ম্যাক ও উইন্ডোজের প্রতিযোগিতা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। কোন অপারেটিং সিস্টেমটি সেরা, সেটি নিয়েও যুদ্ধের শেষ নেই। এ যুদ্ধে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। কিন্তু এটা নিশ্চিত যে এতে অনেকের অহংকারের পতন ঘটেছে। বেশির ভাগ অনলাইন ফোরামে এ নিয়ে অনেক হাস্যকর যুদ্ধ হয়েছে।
কিন্তু আমরা যদি এসব বাকযুদ্ধকে একপাশে রেখে স্বীকার করে নেই ম্যাক ও উইন্ডোজ উভয়ই নিজ অবস্থানে সেরা। প্রত্যেকেরই নিজস্ব শক্তি এবং দুর্বলতা রয়েছে। তাহলে এর একটা সুষ্ঠু সমাধানে পৌঁছানো হয়তো সম্ভব। এটা সত্যিকার অর্থে ব্যবহারকারীর ওপর নির্ভর করে যে কোনটা তাদের জন্য ভালো।
তবে ব্যবহারকারীর বিচারে অ্যাপলের ম্যাক পণ্য এবং ম্যাক অপারেটিং সিস্টেমকে উইন্ডোজের চেয়ে কিছু দিক দিয়ে স্পষ্টতই এগিয়ে আছে।
ডিভাইসের গঠনশৈলী: উইন্ডোজ ল্যাপটপ ও কম্পিউটারের তুলনায় ম্যাকবুক বা ম্যাক কম্পিউটার ভালোভাবে তৈরি করা হয়। যদিও সামরিক-গ্রেড বিল্ড মানের অনেক উইন্ডোজ অপশন আছে। তবে মানের ক্ষেত্রে কোনো ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। উইন্ডোজ নির্মাতার প্রিমিয়াম পণ্য এবং বাজেট পণ্য আছে। অন্যদিকে ম্যাকবুক এবং ম্যাকের অনেকটাই নিরাপদ। দুর্ঘটনাক্রমে উঁচু জায়গা থেকে পড়ে গেলেও উইন্ডোজের তুলনায় অধিক সুরক্ষিত থাকে। এছাড়াও ম্যাকবুকের ব্যাটারি বেশির ভাগ উইন্ডোজ ল্যাপটপের তুলনায় দীর্ঘস্থায়ী পরিষেবা দিতে পারে।
স্থিতিশীল অপারেটিং সিস্টেম: উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের ডিভাইসের তুলনায় ম্যাকবুকের অপারেটিং সিস্টেম অনেক সুরক্ষিত। এ ডিভাইস সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার দুই ক্ষেত্রেই ব্যবহারকারীকে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দেয়। ম্যাকবুকে নতুন অপারেটিং সিস্টেম আপডেট না করা হলে কাজে সমস্যা করে। কিন্তু উইন্ডোজের সমস্যা আরো বেশি। কখনো কখনো অ্যাপ পুনরায় ইনস্টলও করতে হয়। এছাড়া সফটওয়্যার আপডেটের পর অনেক সময় ব্লুটুথ বা ওয়াইফাই সমস্যা করে।
সহজ ও সুবিধাজনক ইন্টারফেস: ম্যাকওএসের সার্চবার বা ফাইন্ডার ব্যবহারকারীর জন্য সুবিধাজনক। এদিক থেকে মাইক্রোসফটও এর ফাইল এক্সপ্লোরারে নতুন ফিচার যুক্ত করতে কাজ করছে। ম্যাক অপারেটিং সিস্টেমে যেকোনো ফাইল কোনো অ্যাপের ওপর টেনে আনলে সহজেই কমান্ড নেয়। ফলে সেখানে ফাইলটি খোলা যায়। এছাড়া ডকে প্রয়োজন অনুযায়ী ফোল্ডার যুক্ত করা যায়, যা ফাইল চালু করতে সহায়তা করে।
স্ট্রিমলাইনড ইকোসিস্টেম: অ্যাপলের এক বা একাধিক পণ্য কিনলে সেগুলো ব্যবহার করা সুবিধাজনক হয়। আর এ সুবিধাই হচ্ছে স্ট্রিমলাইনড ইকোসিস্টেম। এর জন্য ব্যবহারকারীকে অতিরিক্ত কোনো কমান্ড দিতে হয় না। এ সুবিধার মধ্যে ইউনিভার্সাল ক্লিপবোর্ড ফিচার রয়েছে। ফলে যেকোনো সময় লেখা, ছবি, ভিডিও বা ফাইল কপি করে পেস্ট করা যায়। এছাড়া আইপ্যাড ও ল্যাপটপ ব্যবহারের মাধ্যমে ফোনকলের উত্তরও দেয়া যায়।
এক্সক্লুসিভ সফটওয়্যার ব্যবহারের সুবিধা: কোনো পরিষেবা গ্রহণে পরিপূর্ণ অভিজ্ঞতার জন্য উইন্ডোজে থার্ড পার্টি লোকেশন থেকে সফটওয়্যার ডাউনলোড করতে হয়, যা অনেক সময় ডিভাইসের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে ম্যাক অপারেটিং সিস্টেমে প্রিমিয়াম অ্যাপ ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে। ব্যবহারকারীরা ফাইনাল কাট প্রো, আইমুভি ও গ্যারেজব্যান্ড সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারে। তাই যেকোনো কাজের জন্য ম্যাক ভালো সুবিধা দেয় ও সহায়তা করে থাকে।