ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটকে নিজের প্রফাইল সমৃদ্ধ করার একটি খুব সেরা উপায় বলে চিন্তা করা উচিৎ। টেকজুমের সাপ্তাহিক আয়োজন ভার্চুয়াল লাইভের আলোচনায় এমন কথায় উঠে আসে। বুধবার (২৫ আগস্ট) ভার্চুয়াল লাইভের চম্বুক অংশ তুলে ধরা হল নিচে-
আওয়ার শেরপুর এর প্রতিষ্ঠাতা মোঃ দেলোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় টেকজুমের লাইভ আড্ডায় “ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা” শিরোনামে ভার্চুয়াল লাইভের (২৪ আগস্ট) অতিথি ছিলেন ইপ্পি শপিং এর স্বত্বাধিকারী রোকসানা আক্তার পপি এবং পিয়সী’র স্বত্বাধিকারী খাতুনে জান্নাত আশা।
১ ঘন্টা ২২ মিনিটের লাইভ অতিথিদের আলোচনার পাশাপাশি দর্শকদের প্রশ্ন ও গঠনমূলক মন্তব্য ছিল লক্ষণীয়। আয়োজনের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও মন্তব্য তুলে ধরা হল-
দর্শকদের গঠনমূলক মন্তব্য।
ই-ক্যাবের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সভাপতি রাজিব আহমেদ মন্তব্যের দর্শকদের উদ্দেশ্যে লিখেন, ”ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট থেকে টাকা পয়সার চিন্তা না করাই ভাল। এদিকে (ওয়েবসাইট থেকে আয়) এভাবে চিন্তা করার জন্যই আসলে কেউ লাভ করতে পারে না।” তিনি আরও লিখেন, “ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটকে নিজের প্রফাইল সমৃদ্ধ করার একটি খুব সেরা উপায় বলে চিন্তা করা উচিৎ। তিনি উদাহরণ দিয়ে লিখেন, ধরেন ময়মনসিংহ জেলার ই-লার্নিং, ই-কমার্স বা জেলার পণ্য নিয়ে আমরা কোন আলোচনা করতে চাই মানে ইভেন্ট। সেক্ষেত্রে আশা আপুর (khjasha.com এ নিয়মিত লিখছেন) নাম সবার আগে আসবে এবং তিনি আমন্ত্রণ পাবার যোগ্য।”
জান্নাতুল ফেরদৌসি নামের একজন দর্শক লিখেন, ”নিজের ওয়েবসাইট নিজের দুনিয়া। অনেক সোাশ্যাল মিডিয়া আছে, যেখানে অনেক ফিল্টারিং করা হয়। যার মাধ্যমে নিজেদের অনেক কিছু প্রকাশ করা সম্ভব হয় না। নিজেদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনেক কিছু প্রকাশ করা যায়।” অন্যের লেখা হুবহু কপি করা প্রসঙ্গে কাকলী তালুকদার লিখেন, সার্চ করে পড়ার অভ্যাস তৈরি হলে লিখার মাধ্যমে সেটার প্রতিফলন ঘটে।
রোকেয়া বসরী লিখেন, “পড়ার ধৈর্য্য না থাকলে কখনোই লিখা যায় না। লেখকদের একটা লেখা পাঠকের গ্রহণযোগ্য কি পরিমাণ পড়তে হয়, পরিশ্রম করতে হয় সেটা একটু হলেও এখন বুঝি।“ ইসরাত জাহান জীম লিখেন, “দক্ষতা ছাড়া ওয়েবসাইট খোলার সিদ্ধান্ত বোকামি ছাড়া কিছুই না। এজন্য ওয়েবসাইট খোলার আগে যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে।” নুসরাত জাহান মিম লিখেন, “ওয়েবসাইট এর পোস্ট উপরে উঠানোর (সার্চ রেজাল্টের প্রথম পেজে) জন্য এসইও করা আসলেই দরকার।”
https://www.facebook.com/222579011269766/videos/274724864075791
ডিএসবি (ডিজিটাল স্কিলস ফর বাংলাদেশ) ব্লগ ও গ্রুপ সম্পর্কে ফারজানা আরজু লিখেন, “কামরুল ভাই এর ওয়ার্ডপ্রেস আর পডকাস্ট এর লিখা গুলো একেবারেই সুস্পষ্ট। এগুলো পড়ে সহজে বোঝা যায়। ডিএসবি গ্রুপ থেকে লিখালিখির অভ্যাস তৈরি হয়েছে। এখনো শিখছি।“ সাইয়েদা শেফালি লিখেন, “লেখার দক্ষতা অর্জন করতে হলে ডিএসবি তে নিয়মিত সময় দিতে হবে।“ তানিয়া পারভিন লিখেন, “ডিএসবি আমাদের পড়াশোনার গতি ও লেখার ধারাবাহিকতা এনে দিয়েছে।” সালমা সাবিহা লিখেন, “দশ মিনিট প্রজেক্ট সম্পূর্ণই নিজের মত করে লেখা যায়। তবে প্রেজেন্টেশন বেশিরভাগ টপিকই তথ্য নির্ভর, সেক্ষেত্রে উপস্থাপন অনেক ম্যাটার করে।”
অনলাইনের কনটেন্ট আপলোড দেওয়ার ক্ষেত্রে কপি/চুরি গুরুত্বপূর্ণ দিক। কিন্ত ইতিহাস বা মূল টপিক গুলো পরিবর্তন করার মতো কিছু থাকে না অতিথিদের সাথে এবিষয়ে আলোচনার সময় দর্শকদের অনেকে মন্তব্য করেন। তাদরে একজন শামীমা নাছরিন ঋতু। তিনি লিখেন, “আমার মনে হয় সন তারিখ সঠিক নিয়ে তারপর অনেক বেশি পড়াশোনা করে তারপর নিজের ভাষায় লিখলে, কপি হওয়ার সম্ভবনা কম থাকে।” তানি হাসান লিখেন, “শর্ট কাট পথে কোনদিনও ভালো কিছু হয় না।” সাবিহা সুলতানা তুলি লিখেন, “লেখার ক্ষেত্রে সবসময় নিজের ভাষায় লিখলে পাঠক লেখা পড়ে আনন্দ পায়।”
দর্শকদের প্রশ্ন
কৃষ্ণা চক্রবর্ত্তী অতিথিদের কাছে জানতে চেয়ে লিখেন, “ঐতিহাসিক নিদর্শন সম্পর্কে লিখতে গেলে তথ্য গুলো গুগলে থেকে সার্চ করে লিখলেও কি কপি করা হয়?” চয়ন ঘোষ লিখেন, “সম্মানিত অতিথিদের নিকট জানতে চাই, একটি ওয়েবাসাইট একজন সাধারণ ব্যক্তির জন্য কতোটা গুরুত্ব বহন করতে পারে…?” শাহনাজ আক্তার লিখেন “একটা প্রশ্ন, আশা আপুর কাছে। আমি পূর্বে যে লেখা গুলো আমার ওয়ালে (ফেসবুক) বা গ্রুপে দিয়েছি সে গুলো এখন ওয়েবসাইটে দিলে কিভাবে দিব? ওখান থেকে ডিলিট করে ওয়েবসাইটে দিলে কি কপি রাইট (নকল) হবে?” রোকেয়া বসরী সঞ্চালকের কাছে জানতে চায়, “ইংরেজি থেকে বাংলা লেখা হুবহু ট্রান্সলেশন করলে কি কপিরাইট হবে দেলোয়ার ভাইয়া?” খুরশিদা ইসলাম জানতে চায়, “ওয়েবসাইটের ছবি গুলো ইন্টারনেট থেকে নিলে সেটা কি মেনশন করার প্রয়োজন পড়ে?” চম্পা চক্রবর্তী জানতে চায়, “যাদের উদ্যোগ আছে তারা কি নিজেদের নামে নাকি ব্যাক্তির নামে ওয়েবসাইট করা উচিত?”
অতিথিদের আলোচনার অংশ
স্যোশাল মিডিয়াতে বিনামূল্যে লেখার সুযোগ এবং পাঠক পাওয়ার পরও কেন ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটে গুরুত্ব দিচ্ছেন? এ প্রশ্নের জবাবে পিয়স‘র স্বত্বাধিকারী খাতুনে জান্নাত আশা বলেন, ”ছোটবেলা থেকে লেখালেখিতে আগ্রহ ছিল। অনেকদিন যাবৎ ইচ্ছে ছিল একটা ব্লগ করবো কিন্তু সাহস হয়ে উঠেনি। গত দেড় বছর ডিএসবি গ্রুপে লেখালেখি আর সেখান থেকে অর্জিত জ্ঞান প্রয়োগ করতেছি ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটে। তিনি আরও বলেন, ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটে কনটেন্ট দেওয়ার কারণে সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকে আমার ওয়েবসাইটে পাঠাক আসতে পারতছে। তার ওয়েবসাইট (khjasha.com) এ নিজ জেলা সম্পর্কে বাংলা এবং ইংরেজিতে নিয়মিত লিখছেন।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটের সম্ভাবনা সম্পর্কে চাইলে তিনি বলেন, ”নিজ জেলাকে তুলে ধরতে পারতেছি। এরফলে ময়মনসিংহের ব্র্যান্ডিং, ই-কমার্স সহ বিভিন্ন দিকে সম্ভাবনা সম্প্রসার হচ্ছে। এছাড়াও নিজের আগ্রহ প্রকাশ করা যায়, কাজের পোর্টফোলিও তৈরি করা যায়। এরফলে ক্যারিয়ারে দারুণ ভাবে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।”
আপনার (popysarker.com) ওয়েবসাইটে পাঠক কি কি তথ্য পাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ইপ্পি শপিং এর স্বত্বাধিকারী রোকসানা আক্তার পপি বলেন, “টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন দিক, স্থানীয় পণ্য, উদ্যোক্তা, আরিফা মডেল, মুভির রিভিউ সহ বিভিন্ন বিষয়ে কনটেন্ট দিচ্ছি। তিনি আরও বলেন, ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটে সবকিছুর আগে প্রয়োজন লেখালেখির আগ্রহ এবং দক্ষতা। এরপর প্রযুক্তিগত বেসিক দক্ষতা।”