প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে গ্রাস করছে ক্রমশ, এ কিছু নতুন কথা নয়। কিন্তু সম্প্রতি এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে ভয়ঙ্কর এক তথ্য। আমাদের দেশে প্রতি ১০ জনে ৮ জন মা তাঁর সন্তানকে বড় করার জন্য ক্রমশ আরও বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন স্মার্টফোনের ওপর।
বাজার বিশ্লেষণ করে, এমন এক সংস্থা ‘ইউগভ’ সম্প্রতি একটি সমীক্ষা করেছিল। ৭০ শতাংশ মায়েরা জানিয়েছেন সন্তানপালনের জন্য তারা স্মার্টফোন অথবা ল্যাপটপ, ট্যাবলেটের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। এদের মধ্যে ৩৮ শতাংশ মায়েরা আবার চেনা পরিচিত, পড়শিদেরও সেই পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
সন্তানের বয়স তিনের কম, এমন সাতশ মাকে নিয়ে সমীক্ষার আয়োজন করেছিল ইউগভ।
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যেসব মায়েদের সন্তানের বয়স এক বছরের কম, তারাই সন্তানপালন সম্পর্কে জানার জন্য অনলাইন ব্লগ ঘাটেন সবচেয়ে বেশি(৫০ শতাংশ)। তুলনামূলক ভাবে।
এর আগে একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, সন্তানের সঙ্গে সময় কাটাতে গিয়ে স্মার্টফোনের কারণে মনঃসংযোগ নষ্ট হলে তার গভীর প্রভাব পড়ে সন্তানের সার্বিক বিকাশে।
২০১৭ এর একটি শিশু বিকাশ সংক্রান্ত জার্নাল ‘টেকনোফিয়ারেন্স’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছিল, এই সমস্ত মায়েদের সন্তানদের অবসাদ, উদ্বেগ এবং নানা আচরণগত সমস্যা বেশি দেখা যায়।
সদ্য যারা মা হয়েছেন, তাদের জন্য পরামর্শ, সন্তানের গায়ের গন্ধ নিন, ওকে আপনার গায়ের গন্ধ নিতে দিন, বুকের ওম দিন। আরেকটু বড় হলে ঘুম পাড়ানি গান অথবা রূপকথার গল্প শোনান। বিকেল বেলা ওকে দিন ধুলোয় লুটোপুটি করার সুযোগ। একটা সুস্থ সমাজে বড় হতে দিন আপনার আত্মজকে। যে সমাজ স্মার্টফোনের বাইরেও একটা দুনিয়ার কথা ভাবে। রাস্তার ধারে কাঁপতে থাকা কুকুর ছানা দেখলে বাড়ি নিয়ে এসে দুধ খাওয়ায়, অথবা যে সমাজ শেষ ট্রেন চলে গেলে সম্পূর্ণ অচেনা অতিথিকেও আপন ভেবে নিজের ছাদের তলায় থাকতে দেয়।