এই প্রথমবারের মতো মহাকাশ বিজ্ঞানীরা একটি কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোলের ছবি তুলতে সক্ষম হয়েছেন। যা মহাকাশ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে একটা বড় ঘটনা।
অনেকেরই হয়তো এই নামটির সঙ্গে নতুন পরিচয় ঘটছে। তাই জেনে নেওয়া যাক ‘ব্ল্যাক হোল’ বা ‘কৃষ্ণগহ্বর’ কি?
‘ব্ল্যাক হোল’ বা ‘কৃষ্ণগহ্বর’ হচ্ছে মহাকাশের এমন একটি অংশ যার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এতই প্রখর যে তার হাত থেকে কোন কিছুই – পালাতে পারে না, এমনকি আলোর রশ্মিও।
এর নাম গহ্বর বলা হলেও আসলে এটা ফাঁকা নয়। বরং এর ভেতরে খুব ছোট একটি জায়গায় বিপুল পরিমাণ পদার্থ জমাট বেঁধে আছে। তার ফলেই এর মহাকর্ষ শক্তি এত জোরালো।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একটি বৃত্তাকার কালো আভার চারদিকে এক উজ্জ্বল আগুনের বলয়। এ্যান্টার্কটিকা, স্পেন ও চিলির মতো পৃথিবীর নানা প্রান্তে বসানো আটটি রেডিও টেলিস্কোপের এক নেটওয়ার্ক দিয়ে এই ছবি তোলা সম্ভব হয়।
এর আগে কোন ব্ল্যাক হোলের ছবি তোলা যায় নি। কারণ একক কোন টেলিস্কোপের এর ছবি তোলার ক্ষমতা নেই।
এমএইটসেভেন নামে একটি বহুদূরবর্তী গ্যালাক্সি বা ছায়াপথের মধ্যে এটি পাওয়া গেছে।
পৃথিবী থেকে এই ব্ল্যাক হোল ৫০ কোটি ট্রিলিয়ন কিলোমিটার দূরে, এবং এটার ভর (এর মধ্যেকার পদার্থের পরিমাণ) সূর্যের চাইতে ৬৫০ কোটি গুণ বেশি।
ব্ল্যাক হোলটি এতই বড় যে এটাকে একটা ‘দানব’ বলে বর্ণনা করছেন বিজ্ঞানীরা। এর উজ্জ্বলতা ওই ছায়াপথের সব তারা মিলে যত ঔজ্জ্বল্য হবে তার চাইতেও বেশি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, দানবাকৃতির এই ব্ল্যাক হোল পৃথিবী যে সৌরজগতের অংশ – তার চাইতেও বড়। এ মাথা থেকে ওমাথা পর্যন্ত এর আয়তন ৪ হাজার কোটি কিলোমিটার – যা পৃথিবীর চাইতে ৩০ লক্ষ গুণ বড়।
‘এ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার্স’-এ এই আবিষ্কারের বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়েছে। মহাকাশবিজ্ঞানীদের মতে ‘ব্ল্যাক হোল’ সম্পর্কে মানুষের বোধ বাড়াতে সাহায্য করবে এই ছবি।
সূত্র : বিবিসি