ফেসবুক নিয়ন্ত্রিত ক্রস-প্লাটফর্ম মেসেজিং ও ভয়েস ওভার আইপি সেবা হোয়াটসঅ্যাপ। সেবাটির কার্যক্রম এখন শুধু মেসেজিং কিংবা ভয়েস কল সুবিধা দেয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। হোয়াটসঅ্যাপ এখন পূর্ণাঙ্গ সোস্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে রূপান্তরিত হয়েছে। এতে স্ট্যাটাস পোস্ট করা থেকে শুরু করে গ্রুপ মেসেজিং ও কল করার সুবিধার পাশাপাশি আরো অনেক ফিচার যুক্ত হয়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা ঝুঁকি। নিরাপদে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারের জন্য প্লাটফর্মটিতে যে ভুলগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
নিরাপত্তার স্বার্থে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টে ঢালাওভাবে সবাইকে স্বাগত জানানো থেকে বিরত থাকুন। অর্থাৎ পরিচিত না হলে অনুরোধ গ্রহণ করবেন না। অপ্রাসঙ্গিক বা দীর্ঘদিন যোগাযোগ নেই এমন নম্বরগুলো ফোন থেকে মুছে ফেলুন। সাম্প্রতিক সময় হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে সাইবার অপরাধ বেড়েছে। যে কারণে ফোনের কন্ট্যাক্ট লিস্টে নিয়মিত নজর রাখুন। বছরের পর বছর কথা হয় না, এমন নম্বরগুলো যাতে হোয়াটসঅ্যাপে যুক্ত হতে না পারে, সেজন্য মুছে ফেলুন।
হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টের প্রোফাইল ফটো যাতে আপনার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ না করে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। হোয়াটসঅ্যাপে খুব সাধারণ প্রোফাইল ফটো ব্যবহার করা ভালো। প্রোফাইল ফটোর সঙ্গে যাতে পরিবারের সদস্যদের পরিচিতি প্রকাশ না হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে। এটা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আপনার হোয়াটসঅ্যাপ প্রোফাইল ফটো ফোন কন্ট্যাক্ট লিস্টে থাকা সবাই দেখতে পারবেন। হোয়াটসঅ্যাপের প্রোফাইল ফটো কারা দেখতে পারবে, তা সেট করার তিনটি অপশন রয়েছে। তবে নির্দিষ্ট কারো কাছ থেকে প্রোফাইল ফটো লুকানোর কোনো অপশন নেই।
হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টে ‘টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন’ পিন যুক্ত করতে ভুল করবেন না। ফলে ‘সিম সোয়াপ ফ্রড’ থেকে রক্ষা পাবেন। সিম সোয়াপ আসলে কী? একটি মোবাইল সিম ডি-অ্যাক্টিভেট করে অন্য কোনো ব্ল্যাঙ্ক সিম কার্ডে সে নম্বর অ্যাক্টিভেট করাই হলো সিম সোয়াপ। অর্থাৎ সিম কার্ড আপনার কাছে থাকলেও নম্বর তৃতীয় কেউ ব্যবহারের সুযোগ পেয়ে যাবে সিম সোয়াপ করে। এছাড়া কৌশলে ওটিপি হাতিয়ে নিয়ে অন্য ডিভাইস থেকে তৃতীয় কারো আপনার হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টে প্রবেশ ঠেকাবে। হোয়াটসঅ্যাপের সেটিংস অপশন থেকে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করে নেয়া যাবে।
হোয়াটসঅ্যাপে কখনো কোনো স্ট্যাটাস পাবলিক করে পোস্ট করবেন না। স্ট্যাটাস মেসেজ সবসময় গোপনীয় কিছু। বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ব্যবহারকারীরা এ একটি জায়গায় ভুল করে থাকেন। হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুক পোস্ট অবশ্যই বন্ধু কিংবা পরিবারের সদস্যদের জন্য, তা কোনোভাবেই আপনার পত্রিকা সরবরাহকারী, বাসার কাজের মানুষ কিংবা গাড়ি চালকের জন্য নয়। অর্থাৎ হোয়াটসঅ্যাপে পোস্ট করার সময় অবশ্যই প্রাইভেসি সেটিংসে নজর রাখতে হবে। অপ্রয়োজনীয় কেউ যাতে আপনার পোস্ট দেখতে না পারে, সেটা আপনাকেই নিশ্চিত করতে হবে।
যে কেউ যাতে অপনাকে বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। হোয়াটসঅ্যাপে কে আপনাকে গ্রুপে যুক্ত করতে পারবে, তা নির্ধারণ করে দেয়ার অপশন আছে। প্রয়োজনে এ অপশন থেকে নির্ধারণ করে দিন কন্ট্যাক্ট লিস্টের কে বা কারা আপনাকে গ্রুপে যুক্ত করতে পারবেন। অপরিচিত কোনো গ্রুপে আলোচনায় অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকুন, যা হোয়াটসঅ্যাপে আপনার নিরাপত্তা কিছুটা হলেও বাড়াবে।