বাগেরহাট সদর উপজেলায় সোমা আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করেছে তার স্বামী। গত শনিবার রাতে বাগেরহাট শহরের দশানী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সোমার স্বজনদের দাবি, টিকটক ভিডিও বানানোকে কেন্দ্র করে পারিবারিক কলহের জেরে সোমাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে তার স্বামী আব্দুল্লাহ আল নাইম (২৪)। এরপর স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করে নাইম থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেন বলে জানায় পুলিশ। সোমা আক্তার একই উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের সিংড়াই গ্রামের আব্দুল করিম বকসের মেয়ে। তিনি বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজে ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। আর নাইম শহরের দশানী এলাকার গোলাম মোহম্মদের ছেলে। ঢাকার একটি বায়িং হাউজে চাকরি করতেন তিনি।
নিহত সোমার বোন নাজমা আক্তার ও চাচা হাফিজুর রহমান বলেন, ‘২০১৯ সালে প্রেম করে বিয়ে করে সোমা ও নাইম। বিয়ের পর তারা বেকার থাকায় রোজগার করতে তারা দুজনই টিকটক দিয়ে নানা ধরনের ভিডিও বানিয়ে নিজেদের অ্যাকাউন্টে পোস্ট করতেন। এই দিয়ে তাদের বেশ ভালোই আয় রোজগার হচ্ছিল। এরই মধ্যে নাইম ঢাকার একটি বায়িং হাউজে চাকরি পেয়ে চলে গেলে সোমা আমাদের বাড়িতে থেকে পড়ালেখার পাশাপাশি টিকটকে ভিডিও তৈরি করে আয় করছিল। এই আয় দিয়ে সোমার ভালোই চলছিল। ঢাকায় যাওয়ার পর নাইম মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। সে নেশা করতে প্রায়ই সোমার কাছে টাকা চাইত। গত শনিবার বিকেলে ঢাকা থেকে ফিরে সোমাকে ফোন করে নাইমের বাড়িতে নিয়ে ঘরের দরজা আটকে শারীরিক নির্যাতনের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে নাইম।’
নাইমকে উদ্ধৃত করে বাগেরহাট মডেল থানার ওসি কে এম আজিজুল ইসলাম বলেন, সোমার টিকটক ভিডিও বানানো পছন্দ করতেন না নাইম। তাকে (সোমাকে) এইসব না করার জন্য বেশ কিছুদিন ধরে নিষেধও করছিলেন নাইম। তারপরও সোমা বারবার এই কাজ করছিলেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকবার বিরোধও হয়। এর জেরে গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে টিকটক ভিডিও বানানো নিয়ে ওই দু’জনের মধ্যে আবারও বিবাদ হয়। একপর্যায়ে নাইম ক্ষিপ্ত হয়ে সোমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে আহত করেন। পরে তার (সোমার) গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন নাইম। পরে নাইমের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার বাড়ি থেকে সোমার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা।