বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন থেকে পদত্যাগ করেছেন এর প্রতিষ্ঠাতা প্রধান কিশোর কুমার দাশ। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষাসহায়ক এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ফেসবুক পেজে এক পোস্টে মঙ্গলবার তার পদত্যাগের কথা জানানো হয়।
পদত্যাগের কারণ হিসেবে পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘বিদ্যানন্দ’ নামটি দিয়েছেন এক মুসলমান ব্র্যান্ড এক্সপার্ট। ‘আনন্দের মাধ্যমে বিদ্যা অর্জন’ স্লোগানের সাথে মিল রেখে তিনি নামটি দিয়েছিলেন। অনেকেই এটাকে ব্যক্তির নাম থেকে ভেবে ভুল করেন। এ জন্য আমরা দুই বছর আগে নাম পরিবর্তনের পক্ষে-বিপক্ষে ভোটে করি এবং স্বেচ্ছাসেবকরা নাম পরিবর্তনের বিপক্ষে ভোট দেন। ‘বিদ্যানন্দের প্রবাসী উদ্যোক্তা সশরীরে খুব অল্পই সময় দিতে পারেন। ৯০ শতাংশ মুসলিম স্বেচ্ছাসেবকই চালিয়ে যান প্রতিষ্ঠানটির বিশাল কর্মযজ্ঞ। তবুও উদ্যোক্তার ধর্ম পরিচয়ে অনেকেই অপপ্রচার চালায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে। যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কার্যক্রম, অনুদানের গতি।’ এতে আরও বলা হয়, ‘গত মাসেই বিদ্যানন্দের প্রধান পদত্যাগের কথা জানিয়ে দেন স্বেচ্ছাসেবকদের। সাম্প্রদায়িক অপপ্রচারে নয়, বরঞ্চ ব্যক্তিগত ত্যাগে স্বেচ্ছাসেবকদের অনুপ্রাণিত করার এবং নতুন মেধায় প্রতিষ্ঠানকে সমৃদ্ধ করার স্বপ্নে এমন সিদ্ধান্ত তার। তিনি প্রধানের পদ ছাড়লেও বিদ্যানন্দ ছাড়ছেন না, বরঞ্চ সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব নিতে চেয়েছেন। আমরা বিষয়টি প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম চলমান ক্যাম্পেইনের পরে। কিন্তু কিছুদিন ধরে চলা মাত্রাতিরিক্ত অপপ্রচারে জল ঢালতে খবরটি আজকে শেয়ার করলাম।’
‘আমাদের স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য বিষয়টি হতাশার নয়। বরঞ্চ পদ আঁকড়ে থাকার মানসিকতার এই সমাজে উল্টা পথে হাঁটতে পারার জন্য গর্ব হচ্ছে। আর বিদ্যানন্দে পদে কি যায় আসে? এখানে তো কাজটাই আসল, আর সেটাই আমরা করে ছাড়বো।’
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন কিশোর কুমার দাশ। ওই বছরের ২২ নভেম্বর বিদ্যানন্দের নারায়ণগঞ্জ শাখা চালুর মাধ্যমে এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। সবশেষে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে খাগড়াছড়িতে বিদ্যানন্দের ১২তম শাখা চালু করা হয়। এই ১২টি শাখার মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ২,০০০ এর বেশি পথশিশু, সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র ও অসচ্ছল শিশুর মৌলিক শিক্ষা, এক টাকার বিনিময়ে খাবার, এক টাকায় চিকিৎসা এবং এক টাকায় আইনসেবা দেয়া হয়। এ ছাড়া দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে পোশাক, শিক্ষা উপকরণ, মাসিক বৃত্তি প্রদানসহ সামাজিক বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে বিদ্যানন্দ।