আগামী দুই বছরের মধ্যে বিশ্বের প্রযুক্তি বাজার দখলে নেবে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিন (আইবিএম) উদ্ভাবিত নতুন কোয়ান্টাম কম্পিউটিং চিপ। এছাড়া সাধারণ কাজের ক্ষেত্রে কোয়ান্টাম সিস্টেম সাধারণ কম্পিউটারকে ছাড়িয়ে যাবে। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসব কথা জানান। খবর রয়টার্স ও এনগ্যাজেট।
আইবিএম জানায়, তাদের ঈগল নামের কম্পিউটিং চিপে ১২৭টি কিউবিটস রয়েছে। যেগুলো সংরক্ষিত তথ্যকে কোয়ান্টাম আকারে দেখাবে। প্রচলিত কম্পিউটার ১ অথবা ০ এ দুটি বিট নিয়ে কাজ করে। অন্যদিকে আইবিএমের চিপটি একই সঙ্গে দুটি বিটে কাজ করতে সক্ষম।
দুই বিটে কাজ করার সক্ষমতার কারণে অদূর ভবিষ্যতে কোয়ান্টাম কম্পিউটার সাধারণ কম্পিউটারের তুলনায় গতিশীল হবে। কিন্তু কিউবিটস গঠন করা খুবই কঠিন এবং নির্ভুল কাজের জন্য ক্রায়োজেনিক রেফ্রিজারেটরের অধিক জায়গার প্রয়োজন হয়।
অ্যাপলের সর্বাধুনিক এম১ ম্যাক্স চিপে ৫ হাজার ৭০০ কোটি ট্রানজিস্টর রয়েছে। আইবিএমের দাবি তাদের ঈগল চিপে শতাধিক কিউবিটস রয়েছে, যা এ ক্যাটাগরিতে প্রথম। তবে প্রতিষ্ঠানটি জানায় নিউইয়র্কে চিপ নির্মাণের সময় প্রাপ্ত তথ্য আরো কিউবিট উৎপাদনে সাহায্য করবে। বিশেষ করে কোয়ান্টাম কম্পিউটারের রেফ্রিজারেশন ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সঙ্গে অর্জিত জ্ঞান যুক্ত করার পর কার্যক্ষমতা বাড়বে। ২০২২ সালে ৪৩৩ কিউবিট-সংবলিত অসপ্রে ও ১ হাজার ১২১ কিউবিটের কন্ডর চিপ উৎপাদনে পরিকল্পনা গ্রহণের কথা জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এক সাক্ষাত্কারে আইবিএমের কোয়ান্টাম হার্ডওয়্যার সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট ইউনিটের পরিচালক জেরি চাউ বলেন, আমাদের ১২৭ কিউবিটের ঈগল প্রসেসরটি আইবিএমের ক্লাউড প্লাটফর্মে অনুসন্ধানী ব্যবস্থা হিসেবে রয়েছে। আইবিএম কোয়ান্টাম নেটওয়ার্কের সদস্যরা এটি ব্যবহার করবেন।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আমাদের কোয়ান্টাম প্রযুক্তি সম্পর্কে জানার জন্য পর্যবেক্ষণমূলক পদ্ধতি দেয়া হয়েছে। তাই এ মুহূর্তে কোয়ান্টাম ভলিউম অনুসারে এখন কেমন পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কিছু বলা যাচ্ছে না।
ঈগল প্রসেসরের কোয়ান্টাম ভলিউম সম্পর্কে না জেনে এখনই একে বাজারে থাকা অন্য চিপের সঙ্গে তুলনা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন প্রযুক্তিবিদরা। গত অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক কনগ্লোমারেট প্রতিষ্ঠান হানিওয়েল দাবি জানিয়েছিল, তাদের এইচ১ সিস্টেম মডেলে ১০টি কানেক্টেড কিউবিটসহ ১২৮টি কোয়ান্টাম ভলিউম রয়েছে।
আরেকটি বিষয় লক্ষণীয়, আইবিএম এখনই কোয়ান্টামের একক আধিপত্যের বিষয়ে কোনো দাবি করছে না। প্রতিষ্ঠানটির তথ্যানুযায়ী, এটি মাইলফলক অর্জনের পথে একটি ধাপ। বর্তমান সময়ের সাধারণ কম্পিউটার করতে পারে না এমন কাজের বিষয়ে পরিষ্কার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ২০১৯ সালে সাইকামোর সিস্টেমের মাধ্যমে প্রযুক্তি খাতে যুগান্তকারী কিছু করার ঘোষণা দেয়ার মাধ্যমে বিতর্কের সূচনা করে গুগল।
সে সময় আইবিএম গুগলের এ দাবিকে অসমর্থিত বলে আখ্যা দিয়েছিল। কেননা গুগল শুধু একটি সমীকরণ মেলাতে কম্পিউটার তৈরি করেছিল।