যে কোনো মনিটরের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল রিফ্রেশ রেট। একটি মনিটর কীভাবে ব্যবহার করা হবে তার ওপর নির্ভর করে, একজন ব্যবহারকারীর কত রিফ্রেশ রেটের প্রয়োজন। গেম খেলার জন্য, বা সৃজনশীল কাজের জন্য একোটি পিসি তৈরি করার ক্ষেত্রে ভালো মনিটরের প্রয়োজন। আর ভাল মনিটর নির্বাচন করার জন্য জানতে হবে এর বিভিন্ন ফিচার সম্পর্কে, যার মধ্যে রিফ্রেশ রেট অন্যতম বলে প্রতিবেদনে লিখেছে টেকরেডার। প্রশ্ন থাকতেই পারে রিফ্রেশ রেট জিনিসটা কী? আর কীভাবে এটি মোনিটরের কার্যক্রম প্রভাবিত করে?
চলুন জেনে নেওয়া যাক রিফ্রেশ রেট কীভাবে বিভিন্ন ফিচার ও মনিটরকে প্রভাবিত করে তার বিস্তারিত। এ ছাড়া, কোন ধরনের মনিটরের জন্য কোন রিফ্রেশ রেট সবচেয়ে ভালো, সেটি হাই-এন্ড গেইমিং ডিসপ্লে হোক বা অফিসের জন্য কম বাজেটের মনিটর হোক সেটিও জানা যাবে।
রিফ্রেশ রেট কী?
সবচেয়ে মৌলিক সংজ্ঞা হল, এক সেকেন্ডে মনিটর কতগুলো ফ্রেম দেখাতে পারে। ‘হার্টজ’ বা কম্পঙ্ক দিয়ে এটি পরিমাপ করা হয়। এটি ফ্রেম রেটের মতো নয়। ফ্রেম রেট হল, ফ্রেমের সংখ্যা যা পিসিটি প্রতি সেকেন্ডে মনিটরে পাঠায়।
রিফ্রেশ রেট যত বেশি হবে, একটি মনিটর এক সেকেন্ডে তত বেশি ফ্রেম দেখাতে পারবে। বেশি রিফ্রেশ রেটের মানে হল, বেশি ফ্রেম রেটের ভিডিও মনিটরে ঠিকঠাক দেখাবে।
রিফ্রেশ রেট সম্পর্কে জানার গুরুত্ব
বিভিন্ন মনিটরের রিফ্রেশ রেট ভিন্ন হয়ে থাকে। এটি নির্ভর করে মনিটর কী ধরনের তার ওপরে। আর এটি এ কারণেই গুরুত্বপূর্ণ যে, মনিটরের পর্দায় দেখানো ফ্রেমের পরিমাণ নির্ধারণ করে এটি।
উদাহরণ হিসাবে, একজন ব্যবহারকারী এমন একটি গেইম খেলছেন যাতে ১০০হার্টজ রিফ্রেশ রেট প্রয়োজন। কিন্তু তার মনিটরের রিফ্রেশ রেট কেবল ৬৫ হার্টজ। তখন ওই মনিটরের কোনোভাবেই ৬৫হার্টজের বেশি ফ্রেম দেখাতে পারবে না। ফলে অনেক সময় আটকে যেতে পারে গেইমের ভিডিও।
তবে, এর বিপরীত ও হতে পারে। একটি মনিটরের রিফ্রেশ রেট গ্রাফিক্স কার্ডের ওপরেও নির্ভর করতে পারে। উদাহরণ হিসাবে ধরা যাক, একটি মনিটরে ৩০০ হার্টজের রিফ্রেশ রেট রয়েছে, কিন্তু ওই পিসির গ্রাফিক্স কার্ড প্রতি সেকেন্ডে কেবল ৬০ ফ্রেম রেট দেখাতে পারে, সেক্ষেত্রে মনিটরের ৩০০ হার্টজের রিফ্রেশ রেট তেমন কাজেই আসবে না।
সেরা রিফ্রেশ রেট মানে কী?
সেরা রিফ্রেশ রেট বলতে আসলে কিছু নেই। যেটি আছে তা হল একজন ব্যবহারকারীর প্রয়োজন অনুসারে উপযুক্ত রিফ্রেশ রেট।
একজন ব্যবহারকারী কেবল সৃজনশীল কাজ বা সম্পাদনার ককাজের জন্য মিনিটর কিনলে তিনি ৬০ হার্টজের মতো একটি স্ট্যান্ডার্ড রিফ্রেশ রেটের একটি মনিটর বেছে নিতে পারেন, যেহেতু তার ব্যবহারের সঙ্গে গেইমিংয়ের সম্পর্ক নেই।
তবে, গেইমিংয়ের জন্য মনিটর কেনার আগে কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করা জরুরী। প্রথমটি হল একজন ব্যবহারকারী কী ধরনের গেইম খেলবেন? সময় কাটানোর জন্য গেইম খেলে থাকলে ১০৮০পি রেজুলিউশন ও ৬০হার্টজ রিফ্রেশ রেটের ডিসপ্লেই যথেষ্ট হওয়া উচিত বলে উল্লেখ করেছে টেকরেডার।
গেইমিং পিসিওয়ালা গেইমারদের জন্য বর্তমান সময়ে রিফ্রেশ রেটের মান ১২০হার্টজ থেকে ১৪৪হার্টজের মধ্যে বিবেচনা করা হয়। এটি নিশ্চিত করে গেইমগুলো মিডরেঞ্জ বাজেটের পিসিতেও বাধা ছাড়াই চলবে।
কেউ যদি হার্ডকোর গেইমার হন ও ফার্ট বা থার্ড পার্সন শুটিং গেইম খেলেন, সেক্ষেত্রে তার উঁচু ও ভাল মানের রিফ্রেশ রেটের মনিটর প্রয়োজন হবে। ২০০ হার্টজ বা এর বেশি রিফ্রেশ রেট, সম্প্রতি স্পেক বা সর্বশেষ ফিচারের হাই-এন্ড গেইমিং পিসির সঙ্গে চালানো যাবে।
একটি পিসির বেশ কিছু ফিচারও রিফ্রেশ রেটকে টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করে, তাই মনিটর বাছাই করার সময় সেগুলো বিবেচনা করা উচিত।
‘রেসপন্স রেট’ বলে একটি বিষয় রয়েছে, যা রিফ্রেশ রেটের সঙ্গে বা বিপরীতে কাজ করতে পারে। উদাহরণ হিসাবে, একটি ১২০ হার্টজের মনিটরে যদি এক মিলি সেকেন্ড রেসপন্স রেট থাকে, আর একটি ১৪৪ হার্টজের মনিটরের পাঁচ মিলি সেকেন্ডের রেসপন্স রেট থাকে, তবে প্রথমটি কেনা উচিত। এর কারণ, রেসপন্স রেট কম হলে ‘ইনপুট লেটেন্সি’ কমে যাবে। ফলে, বেশি রিফ্রেশ রেটের মনিটর হলেও ফিচারটি সঠিকভাবে কাজ করবে না।
এ ছাড়া, রেজোলিউশন প্রভাব ফেলে ফ্রেম রেটের ওপর, তাই এদিক সেদিক হতে পারে রিফ্রেশ রেট। রেজোলিউশন যত বেশি হবে, ফ্রেম রেট তত কম হবে। ফলে, ১০৮০পি কোনো গেইম চালানোর সময় যদি একটি পিসি ১০০ এফপিএস হিট করে। ওই একই গেইম ৪কে রেজুলিউশনে চালানোর সময় একই ফ্রেম রেট দেখাতে পারবে না।