বিশ্বের অন্যতম সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক। অনেকে সকালে ঘুম থেকে উঠেই ফেসবুকে ঢুঁ মারেন। সারাদিন বিভিন্ন ছবি, স্ট্যাটাস শেয়ার করেন ভার্চুয়াল বন্ধুদের সঙ্গে। একটু পর পর গিয়ে দেখে নেন কত লাইক, কমেন্ট পড়লো। মেটার মালিকানাধীন ফেসবুকে রয়েছে কয়েকশ কোটি ব্যবহারকারী।
প্রায় সব বয়সী মানুষই ব্যবহার করছেন এই প্ল্যাটফর্মটি। অনেকের আয়ের অন্যতম মাধ্যম ফেসবুক। তবে জানেন কি? বিশ্বের এমন কয়েকটি দেশ আছে যেখানে ফেসবুক নিষিদ্ধ। সেদেশের কেউ ব্যবহার করেন না এই প্ল্যাটফর্মটি। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিশ্বের কোন কোন দেশে ব্যবহার হয় না ফেসবুক।
চীন
চীনের কেউ ফেসবুক ব্যবহার করেন না। ২০০৯ সাল থেকে চীনে ফেসবুক নিষিদ্ধ। জিনজিয়াং প্রদেশে মারাত্মক দাঙ্গার পর কর্মীদের বিরুদ্ধে সরকারি ক্র্যাকডাউনের অংশ হিসেবে মেটা মালিকানাধীন ফেসবুক নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। চীনে বিদেশি মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের সীমাবদ্ধতা এবং বেসরকারি কন্টেন্টের সেন্সরশিপকে চীনের গ্রেট ফায়ারওয়াল বলা হয়। চীনে মেটার মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ এবং এর ফটো এবং ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ ইনস্টাগ্রামও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ইরান
ইরানেও ২০০৯ সালে বিতর্কিত নির্বাচন এবং গণবিক্ষোভের মধ্যে ফেসবুক নিষিদ্ধ করা হয়। যদিও কিছু ব্যবহারকারী ভিপিএন ব্যবহার করে ফেসবুক অ্যাক্সেস করেন। এরপর ইরান সরকার ভিপিএনর ব্যবহার আইনত অপরাধ ঘোষণা করে। ২০২০ সালে চীনের সঙ্গে মিলে একটি জাতীয় ইরানী ইন্টারনেট তৈরি করছে বলে ঘোষণা দেয় ইরান।
উত্তর কোরিয়া
বিশ্বের অন্যতম রক্ষণশীল দেশ উত্তর কোরিয়ায়ও ফেসবুক ব্যবহার করা যায় না। উত্তর কোরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৬ সালে ফেসবুক ব্লক করে। এমনকি ঘোষণা করে যে কেউ ‘অনুপযুক্ত’ উপায়ে তাদের অ্যাক্সেস করার চেষ্টা করলে বা এর থেকে ‘প্রজাতন্ত্র বিরোধী ডেটা’ বিতরণ করলে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে। যদিও নিষেধাজ্ঞার আগে, অল্প কয়েকজন উত্তর কোরিয়ানের বিশ্বব্যাপী ওয়েবে অ্যাক্সেস ছিল এবং বেশিরভাগই সরকার নিয়ন্ত্রিত ইন্ট্রানেটের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।
তুর্কমেনিস্তান
প্রাক্তন সোভিয়েত মধ্য এশিয়ার রাষ্ট্র তুর্কমেনিস্তানে ফেসবুক নিষিদ্ধ। ফেসবুক ব্লক করার পাশাপাশি, তুর্কমেনিস্তান হোম ইন্টারনেট সংযোগের জন্য সাইন আপ করার সময় কোরআনের শপথ নিতে বলে যে তারা ভিপিএন অ্যাক্সেস করবে না। শিক্ষার্থীদের নিষিদ্ধ সাইটগুলোতে অ্যাক্সেস করার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে বলা হয়।
কিউবা
কিউবায় আনুষ্ঠানিকভাবে ফেসবুক নিষিদ্ধ নয় কিন্তু এটি অ্যাক্সেস করা খুব কঠিন। শুধু রাজনীতিবিদ, কিছু সাংবাদিক এবং মেডিকেল স্টুডেন্টরা তাদের বাড়ি থেকে আইনত ওয়েব অ্যাক্সেস করতে পারেন। অন্য সবার জন্য অনলাইন জগতের সঙ্গে আইনিভাবে সংযোগ করার একমাত্র উপায় হল ইন্টারনেট ক্যাফে। কিউবার গড় আয় ২০ মার্কিন ডলার। আর ইন্টারনেট অ্যাক্সেস করতে প্রতি ঘন্টায় ৬ মার্কিন ডলার থেকে ১০ মার্কিন ডলারের খরচ হয়। ফলে এত খরচ দিয়ে বেশিরভাগ মানুষের পক্ষেই ইন্টারনেট ব্যবহার করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। মূলত ইন্টারনেট খরচ তুলনামূলক অনেক বেশি হওয়ায় সেদেশে ব্যবহারকারী কম।
সূত্র: টাইম ম্যাগাজিন