মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে হঠাৎ করেই উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদের ছবির বদলে চশমা পরা একটি শিশুর ছবি দেখে অনেকেই ভেবেছিলেন—সাইটটি হয়তো হ্যাক হয়েছে। তবে ফ্যাক্ট চেক করে জানা গেছে, এটি কোনও হ্যাকারের কাজ নয়, বরং এটি করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব সিদ্ধান্তে।
ছবিতে প্রতিস্থাপিত চার বছরের শিশুটির নাম আলিফ। গত ২৩ মে গাজীপুরের টঙ্গী এরশাদনগর এলাকা থেকে নিখোঁজ হয় সে। তিন দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো শিশুটির কোনও খোঁজ মেলেনি। বাবা একজন সেলুন ব্যবসায়ী, মা গৃহিণী। সন্তান হারিয়ে পাগলপ্রায় তারা।
ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
আন্তর্জাতিক নিখোঁজ শিশু দিবস (২৫ মে) উপলক্ষে, আলিফের ছবি নিজ পরিচয়ের জায়গায় বসিয়ে এক ব্যতিক্রমী মানবিক বার্তা দিয়েছেন উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ছবির নিচে লেখা—
“নিখোঁজ শিশুটির নাম আলিফ। পরনে ছিল মেরুন শার্ট। দয়া করে খোঁজ পেলে জানান ও শেয়ার করুন। তার বাবা-মা সন্তানকে খুঁজে পেতে দিশেহারা।”
সরকারি পর্যায়ে সচরাচর এমন ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত দেখা যায় না। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নিখোঁজ শিশুদের প্রতি জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে এবং সচেতনতা তৈরিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উপদেষ্টা।
এই উদ্যোগ শুধু ওয়েবসাইটের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। জানা গেছে, খুব শিগগিরই প্রতিটি সরকারি ওয়েবসাইটে এলাকা ভিত্তিক নিখোঁজ শিশুদের ছবির জন্য একটি স্বতন্ত্র অপশন যুক্ত করার প্রস্তাব পাঠানো হবে।
এই লক্ষ্যে মঙ্গলবার ‘এটুআই’ (Access to Information) প্রকল্পে চিঠি পাঠাবেন উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। উদ্দেশ্য—দেশব্যাপী অনলাইনভিত্তিক একটি ন্যাশনাল নিখোঁজ শিশু রেজিস্ট্রি গঠন।
একইসঙ্গে ‘অ্যাম্বার অ্যালার্ট’ নামের আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবহৃত একটি জরুরি সতর্কতা প্রযুক্তি বাংলাদেশে চালুর প্রক্রিয়াও চলছে। সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সংগঠন সাইবার টিনসের নেতৃত্বে এটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
সংগঠনটির প্রধান, শিশু শান্তি নোবেল জয়ী সাদাত রহমান, ইতোমধ্যে এক লাখ মানুষের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি পিটিশন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে জমা দিয়েছেন। এতে সরকারের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে
সরকারি অনুমোদন পেলেই ‘অ্যাম্বার অ্যালার্ট’ বাস্তবায়নে সহায়তা করতে এগিয়ে আসবে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ICMSI (International Child Missing Support Initiative)। তারা পৃথিবীর ২০টি দেশে ইতোমধ্যে প্রযুক্তিটি কার্যকরভাবে চালু করেছে।
বিশেষ অনুরোধ
যদি আপনি আলিফ সম্পর্কে কিছু জানেন বা কোথাও দেখে থাকেন, নিকটস্থ থানায় জানান অথবা ৯৯৯-এ ফোন করুন।