১৯৭১ এ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ জন্মের পর থেকে ২০১০/১১ সাল পর্যন্ত দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের ধীরগতি পরিলক্ষিত হয়, যার প্রধান কারণ ছিল সরকারের কম রাজস্ব আয় | সরকার ইনকাম ট্যাক্স, ভ্যাট এবং কাস্টমস ডিউটি এই তিনটি প্রধান খাত থেকে রাজস্ব আয় করে, যেখানে দুর্বল রাজস্ব ব্যবস্থাপনা দেশের উন্নয়নের বাধা হয়ে দাড়ায় | বর্তমান সরকারের কর্ণধার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে দেশের রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন অব্যাহত রেখে চলেছেন | দেশীয় সফটওয়্যার দিয়ে রাজস্ব ব্যবস্থাপনার আদেশ দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের উন্নয়নের উদ্যোগে নতুন ধারা যুক্ত কর১০ দিয়েছেন | এই লেখাটি ভ্যাট সফটওয়্যার বিষয়টির খুঁটিনাটি বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করছি |
ভ্যাট কি এবং কেন ?
দেশ পরিচালনা বা উন্নয়নের জন্য বাজেট প্রয়োজন হয় এবং বাজেট করার জন্য প্রয়োজন রাজস্ব | সরকারের রাজস্ব খাত খুবই কম, তার মধ্যে ইনকাম ট্যাক্স এর পাশাপাশি VAT অথবা মূল্য সংযোজন কর মোট বাজেটের বড় অংশ | পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভ্যাট অন্যান্য নামে পরিচিত.. যেমন গুডস এন্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স ইন্ডিয়াতে প্রচলিত | খুব সহজভাবে বলা যায়, আপনার টাকা খরচ করার ট্যাক্সকে ভ্যাট বলা যায় | মূলত পণ্য বা সেবার উৎপাদন থেকে বিক্রয় পর্যন্ত সকল স্তরকে করের আওতার মধ্যে রাখা | ভ্যাটের আওতাভুক্তির ফলে সরকার বাজারের স্থিতি বজায় রাখতে সক্ষম হয় | আমাদের দেশে বাজারের অসামঞ্জস্যতা ও মূল্য স্থিতি নিয়ে সবসময়ই একটা অভিযোগের মধ্যে থাকি যেটার প্রধান কারণ ভ্যাট নিবন্ধন না করা |
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, জনগণ ও সরকারের ভূমিকা:
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কেনার সময় ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য, কাঁচামাল বা সেবা ক্রয় করার সময় ভ্যাট দিতে হবে এবং ক্রেতা থেকে নির্ধারিত হারে গ্রহণ করবে | জনগণ ও ক্রেতা ভ্যাটের গুরুত্ব বুঝতে হবে এবং দেশের উন্নয়নে রাজস্ব ভূমিকা অব্যাহত রাখবে | সরকার ভ্যাট প্রদানে জনগণকে উৎসাহ প্রদান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও বাজারদরের সামঞ্জস্যতা বজায় এবং সর্বোপরি দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখবে |
বর্তমান অবস্থা:
জনগণের ভ্যাট প্রদানে অনীহা আমাদের দেশে সবসময়ই পরিলক্ষিত যেটার প্রধান কারণ ছিল দেশের ধারাবাহিক উন্নয়ন, যার ফলে গত কয়েক বছর আগেও আমাদের রাজস্ব আয়ের পরিমান খুবই কম ছিল এবং যা বাজেটের খুব অংশ হিসেবে বিবেচ্য ছিল | যেটা এখন পুরোপুরি না হলেও অনেকখানি বিবেচ্য হচ্ছে | ধারণার জন্য অঙ্কটা ধরা যায়, চলতি বাজেট ৪৬৫০০০ কোটি, রাজস্ব ৩৫০০০০ কোটি যার মধ্যে ৪০ ভাগ ভ্যাট থেকে আসছে | জনগণ ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান দেশের উন্নয়ন নিয়ে একটু চিন্তা বাড়লেই আমাদেরমতো মধ্যম আয়ের উন্নয়নশীল দেশের পুরো বাজেট দেশীয় রাজস্ব দিয়ে করা সম্ভবপর বলে আমার মনে হয় |
ভ্যাট সফটওয়্যার অনুমোদন, নিয়মনীতি, ব্যবহারকারীর সংশয়, আগ্রহ:
রাজস্ব লক্ষ্য পূরণে সরকার ও বাংলাদেশ রাজস্ব বোর্ড গত কয়েক বছর ধরে সেন্ট্রাল ও ইন্টেগ্রেটেড ভ্যাট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেম বসানোর উদ্যোগ নেয় এবং সেই উদ্যোগের ফল হিসেবে সরকার ভ্যাট কালেকশন এবং ভ্যাট সংক্রান্ত হিসাব ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশে তৈরী সফটওয়্যারকে এনবিআর তালিকাভুক্তি ও বাধ্যতামূলক করে| এই ঘোষণার পর প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন রকম সংশয় ও ভীতি কাজ করতে থাকে |
প্রথমত: ট্যাক্স ও ভ্যাট বিষয়ক জ্ঞানের অভাবে এটাকে ভয় পাওয়া, সর্বোপরি রাজস্ব দেয়ার অনীহা | স্কুল কলেজ লেভেলে ট্যাক্স বিষয়ক শিক্ষা আমার জানামতে সেইভাবে নেই যার ফলে প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা বা কর্মজীবী ভ্যাট বা ট্যাক্স জটিলতায় না পড়ার আগে কোনো জ্ঞান পাচ্ছেনা, সর্বোপরি এই জ্ঞান আহরণের জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো যেই সব পন্থা অবলম্বন করে সেই পন্থাগুলো ভ্যাট/ট্যাক্স প্রধানের চাইতে অনেক বেশি ব্যয়বহুল | উল্লেখ্য যে, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান একটা ভালো অবস্থানে পোঁছানোর আগে প্রফেশনাল একাউন্টেন্ট ও রাখতে পারছেনা |
দ্বিতীয়ত: বাংলাদেশী একাউন্টিং প্রফেশনালদের বেশীরভাগই বাংলাদেশী সফটওয়্যারের পরিবর্তে বিদেশী সফটওয়্যার জানা ও ব্যবহার | আমাদের দেশীয় সফটওয়্যারের বয়স ও নব্বইয়ের দশকের অদক্ষতার কারণে তৈরি অনাস্থার ফলে আমাদের দেশীয় প্রতিষ্ঠান তার সর্বোচ্চ মূল্যবান তথ্য অন্যদেশের কারিগরি ও সেবা প্রধানকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে ছেড়ে দিচ্ছে বুঝে ও না বুঝে, ভয়ে ও সংশয়ে যেই কারণেই হোক না কেন | যেটা উত্তরাধিকার সূত্রেই বিদেশী সফটওয়ারের মধ্যেই ব্যবস্থাপনা রয়ে গেছে | বিদ্যাপীঠ গুলোতে ধীরে ধীরে ট্যাক্স জ্ঞান ও দেশীয় সফটওয়্যারের উপর বিষয়ভিত্তিক পড়ালেখা এই অবস্থার পরিবর্তনে দেশীয় টেকনোলজিতে আস্থা ও স্বনির্ভরতা বাড়বে |
প্রশ্ন জাগছে, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি একটি সফটওয়্যার ব্যবহার করলে কেন আবার টাকা খরচ করতে হবে | মূল কারণ, আপনি যেই সফটওয়্যার ব্যবহার করছেন বা বাংলাদেশ আইন অনুযায়ী তৈরী হয়নি, হয়তো অন্য দেশের ভ্যাট/ট্যাক্স আইন মেনে বানানো হয়েছে | যদি তাই হয় তাহলে অবশ্যই আপনাকে আপনার প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যারটি পরিবর্তন করতে হবে এনবিআর তালিকার যেকোনো একটি সফটওয়্যার দিয়ে | তারপরও কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের পূর্ণাঙ্গ ইআরপি সিস্টেম ব্যবহার বন্ধ নাও করতে পারেন সময় ও ব্যয় বাঁচানোর জন্য সেই ক্ষেত্রে আপনার বর্তমান ইআরপি সিস্টেম থেকে এপিআই তৈরী করতে ভ্যাট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারের সঙ্গে ইন্টেগ্রেট করে নিতে হবে | এই ইন্টিগ্রেশনে অবশ্যই ট্রান্সেকশনের সঠিক দিন তারিখ ও সময় আসতে হবে |
যারা এখনো সফটওয়্যার ব্যবহার করছেন না, তারা অবশ্যই তালিকাভুক্ত সফটওয়্যারগুলো থেকে আপনার প্রতিষ্ঠানের উপযুক্ত ভ্যাট সিস্টেমসহ পুরো ইআরপি চালানোর ব্যবস্থা করুন | সরকারের রাজস্ব গণনা বা কমপ্লায়েন্ট হওয়া ছাড়াও এটা আপনাকে আপনার প্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকায় থাকবে |
এনবিআর তালিকাভুক্ত সফটওয়্যার গুলোতে এনবিআর নির্ধারিত যেই সব নিয়মকানুন মেনে চলা হয়েছে:
১) নির্মিত সফটওয়্যারটিতে মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এবং তদধীন প্রণীত বিধিমালা, প্রজ্ঞাপন ও আদেশ পরিপালনে সক্ষমতা সম্পন্ন করতে পারার ব্যবস্থা থাকা |
২) সফটওয়্যারটি যাবতীয় বাণিজ্যিক কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি রেকর্ডপূর্বক মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এবং তদধীন প্রণীত অন্যান্য বিধানাবলীর আওতায় পূর্ণাজ্ঞ অটোমেশনের সুবিধা সম্বলিত ব্যবস্থা সন্নিবেশিত থাকা |
৩) সফটওয়্যারটিতে ক্রয় হিসাব রেজিস্টার ও বিক্রয় চালানপত্রে কোন তথ্য এন্ট্রি দেয়ার সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিক্রয় হিসাব, চলতি হিসাব রেজিস্টার এবং দাখিলপত্রে আপডেট হওয়া |
৪) সফটওয়্যারটিতে আদর্শ হার বা ট্যারিফ মূল্য বা সংকুচিত ভিত্তি মূল্যে সরবরাহ করার সুবিধা সৃষ্টিসহ উৎসে মূসক আদায়/কর্তন , অপচয় ও উপজাত পণ্য ব্যবস্থাপনা , ডেবিট নোট ও ক্রেডিট নোটের ব্যবস্থাপনা, চুক্তিভিত্তিক উৎপাদন, উপকরণ কর রেয়াত ব্যবস্থাপনা ও মূল্য ঘোষণা ব্যবস্থাপনা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন করার সুবিধা থাকা |
৫) মূল্য ঘোষণায় বর্ণিত সহগ এর ভিত্তিতে উৎপাদিত পণ্য, ব্যবহারিত উপকরণ ও বিক্রয় এর বিপরীতে প্রকৃত উপকরণ ও উৎপাদিত পন্যের স্থিতির একটি তুলনামূলক প্রতিবেদন (reconciliation report) প্রতি কর-মেয়াদ শেষে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রণীত করা , যাতে মূল্য ঘোষণায় বর্ণিত সহগে কোন অসংগতি থাকলে তা তাৎক্ষণিকভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব করা |
৬) মাসিক দাখিলপত্রসহ অন্যান্য রেজিস্টারাদি ( ডেবিট হিসাব, ক্রেডিট হিসাব, চলতি হিসাব ) এবং রিপোর্ট অটোমেটেড সিস্টেম থেকে প্রস্তুত ও প্রিন্ট করার সুবিধা থাকা |
৭) সফটওয়্যার শুধুমাত্র একবার মূল মূসক চালানপত্র প্রিন্ট করা। সফটওয়্যারটিতে যেন একটি চালানপত্র দ্বিতীয়বার বা পরবর্তী সময়ে ইস্যু করা না যায় |
৮) মূসক চালানপত্রে সময় ও তারিখ স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রিন্ট করা, যা কেবলমাত্র যখনই প্রিন্ট করা হইবে সেই সময় ও তারিখ (System BIOS অনুযায়ী) প্রদর্শন করবে |
৯) প্রতিদিনের কার্যক্রম শেষে সেই দিনের কম্পিউটার জেনারেটেড রিপোর্ট ও বিধি মোতাবেক হিসাবরক্ষণ সংক্রান্ত সকল বাণিজ্যিক দলিলাদি, যেমনঃ চালানপত্র ডেবিট বা ক্রেডিট নোট, ক্রয় রেজিস্টার, বিক্রয় রেজিস্টার, চলতিহিসাব, দাখিলপত্র ইত্যাদি তারিখ ও সময় উল্লেখে প্রিন্ট করতে পারা |
১০) মূসক কতৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী যে কোন তথ্য (সফটকপি /হার্ডকপি) যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যে সরবরাহ করার ব্যবস্থা |
১১) মূল্য সংযোজন কর বিধিমালার নির্ধারিত ছকের তথ্য ক্ষুন্ন না করে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান তার প্রয়োজন অনুযায়ী অতিরিক্ত তথ্যসহ মূসক চালানপত্র এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক দলিলাদি /রেজিস্টার তৈরি ও সংরক্ষন করতে পারার ব্যবস্থা |
১২) সফটওয়্যারটিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংশ্লিষ্ট মূসক কতৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী নিরীক্ষা (Audit) কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রবেশ (Access) সুবিধা থাকা |
১৩) সিস্টেমে মূসক চালানপত্রের সাথে পণ্য ভান্ডার (স্টক) ইন্ট্রিগ্রেটেড থাকিতে হইবে, যেন সিস্টেমে মূসক চালানপত্র ইস্যু করা হলে বিক্রয় রেজিস্টারের সংশ্লিষ্ট কলামে অভিন্ন সমন্বয় স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পাদিত হওয়া এবং স্টকের পরিমাণে ম্যানুয়ালি কোন প্রকার পরিবর্তন করা সম্ভব না হওয়া |
১৪) বিক্রিত পণ্য ফেরত বা ক্রয়াদেশ বাতিলের ক্ষেত্রে ডেবিট বা ক্রেডিট নোটের মাধ্যমে তা সমন্বয় করতে পারার ব্যবস্থা যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিক্রয় এবং ক্রয়াদেশ বাতিলের ক্ষেত্রে ডেবিট বা ক্রেডিট নোটের মাধ্যমে তা সমন্বয় করা |
১৫) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা ও চাহিদা মোতাবেক বোর্ডের অন্যান্য সফটওয়্যার বা উপাত্ত বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে তথ্য ও উপাত্ত বিনিময়ের সুবিধা থাকা |
১৬) নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক প্রাঙ্গনে সকল তথ্যসহ সিস্টেম পরিচালনা করিতে হইবে । Cloud Server ব্যবহার করা হলে Database replica নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গনে সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা |
১৭) ইস্যুকৃত মূসুক চালান কোন কারণে বিনষ্ট হলে বা তা বাতিল কবার প্রয়োজন হলে তা edit ও re-print করিবার সুবিধা না থাকা | সেক্ষেত্রে ডেবিট নোট/ক্রেডিট নোট ব্যবহার করে চালানপত্র বাতিল করার ব্যবস্থা এবং পুনরায় ধারাবাহিক ক্রমিক নাম্বার ব্যবহার করিয়া চালানপত্র ইস্যু করতে পারা এবং অন্যান্য মূসক রেজিস্টারের সাথে তার Link থাকা ।উপরন্ত, চালানপত্র বাতিলের সুনিরদিস্থ কারন ডাটাবেজের লগ রিপোর্ট সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা, যা প্রতি মেয়াদ শেষে detail report আকারে দেয়ার ব্যবস্থা ।
১৮) আইনানুগভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত যেকোন মূসক কর্মকর্তা সিস্টেম প্রবেশ করে প্রয়োজনীয়তা পরিক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারার ব্যবস্থা।
১৯) সফটওয়্যারটির database এ audit trail থাকা। Table এর কোনো record edit/delete করা হলে audit trail log file স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রকৃত সময় উল্লেখসহ তথ্য সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা থাকা |
২০) দাখিলপত্র ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ম্যানেজমেন্ট রিপোর্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে সিস্টেম থেকে প্রস্তুত করার ব্যবস্থা থাকা এবং দাখিলপত্রসহ বিভিন্ন আবেদন/তথ্যাদি (যেমনঃ মূসক নিবন্ধনের তথ্য পরিবর্তন ইত্যাদি) Integrated VAT Administration System (iVAS) এ জাতীয় রাজস্ব data schema অনুযায়ী আপলোড করার ব্যবস্থা থাকা।
২১) প্রতিদিনের কার্যক্রম শেষে সকল তথ্য নূন্যতম দুইটি ব্যাক-আপ নেয়ার ব্যবস্থা থাকা।
২২) সফটওয়্যারটিতে Hacking এবং Tampering সহ সকল ধরনের ঝুঁকি হতে সুরক্ষার জন্য পরিপূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকা |
২৩) সিস্টেমের ব্যবহার বিষয়ে এবং মূসক অপারেশন বিষয়ক Detailed ও Summary রিপোর্ট প্রণয়ন ব্যবস্থা থাকা |
ভ্যাট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার ও ইআরপি সংশয়:
এনবিআর নিবন্ধিত সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের নির্মিত সফটওয়্যার এ ভ্যাট এক্ট ১৯৯১ নিয়ম অনুযায়ি বাস্তবায়ন করার নির্দেশ দেয় এবং প্রতিষ্ঠানগুলো সেই অনুযায়ী করে | এই সফটওয়্যারটিতে মূলত প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট, প্রাইস ডিক্লারেশন, সেল, পারচেজ, ইনভেন্টরি ও একাউন্টস সব ধরণের কোম্পানির জন্য | এর বাইরে প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট : ম্যানুফ্যাকচারিং/প্রোডাকশন কোম্পানির জন্য, সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট ও বিলিং : সার্ভিস ওরিয়েন্টেড কোম্পানির জন্য থাকবে |
একটা ইআরপি সিস্টেমে মডিউল হিসেবে ভ্যাট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারের এর সমান, কম ও বেশি থাকতে পারে প্রতিষ্ঠানের চাহিদা মোতাবেক | আপনি আপনার ভ্যাট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার কেনার সময় আপনি ইআরপি চাহিদা পূরণ করে কিনা সেটা দেখে নিন | এতে করে আপনার অনেকগুলো সফটওয়্যার ব্যবহার ও তার খরচ বহন করার প্রয়োজন হবেনা |
আপনাদের মনে আরো একটা প্রশ্ন জাগতে পারে যে, ভ্যাট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার থাকার পর কি আমাকে একাউন্টিং ও ইআরপি এর জন্য আরেকটা সফটওয়্যার নিতে হবে | উত্তর : না, আপনার ভবিষ্যত একাউন্টিং ম্যানেজমেন্ট বা ইআরপি সফটওয়্যারই একটাই হওয়া উচিত |
ভ্যাট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার এর দাম:
প্রত্যেকটি সফটওয়্যারের মূল্য নির্ভর করে এটা কত ভালো আর্কিটেকচার, ডিজাইন, টেকনোলজি ও কতগুলো ফীচার বা ডিটেইলস বানানো হয়েছে তার উপর | ভ্যাট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারটিতে সেল, পারচেজ, ইনভেন্টরি, একাউন্টস, সার্ভিস বিলিং ও প্রোডাকশন মডিউলের সম্পৃক্ততা থাকা ফলে এই মডিউলের ব্যাপ্তি ও কতজন ইউজার ব্যবহার করবে তার উপর মুল্য নির্ধারিত করবে | মূল্যের পাশাপাশি আপনাকে আপনার টীম মেম্বারদের ট্রেনিং ও প্রতিষ্ঠানে সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাস্তবায়ন করার জন্য অতিরিক্ত ইমপ্লিমেন্টেশন বাজেট করতে হবে | PrismVAT নামের ভ্যাট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার বাজারে সাধারণ প্যাকেজ ৮ লক্ষ টাকা এবং ইআরপি ফীচারসহ সেটার বর্ধিত মূল্য ধার্য্য করা হয় |
ইকবাল আহমদ ফখরুল হাসান (রাসেল)
প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা
ডিভাইন আইটি লিমিটেড
প্রাইভেট সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক