মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের চাপে রয়েছে চীনের বাইটডান্স নিয়ন্ত্রিত শর্ট ভিডিও তৈরির সোস্যাল মিডিয়া অ্যাপ টিকটক। এরই মধ্যে অ্যাপটি নিষিদ্ধে এক নির্বাহী আদেশে সই করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে টিকটকের মার্কিন কার্যক্রম সেদেশের কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির জন্য সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। টিকটক যখন অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে, তখন অ্যাপটির প্রতিদ্বন্দ্বী সেবা আনার ঘোষণা দিল গুগল নিয়ন্ত্রিত ভিডিও শেয়ারি ওয়েবসাইট ইউটিউব। খবর রয়টার্স।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘শর্টস’ নামের ওই সেবা নিজেদের ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্মের সঙ্গে ইন্টিগ্রেটেড রাখবে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ভারতে সেবাটির পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু হবে এবং আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সেবাটি সবার জন্য চালু করা হবে। শর্টসের পরীক্ষা চালানোর ক্ষেত্রেও অনেকটা কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে গুগল। আপাতত তথ্যনিরাপত্তার অভিযোগে ভারতে টিকটকসহ ৫৯টি চীনা অ্যাপের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আর এ সুযোগে বিপুল জনসংখ্যার দেশটিতে নিজেদের শর্ট ভিডিও সেবার বাজার ধরতে চাইছে গুগল বলে মনে করা হচ্ছে।
বলা হচ্ছে, ইউটিউবের নতুন সেবা ফেসবুকের ‘রিলস’ ও টিকটকের সঙ্গে বাজার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামবে। শর্টসের মাধ্যমে স্বল্পদৈর্ঘ্যের ভিডিও তৈরি করা যাবে এবং তাতে নানা ধরনের ফিল্টার ও ইউটিউবের মিউজিক লাইব্রেরি থেকে নানাবিধ সংগীত যোগ করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা।
গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, হয় যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে, নয় তারা ব্যবসা বিক্রি করে দেবে। টিকটকের যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম বিক্রির জন্য আর সময় বাড়ানো হবে না।
বিষয়টি ঘিরে কোনো মন্তব্য করেনি টিকটকের প্যারেন্ট কোম্পানি বাইটডান্স। তবে বাইটডান্সও তাদের জনপ্রিয় সেবাটির যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম মধ্য সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিক্রি করতে ক্রেতা খুঁজছে।
শর্ট ভিডিও তৈরি করে তা শেয়ার করা যায় টিকটকে। মার্কিন তরুণদের মধ্যে অ্যাপটি বেশ জনপ্রিয়। তবে মার্কিনিদের টিকটক ডাটার গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন মার্কিন আইন প্রণেতারা। চীন চাইলে মার্কিন ব্যবহারকারীদের ডাটা দিয়ে দিতে হবে টিকটককে।
টিকটকের যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম কিনতে একগুচ্ছ মার্কিন কোম্পানি রীতিমতো প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। শুরুতে বৈশ্বিক সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফট অ্যাপটির যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম কিনতে আলোচনা শুরু করলেও পরে এ প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছে মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটার। এবার টিকটকের যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ওরাকল করপোরেশন। তবে ওরাকল শুধু টিকটকের যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম নয়; একই সঙ্গে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের কার্যক্রমও কেনার প্রস্তাব দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
টিকটক নিজেদের কার্যক্রম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি আরো কয়েকটি দেশে চাপে রয়েছে। সম্প্রতি তথ্যনিরাপত্তা দুর্বলতার অভিযোগে টিকটক নিষিদ্ধ করতে নির্বাহী আদেশে সই করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে টিকটকের প্যারেন্ট কোম্পানিকে যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম মার্কিন কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির পরামর্শ দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। এ সুযোগ কাজে লাগাতে জনপ্রিয় অ্যাপ টিকটকের যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম কিনতে আলোচনা শুরু করেছিল মাইক্রোসফট।