নেদারল্যান্ডসের কয়েক হাজার অভিভাবক চীনা ভিডিও প্ল্যাটফর্ম টিকটকের কাছে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে। তাদের অভিযোগ শিশুদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা রক্ষায় টিকটক যথেষ্ট কাজ করছেনা।
দ্যা মার্কেট ইনফরমেশন রিসার্চ ফাউন্ডেশন বা এসওএমআই মঙ্গলবার এ বিষয়ে আমস্টারডামের এক আদালতে গেছে। তাদের দাবি, তারা প্রায় ৬৪ হাজার অভিভাবকের প্রতিনিধিত্ব করছে। এ খবর দিয়েছে ডয়চে ভেলে।
খবরে বলা হয়, ২০১৮ সালের ২৫ মে থেকে শিশুদের যে ক্ষতি হয়েছে তা থেকেই এই অর্থের হিসেব করা হয়েছে। ১৩ বছরের নীচের প্রতিটি শিশুর জন্য প্রায় দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সিদের জন্য এক লাখ এবং ১৬ ও ১৭ বছর বয়সিদের জন্য ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে। টিকটকের বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে, তারা অনুমতি না নিয়ে টার্গেটেড বিজ্ঞাপন দেখাতে অপ্রাপ্তবয়স্কদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে।
আইনজীবী ডুভে লিন্ডার্স নেদারল্যান্ডসের এক গণমাধ্যমকে জানান, প্রয়োজনের চেয়ে বেশি তথ্য সংগ্রহ করছে টিকটক, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনের লঙ্ঘন। টিকটক কীভাবে ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করছে এটা স্পষ্ট নয়। এসব তথ্য যুক্তরাষ্ট্র কিংবা চীনের কাছে পাঠানো হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন লিন্ডার্স।
আরেকটি অভিযোগ হচ্ছে, টিকটক শিশুদের বিপজ্জনক সব চ্যালেঞ্জে অংশ নিতে উৎসাহিত করে। এটা করতে গিয়ে সারা বিশ্বে কয়েকজন শিশু মারা গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এমন একটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, দ্য ব্ল্যাকআউট চ্যালেঞ্জ। এটি একে অপরকে শ্বাসরুদ্ধ করে রাখার প্রতিযোগিতা। এই চ্যালেঞ্জ থেকে একজন সরে না আসা পর্যন্ত তা চলতে থাকে। আইনজীবী লিন্ডার্স বলেন, এমন ঝুঁকিপূর্ণ চ্যালেঞ্জের কারণে মৃত্যু না হলেও এটা শিশুদের মানসিক ও শারীরিক ক্ষতি করতে পারে।
এদিকে টিকটক জানিয়েছে, শিশুদের রক্ষায় টিকটক যথেষ্ট চেষ্টা করে যাচ্ছে। যেমন ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সিদের অ্যাকাউন্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ‘প্রাইভেট’ করে রাখা হয়। ফলে অচেনা কেউ শিশুদের ভিডিও দেখতে পারেনা। এছাড়া টিকটকের মডারেটররা অনুপযুক্ত ভিডিও সরিয়ে ফেলেন এবং এমন ভিডিও নির্মাতাদের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করে দেন। টিকটক ব্যবহারকারীরাও চাইলে কোনো ভিডিওর বিরুদ্ধে রিপোর্ট করতে পারেন। টিকটকের মালিক চীনের ইন্টারনেট কোম্পানি বাইটড্যান্স। এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৭০ কোটি। সংবাদ সংগ্রহ করতে ডয়চে ভেলেসহ অন্যান্য গণমাধ্যমও টিকটক ব্যবহার করছে।