বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তিগত বাজার গবেষণা সংস্থা- ক্যানালিসের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২১ সালের ২য় প্রান্তিকে দেশের স্মার্টফোন বাজারে শীর্ষস্থান দখল করেছে রিয়েলমি। ২০২০ এর ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে অফিশিয়ালি যাত্রা শুরুর পর এ মাইলফলকে পৌঁছাতে রিয়েলমি’র সময় লেগেছে মাত্র ১ বছর ৩ মাস। প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশের স্মার্টফোন বাজারে রিয়েলমি’র বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৫৮ শতাংশ।
পাশাপাশি, মার্কেট রিসার্চ কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিক্স’র মতে, বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে ১০ কোটি স্মার্টফোন বিক্রির মাইলফলক অর্জন করেছে রিয়েলমি। তরুণ প্রজন্ম কেন্দ্রিক ব্র্যান্ড রিয়েলমি এ মাইলফলকটি অর্জন করেছে মাত্র তিন বছরে।
এছাড়া, গত বছর এবং চলতি বছরে দেশের বাজারে রিয়েলমি আরও বেশ কিছু মাইলফলক স্পর্শ করেছে। রিয়েলমির ১ম সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশে তৈরি স্মার্টফোন রিয়েলমি সি২১ দারাজের ২০২১ সালে দ্রুততম বিক্রিত স্মার্টফোনে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি, ২০২১ সালে দারাজ ইলেট্রনিক্স উইকে সর্বকালের সর্বোচ্চ বিক্রিত স্মার্টফোন ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে রিয়েলমি। ২০২০ সালে রিয়েলমি অর্জন করে নেয় তরুণদের সেরা পছন্দের ব্র্যান্ডের খেতাব। ২০২০ সালে পিকাবুর পবিত্র মাহে রমজান ক্যাম্পেইনে বেস্ট সেলিং ব্র্যান্ড এবং দারাজের ঈদ-উল-আযহা ক্যাম্পেইনে সর্বোচ্চ বিক্রিত স্মার্টফোন ব্র্যান্ডের খেতাবও অর্জন করে নেয় রিয়েলমি।
ক্রমবর্ধমান সম্প্রসারনের মাধ্যমে স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিভিন্ন মাইলফলক অর্জনের অগ্রযাত্রায় নিজের নামের পাশের আরেকটি ‘প্রথম’ হওয়ার সফলতা যোগ করেছে রিয়েলমি। এ অর্জনটি প্রমাণ করে যে, আন্তর্জাতিকভাবে রিয়েলমি’র বিক্রয় ও ব্যবসায়িক কৌশল কার্যকরি ও গ্রহণযোগ্য। ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও, অল্প সময়ের মধ্যে রিয়েলমি সারাবিশ্বের ৬১ টি বাজারে নিজেদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের প্রসার করেছে এবং বর্তমানে এটি বিশ্বের ৭ম বৃহত্তম স্মার্টফোন ব্র্যান্ড। এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে বিভিন্ন দেশে রিয়েলমি’র অবস্থান বিবেচনা করলে ক্যানালিসের প্রতিবেদন অনুসারে দেখা যায়, বর্তমানে রিয়েলমি স্মার্টফোন নির্মাতা হিসেবে বাংলাদেশ এবং ফিলিপাইনে ১ম স্থানে রয়েছে, ভারত ও রাশিয়ায় রয়েছে ৪র্থ অবস্থানে এবং ইউরোপ অঞ্চলে রয়েছে ৫ম অবস্থানে।
বৈশ্বিক মহামারির ফলে স্মার্টফোন ব্যবহারে এসেছে নানা ধরণের সংযোজন ও পরিবর্তন। নতুন পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে নিজেদের দক্ষতা বিকাশ, ঘরে বসে কাজ, প্রিয় মানুষদের সাথে যোগাযোগসহ এমন অনেক কিছুই স্মার্টফোন ব্যবহারে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তবে, নতুন সংযোজন হলেও অন্যান্য খাতের মত স্মার্টফোন খাতেও এ মহামারি সঙ্কটের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কয়েক মাস যাবত বিক্রয় ও উৎপাদন বন্ধ থাকায় বহু স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে মারাত্বকভাবে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। তবে, গত দুই বছর এমন উদ্বেগজনক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, রিয়েলমি দক্ষতার সাথে বাজার পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী সাশ্রয়ী মূল্যে ক্রেতাদের নিকট স্মার্টফোন পৌছে দিয়ে ব্র্যান্ডটির সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।
তরুণদের মাঝে স্মার্টফোন ব্যবহারের ব্যপ্তি বাড়লেও, তরুণ প্রজন্ম নির্ভর বাজার পুরোপুরি বিকশিত ছিল না। রিয়েলমি সফলতার সাথে তরুণ শিক্ষার্থী ও তরুণ পেশাজীবিদের চাহিদা অনুযায়ী স্মার্টফোন তৈরি করার মাধ্যমে এ বাজারটির সঠিক ব্যবহার করে নিজেদেরকে তরুণ প্রজন্ম কেন্দ্রিক ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। যাত্রা শুরুর পর থেকেই দুর্দান্ত ডিজাইন এবং স্পেসিফিকেশনের অত্যাধুনিক স্মার্টফোন ও এআইওটি প্রযুক্তি তৈরি করছে প্রতিষ্ঠানটি।
মোবাইল ফোন ও স্মার্টফোন বহু বছর ধরে সব শ্রেণীর মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। চলমান মহামারীর কারণে সৃষ্ট সামাজিক দূরত্বের ফলে এখন সরাসরি পেমেন্টের পরিবর্তে মোবাইলে ক্যাশলেস পেমেন্টের পরিমাণ বাড়ছে এবং মোবাইল বাণিজ্যের এই ঊর্ধ্বগতির কারণে বাড়ছে স্মার্টফোনের ব্যবহার। অ্যাসেট-লাইট ও শর্ট চ্যানেল কৌশল ব্যবহার করে রিয়েলমি আন্তর্জাতিকভাবে এমন দুর্দান্ত হারে তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করতে সক্ষম হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি আউটলেট নির্মাণের পাশাপাশি অনলাইনে বিক্রির দিকে জোর দিয়েছে। করোনা সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা পেতে মানুষ অনলাইন কেনাকাটার দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছে, যা রিয়েলমিকে আরও সুবিধাজনক জায়গায় নিয়ে যেতে সাহায্য করছে।
রিয়েলমি’র ‘ডেয়ার টু লিপ’ দর্শন তরুণ প্রজন্মকে বেড়ে উঠতে, ক্রমাগত নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে এবং বাঁধার সীমা অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করছে। প্রতিষ্ঠানটির এমন অনন্য দৃষ্টিভঙ্গি তরুণদের এগিয়ে যেতে ও তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম করে তোলে। যার ফলে রিয়েলমি’র জন্য তরুণদের জীবনের মানোন্নয় তাদের ব্যবসায়িক উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
রিয়েলমি’র পরবর্তী লক্ষ্য আগামী দুই বছরের মধ্যে আরো একবার ১০ কোটি স্মার্টফোন বিক্রির মাইলফলক অর্জন করা। পাশাপাশি, আগামী ৩ বছরের মধ্যে তরুণ ব্যবহারকারীদের কাছে ১০ কোটি ৫জি ফোন সরবরাহের লক্ষ্যে, তরুণদের পছন্দের ব্র্যান্ড রিয়েলমি ৫জি পণ্যের এক বিস্তৃত পোর্টফলিও তৈরিতে কাজ করছে। রিয়েলমি তাদের উন্নত ‘১+৫+টি’ কৌশলের সাথে এআইওটি ২.০ বিকাশের পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। এর ফলে সাশ্রয়ী মূল্যের ৫জি ফোন ছাড়াও রিয়েলমি আরও অনেক এআইওটি পণ্য তরুণ ক্রেতাদের জন্য বাজারে নিয়ে আসবে। ৫জি প্রযুক্তির অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে এবং সবার জন্য ৫জি নিশ্চিত করতে রিয়েলমি আগামী দিনে আরও বেশি বেশি স্মার্ট ডিভাইস বাজারে নিয়ে আসবে।
রিয়েলমি তরুণদের কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা একটি স্মার্টফোন ব্র্যান্ড। রিয়েলমি তাদের লক্ষ্য সম্পর্কে অবগত এবং সে অনুযায়ীই তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। তরুণ প্রজন্ম কেন্দ্রিক ব্যবসায়িক পরিকল্পনা, ভৌগলিকভাবে নির্দিষ্ট বাজারে চাহিদা অনুযায়ী স্মার্টফোন সরবরাহ ও চাহিদা একত্রীকরণের ব্যবহার রিয়েলমিকে অন্যান্য ব্র্যান্ডের থেকে আলাদা করে তুলেছে।