাস করার প্রশিক্ষণ দেবে আর পাবজি-ফ্রিফায়ার নিজেকে বাচিয়ে অন্য মানুষদের।
যেখানে বিশেষজ্ঞরা বলছে, “ব্যাটেল গ্রাউন্ড এর এই গেমগুলির প্রভাব ভয়াবহ।” এখন আমরা আমরা ঠাহর করে উঠতে পারছি না,কিন্তু আজকের দিনে যারা এই বিনোদনের উৎস ব্যবহার করছে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে । কেননা একটা রিসোর্সে দেখা গিয়েছে , আপনি ভার্চুয়ালি যদি একটা কাজ প্রতিদিন ১ ঘন্টা এবং ৫ বছরে ১৭০০ ঘন্টা করেন তাহলে সেই কাজের উপর আপনার পূর্নাঙ্গ আগ্রহ জন্মে যাবে । এবং এটি খুবই প্রবল । মনে করুন আপনি একটা ডিটেক্টিভ গেম খেলছেন এটা যদি আপনার নেশায় পরিনত হয় তাহলে গোয়েন্দাগীরী করাটা আপনার নেশা নয় পেশায় পরিনত হবে । এবং ঠিক একই ভাবে ভার্চুয়াল প্লার্টফর্মে মানুষ মারা যদি আপনার নেশা হয় , তাহলে রিয়েল লাইফেও মানুষ মারা টা আমাদের নেশা নয় , পেশায় পরিণত হবে । কাজেই পাবজি-ফ্রিফায়ার গেমারদের ভবিষ্যতের বিপত্তি কিছুটা হলেও আন্দাজ করা যাচ্ছে । তবে এমনটা যেনো না হয় সেটাই কাম্য !
আর আরো বিপত্তির বিষয় হলো, স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকার কারণে এই গেমের প্রতি আসক্তি আরো বেড়ে চলেছে । এখন এই মূহূর্তে অনেক বুদ্ধিজীবীরা রটিয়ে বেড়াচ্ছে, “স্কুল খুলে দেওয়া হোক,পোলাপাইন,গেমে আসক্ত হয়ে পড়ছে।এভাবে চলতে থাকলে তো এমনই স্বাস্থ্যহানি হয়ে কয়েকটা প্রাণ ঝড়ে যাবে” কিন্তু এদিকে আবার স্কুল খুললে করোনায় প্রাণ ঝড়ে পড়বে সে খেয়াল উনাদের নেই ! এখন অবস্থা হয়েছে শাখের করাতের মতো ! উভয় সংকট । স্কুল খুললেও মরা,না খুলেও মরা !