বিশ্বব্যাপী এখন স্মার্টফোনের বাজারে চলছে পূর্ণ প্রতিযোগিতা। ব্র্যান্ডগুলো এ দৌড়ে এগিয়ে যেতে এবং আরো গ্রাহক আকৃষ্ট করতে ডিভাইসের সঙ্গে পণ্যের ইকোসিস্টেমগুলোকে সহজে সংযুক্ত করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বর্তমানে অ্যাপল, হুয়াওয়ে, স্যামসাং, শাওমি, অপো ও অন্যান্য অনেক নির্মাতা তাদের নিজস্ব স্মার্টওয়াচ তৈরি করছে। তবে এ গৌণ পণ্যগুলোই এখন বিলিয়ন ডলার মূল্যের বাজার তৈরি করতে পেরেছে।
সম্প্রতি বৈশ্বিক প্রযুক্তি বাজার গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কাউন্টারপয়েন্ট বিশ্বব্যাপী স্মার্টওয়াচের বাজার পর্যবেক্ষণ করে একটি নতুন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে ইঙ্গিত করা হয়েছে, পরপর দুই প্রান্তিকে হ্রাসের পর স্মার্টওয়াচের চালান বছরে ১১ শতাংশ বেড়েছে।
কাউন্টারপয়েন্টের প্রতিবেদনে দেখা যায় বিশ্বব্যাপী স্মার্টওয়াচের রফতানি বেড়েছে। তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বিক্রি ১১ শতাংশ বেড়েছে, যা ২০২২ সালের শেষ প্রান্তিকে ও ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে হ্রাস পেয়েছিল।৷ এ বৃদ্ধির পেছনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে ভারত। ৷গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ভারতে স্মার্টওয়াচের বিক্রি ১২ শতাংশ বেড়েছে। এদিকে উত্তর আমেরিকা, চীন ও বিশ্বের বাকি অংশে বিক্রি কিছুটা কমেছে।
উল্লেখযোগ্য পতন সত্ত্বেও অ্যাপল আবারো তার শীর্ষ অবস্থান বজায় রেখেছে। কোম্পানির বাজার হিস্যা ২০২২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ২৭ শতাংশ ছিল, কিন্তু ২০২৩ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে তা ২২ শতাংশে নেমে এসেছে। গত তিন বছরে প্রথমবারের মতো অ্যাপলের রফতানি ৮০ লাখ ইউনিটের নিচে নেমেছে। স্মার্টওয়াচের বাজেটবান্ধব মডেলগুলো ভারতে বেশ জনপ্রিয়, যার কারণে দেশটিতে অ্যাপলের প্রবৃদ্ধি ঘটছে।
হুয়াওয়ে চলতি প্রান্তিকে সেরা পারফর্মিং ব্র্যান্ড হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে। বিশেষ করে চীনে প্রতিষ্ঠানটির বাজার হিস্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এ বৃদ্ধির কারণে প্রতিষ্ঠানটির বৈশ্বিক বাজার হিস্যা ৩ শতাংশ বেড়ে ১০ শতাংশে পৌঁছেছে। হুয়াওয়ের স্মার্টওয়াচ ব্যবসার সম্প্রসারণের কারণ প্রতিষ্ঠানটির নতুন ওয়াচ জিটি-৩ প্রো সিরিজের জনপ্রিয়তা। প্রতিষ্ঠানটি ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার মতো নতুন বাজারেও প্রবেশ করছে, যা প্রতিষ্ঠানটির বৈশ্বিক স্মার্টওয়াচ বাজার হিস্যাকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে।
চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে স্যামসাংয়ের ১৯ শতাংশ পতন ঘটেছে। প্রতিষ্ঠানটি চীনা ও ভারতীয় বাজারে রফতানি বাড়াতে সক্ষম হয়েছে,৷ তবে এর প্রধান বাজার উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপে যথাক্রমে ২৪ শতাংশ ও ১৩ শতাংশ পতন রেকর্ড করেছে। অ্যাপল ও হুয়াওয়ের মতো অন্যান্য ব্র্যান্ডের ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতার কারণে স্যামসাংয়ের রফতানি কমে যাচ্ছে। স্যামসাংয়ের সাপ্লাই চেইনেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে, যা চাহিদার অনুপাতে সরবরাহকে প্রভাবিত করেছে।
ভারতীয় ব্র্যান্ড নয়েজ ও ফায়ার-বোল্ট প্রধান প্রতিযোগী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আগের বছরের তুলনায় তাদের বিক্রি বেড়েছে যথাক্রমে ৮৬ শতাংশ ও ৭০ শতাংশ। ব্র্যান্ডের স্মার্টওয়াচগুলো বিভিন্ন রঙ ও ডিজাইনে পাওয়া যায়, যা এগুলোকে গ্রাহকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলে। ফায়ার-বোল্ট বাজেটবান্ধব স্মার্টওয়াচগুলোকে পুঁজি করে নিজেদের বাজার হিস্যা প্রসারিত করার চেষ্টা করছে।