আধুনিক ভ্রমণের সঙ্গে আজকাল অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে ইন্টারনেট। যাত্রার ফাঁকে সামাজিক যোগাযোগ, ইমেইল চেক কিংবা প্রয়োজনীয় তথ্য খোঁজার জন্য অনেকেই বিমানবন্দরের ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহার করেন। তবে প্রশ্ন হচ্ছে—এই ফ্রি ওয়াইফাই কি আদৌ নিরাপদ?
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিমানবন্দরসহ যেকোনো পাবলিক প্লেসে পাওয়া ফ্রি ওয়াই-ফাই সাইবার নিরাপত্তার দিক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এসব নেটওয়ার্ক সাধারণত ওপেন (unencrypted) হয়ে থাকে। ফলে ব্যবহারকারীর তথ্য মাঝপথে সহজেই হাতিয়ে নিতে পারে সাইবার অপরাধীরা।
হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি কোথায়?
পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহারের সময় হ্যাকাররা নিম্নলিখিত কৌশল ব্যবহার করে থাকেন-
ম্যান-ইন-দ্য-মিডল (MITM) আক্রমণ: আপনার ডিভাইস ও ওয়েবসাইটের মাঝখানে এসে তথ্য চুরি করা
ফেইক ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক: আসল নেটওয়ার্কের নামের সঙ্গে মিল রেখে ভুয়া নেটওয়ার্ক তৈরি করে ফাঁদে ফেলা
অনিরাপদ ওয়েবসাইটে প্রবেশ: https ছাড়া সাইটে ঢুকলে পাসওয়ার্ড বা ব্যক্তিগত তথ্য সহজে হাতিয়ে নেওয়া যায়
বিশেষ করে যারা ফ্রি নেটওয়ার্কে বসে অনলাইন ব্যাংকিং, পেমেন্ট বা ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে লগইন করেন, তারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে থাকেন।
কীভাবে নিরাপদে ব্যবহার করবেন?
ভিপিএন (VPN) ব্যবহার করুন: এটি আপনার ডেটা এনক্রিপ্ট করে রাখে
ব্যাংকিং বা সংবেদনশীল তথ্য প্রবেশ থেকে বিরত থাকুন
ভুয়া নেটওয়ার্ক শনাক্ত করতে সতর্ক থাকুন
https সংযুক্ত ওয়েবসাইট ব্যবহার করুন
অটো কানেক্ট বন্ধ রাখুন: যেন ফোন বা ল্যাপটপ নিজে থেকে সন্দেহজনক নেটওয়ার্কে না জুড়ে যায়
অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার ও ফায়ারওয়াল সক্রিয় রাখুন
তবু কেন মানুষ ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহার করে?
বিমানবন্দরে ইন্টারনেটের দরকার হয় টিকিট চেক, ভ্রমণ তথ্য যাচাই, রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ব্যবহারের জন্য। তাই অনেকেই দ্রুত ডেটা সংযোগের বিকল্প হিসেবে ফ্রি ওয়াই-ফাই বেছে নেন। তবে এই ‘বিনামূল্যের’ সুবিধা অনেক সময় তথ্যের চরম মূল্য আদায় করতে পারে।
বিমানবন্দরের ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধাজনক হলেও তা পুরোপুরি নিরাপদ নয়। অজ্ঞতা কিংবা অসতর্কতার কারণে আপনার ব্যক্তিগত ও আর্থিক তথ্য চলে যেতে পারে হ্যাকারদের হাতে। তাই ফ্রি ওয়াই-ফাই ব্যবহারে চাই সচেতনতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
আধুনিক প্রযুক্তির সুযোগ নিতে গিয়ে যেন নিরাপত্তার ফাঁদে না পড়েন—এটাই হোক ডিজিটাল ভ্রমণের নতুন মনোভাব।