প্রিমিয়াম স্মার্টওয়াচ তৈরি করে অ্যাপল। যার দাম চড়া। কিন্তু চাহিদা তুঙ্গে। এবার ওয়াচের চাহিদায় ভাটা পড়তে যাচ্ছে। কেননা, অ্যাপলের জন্মস্থান খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই অ্যাপল ওয়াচের বিক্রি বন্ধে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিক্রির নিষেধাজ্ঞা এড়াতে উঠেপড়ে লেগেছে অ্যাপল। বিশ্বে অ্যাপল ওয়াচের বাজার ১৭ বিলিয়ন ইউএস ডলারের। তবে মার্কিন বাজারে সব থেকে বেশি বিক্রির তালিকায় রয়েছে অ্যাপলের এই ওয়াচ।
সমস্যার সূত্রপাত অ্যাপল ওয়াচের ব্লাড অক্সিজেন মাত্রা পরিমাপের প্রযুক্তি নিয়ে। ম্যাসিমো কর্পোরেশন নামের এক সংস্থার দাবি অ্যাপল যে প্রযুক্তির ব্যবহার করে মানুষের রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা পরিমাপ করে তা আদতে তাদের প্রযুক্তি।
অ্যাপল তাদের পেটেন্ট বা স্বত্ব ভেঙেছে। এর প্রেক্ষিতেই ব্যবহারকারীদের রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা পরিমাপের জন্য তাদের ঘড়িতে যে অ্যালগরিদম ব্যবহার করা হয় তা বদলাতে দিনরাত এক করে ফেলছে অ্যাপলের ইঞ্জিনিয়াররা। অক্সিজেন স্যাচুরেশনের মাত্রা নিরীক্ষণ করা এবং তা ব্যবহারকারীকে জানানোর জন্য ব্যবহৃত প্রযুক্তিতে বদল করার কাজ শুরু করেছে অ্যাপল কর্তৃপক্ষ।
এর আগে এ ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে অ্যাপলের ইঞ্জিনিয়ারদের পড়তে হয়নি। যদিও আইফোন নির্মাতা সংস্থাটির পণ্যকে একাধিক দেশে আইনি জটিলতার কারণে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হয়েছে। এবার নিজের দেশেই সব থেকে বেশি আয়ের পণ্য বিক্রি বন্ধের মুখে পড়তে চলেছে অ্যাপল। তাও আবার বড়দিনের সময়, যখন বিক্রি অনেক বেড়ে যায়।
শেষ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ভেটো না দিলে অ্যাপল ওয়াচ বিক্রির উপর ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কমিশনের জারি করা নিষেধাজ্ঞা ২৫ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়ে যাবে। চাইলে ম্যাসিমো কর্পোরেশনের সঙ্গে সমঝোতা করতে পারত অ্যাপল। কিন্তু, সেই পথে না হেঁটে প্রযুক্তিগত বদল এনে সমস্যার সমাধানে আগ্রহী সংস্থাটি।
এমনকি দুই সংস্থার কেউই এ বিষয়ে কথাবার্তা চায় না। এখন অ্যাপল তাদের প্রযুক্তিতে বদল এনে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সুনজরে আসতে চাইছে। নিষেধাজ্ঞা চাপলে তার বেড়াজাল থেকে বের হওয়ার জন্য আইনি এবং প্রযুক্তিগত পথ খোঁজা শুরু করে দিয়েছে সংস্থাটি। ইতিমধ্যেই তাদের বিপণিগুলোর খোলনলচে বদলাতে শুরু করেছে অ্যাপল। লক্ষ্য অ্যাপল ওয়াচের বদল অনুযায়ী সেগুলির বিপণন প্রক্রিয়ায় বদল আনা।
অ্যাপল তাদের খুচরা বিপণি, যেগুলো মূলত অ্যাপল ওয়াচ বিক্রিতে জোর দেয়, সেগুলোতে ছবি ব্যবহার না করে সিরিজ ৯ এবং আলট্রা ২ মডেলের স্মার্টওয়াচ বিপণনের নির্দেশ দিয়েছে অ্যাপল। এই দুই মডেল নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। যদিও তাদের অপেক্ষাকৃত সস্তার এসই মডেলের ঘড়ি পাওয়া যাবে।
নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া দুই ঘড়ির মডেল তাদের ওয়েবসাইটে বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অ্যাপল। ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের প্রায় ২৭০টি অফলাইন বিপণি থেকেও এই দুই মডেলের ঘড়ি তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থাটির।