এবার আসাম ও মেঘালয়ে রাজ্যে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। সদ্য পাস হওয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিক্ষোভ চলছে দেশটির ওই দুই রাজ্যে।
চলমান বিক্ষোভের মুখে শুক্রবার ওই দুই রাজ্যে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে রাখার খবরটি জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট টেকক্রাঞ্চ। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতেই ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছে সাইটটি।
এ বিষয়ে আসামের কর্মকর্তারা বলেছেন, “ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার এবং ইউটিউবের মতো সামাজিক মাধ্যমগুলোর সাহায্যে গুজব এবং আইন শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে এমন তথ্য, ছবি ও ভিডিও ছড়ানো হতে পারে।”
ওই দুই রাজ্যের মানুষ আবার কবে নাগাদ ইন্টারনেট সংযোগ আবার ফিরে পেতে পারেন, সে বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। পুরো বিষয়টি নিয়ে টেকক্রাঞ্চ মন্তব্য করেছে, “পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে, খবর ও তথ্য পেতে সহযোগিতা করে এমন একটি মাধ্যম বন্ধ করে দেওয়ার নজির অনেক দেশেই দেখা গেছে, তবে ভারত সবার চেয়ে এগিয়ে।”
এর আগে ভারত শাসিত কাশ্মিরে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছিল দেশটি। চার মাস পর এখনও ইন্টারনেট সংযোগের বাইরে রয়েছেন দেশটির ওই অঞ্চলের অধিবাসীরা।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইন্টারনেট বাজার হিসেবে পরিচিত ভারতে বর্তমানে সক্রিয় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬৫ কোটির বেশি।
এভাবে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রাখার বিষয়ে অতীতে নিন্দা জানিয়েছিল জাতিসংঘ। বিষয়টিকে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ হিসেবেও আখ্যা দিয়েছিল সংস্থাটি।
উল্লেখ্য, ১০ ডিসেম্বর ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় পাস হয় ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের প্রস্তাব। পরে তা উচ্চকক্ষ রাজ্যসভাতেও পাস হয় এবং বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে তা আইনে পরিণত হয়।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে গিয়ে ভারতে শরণার্থী হওয়া হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও পার্সি সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ওই আইনে।
১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে বলা ছিল, অন্তত ১১ বছর ভারতে থাকলে তবেই কোনো ব্যক্তিকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। সংশোধনে ওই সময় কমিয়ে পাঁচ বছর করা হয়েছে। তবে এতে বিবেচনার বাইরে রাখা হয়েছে মুসলিমদের।
ওই আইনের প্রতিবাদে গত দুদিন ধরে সহিংস বিক্ষোভ চলছে ভারতের বিভিন্ন অংশে। বৃহস্পতিবার গুয়াহাটিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন দুইজন। শুক্রবার সংঘাত ছড়িয়েছে রাজধানী দিল্লিতেও।