ফেসবুক জানিয়েছে, ক্রমবর্ধমান ব্যবসায় সহায়তা করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য। বিশেষ করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, যারা সীমিত উপায়ে পণ্য ও সেবা বিক্রি করেন কিন্তু বিশ্ব বাজারে ঢোকারও সম্ভাবনা রয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোও তাদের পরিকল্পনার অংশ।
ফেসবুকের সিঙ্গাপুর কার্যালয়ে এপিএসির প্রেস ডে উপলক্ষ্যে দিনব্যাপী কর্মসূচিতে সামাজিকমাধ্যমটির শীর্ষ কর্মকর্তারা বলেন, বহু ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের কাছে অনন্য ধারনা রয়েছে। কিন্তু ঐতিহ্যবাহী গণমাধ্যমে প্রচারের সামর্থ্য তারা রাখেন না।
ফেসবুক বিশ্বব্যাপী ব্যবসা এগিয়ে নিতে কাজ করছে বলে তারা দাবি করেন। ফেসবুকে এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় ব্যবসায়ীক গোষ্ঠীর প্রধান ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট কারেন তাও বলেন, বর্তমানে বৈশ্বিকভাবে ১৪ কোটি ব্যবসায়ীকে সহায়তা করছে ফেসবুক।
স্থানীয় উদ্যোক্তরা যাতে আন্তর্জাতিকভাবে সুযোগ খুঁজে নিতে পারেন, সেজন্য ফেসবুক তাদের সহায়তা করছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
একটি জরিপের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ব্যবসার বিকাশে এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উদ্যোক্তাদের প্রতি তিনজনে একজন ও নারীদের ১০ জনের মধ্যে একজন ফেসবুক ব্যবহার করছেন।
ভবিষ্যৎ ব্যবসা নিয়ে এসব নারীদের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক এবং তাদের দ্রুত বিকাশ ঘটছে বলে কারেন দাবি করেন।
এ অঞ্চলে ফেসবুকের এশীয় প্রশান্ত মহাসারগীয় অঞ্চলের পণ্য বিপণন পরিচালক জেমস টান বলেন, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোও তাদের পরিকল্পনার অংশ।
দিনের শুরুতে বিশ্বের বৃহৎ সামাজিক নেটওয়ার্কটির এ অঞ্চলের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ড্যান নিয়ারি বলেন, স্থানীয় ব্যবসাকে অগ্রাধিকার দিয়ে তারা নতুন অনেকগুলো বিষয় নিয়ে কাজ করছেন।
তার দেয়া তথ্যানুসারে, অর্থ লেনদেনে ফেসবুক পে ও ডিজিটাল ওয়ালেট ক্যালিব্রা আসছে দিনগুলোতে বাজারের নেতৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সেবা মাধ্যম ক্যালিব্রা ফেসবুকের অধীনস্ত। এর মাধ্যমে লিবরা নেটওয়ার্কে প্রবেশ ও অংশগ্রহণ করতে পারবেন লোকজন।
ব্লকচেইন প্রযুক্তি-চালিত নতুন বৈশ্বিক মুদ্রা লিবরার জন্য ডিজিটাল ওয়ালেট ক্যালিব্রা চালু হতে যাচ্ছে। এতে নগদ অর্থ ছাড়াই চা-কফি কিংবা স্থানীয় যাতায়াতের বিল শোধ করা সম্ভব হবে।
মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও স্বতন্ত্র অ্যাপ হিসেবে এই ডিজিটাল ওয়ালেট পাওয়া যাবে। ২০২০ সাল নাগাদ এই অ্যাপটি চালু হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে চাঁদা উঠানো, ভিডিও গেম, টিকিট ক্রয় ও ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি অর্থ পরিশোধে ফেসবুক ও মেসেঞ্জারে এই ফেসবুক পে পাওয়া যাবে।
ড্যান নিয়ারি বলেন, বর্তমানে একশ ৭০ কোটি লোকের অর্থনৈতিক সেবা প্রবেশের সুযোগ নেই। আমরা এই বিপুল লোকজনকে নিশানা বানিয়েছি।
বিভিন্ন উপস্থাপনায় ফেসবুক দেখিয়েছে, বিশ্বজুড়ে উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্মের তুলনায় বার্তা আদানপ্রদানের প্ল্যাটফর্মের ব্যবহারের চাহিদা বাড়ছে। যে কারণে বিভিন্ন দেশে হোয়টসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জার ব্যবহার করে বার্তা সম্পর্কিত এই প্ল্যাটফর্মের বিকাশে কাজ করছে ফেসবুক।
এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের এগারোটি দেশে ব্যবসা চালু করেছে ফেসবুক। অন্যান্য বাজারেও ক্রমানুসারে এই ব্যবসা সম্প্রসারিত করা হবে।
ফেসবুক কর্মকর্তাদের তথ্যানুসারে, এ অঞ্চলে ই-কমার্স এখন সামাজিক ব্যবসায় রূপ নিয়েছে। সেক্ষেত্রে এই মাধ্যম ব্যবহার ও উদ্যোক্তাদের সংযোগের ব্যবস্থা করছি আমরা। সামাজিক ব্যবসার বিকাশ ঘটছে।
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই ও সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়েও ফেসবুক কাজ করছে বলে দাবি করেছেন জেমস ট্যান।
ইতিমধ্যে চলতি বছরের প্রথম চার মাসে ১৭ লাখ ২০ হাজার ভুয়া অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া ইনস্টাগ্রাম থেকে আত্মহত্যা সংক্রান্ত ৬২ লাখ পোস্ট সরানো হয়েছে।
হয়রানি কমিয়ে আনতে ২০২০ সালে ২০ লাখ প্রশিক্ষণের আয়োজনের কথা জানিয়েছে ফেসবুক।