ডিজিটাল বাংলাদেশ রুপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নে লক্ষ্যে জ্ঞানভিক্তিক ও তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ ভ‚মিকা রাখার পাশাপাশি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রযুক্তি নির্ভর পড়াশুনা ও ব্যবহার নিশ্চিতের পাশাপাশি মধ্যম আয়ের দেশে হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে মানব সম্পদ উন্নয়নে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে কানেক্টিভিটি পৌছে দেওয়াসহ একটি আইসিটি প্লাটফর্ম স্থাপনের লক্ষ্যে ১ লাখ ১৫ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্রডব্যান্ড সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ কর্তক এস্টাবিøশিং ডিজিটাল ক্যানেক্টিভিটি (ইডিসি) শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। যেটি সম্পূর্ণ হবে ২০২১ সালের মধ্যে।
প্রস্তাবিত ইডিসি প্রকল্পের ৮টি স্ট্যাস এর মধ্যে রয়েছে-
১. ঢাকাসহ সারাদেশে ২২ টি স্থানে পয়েন্ট অব ইন্টারকানেক্ট (পিওআই) এবং ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রান্তিক পর্যায়ে ১ লাখ ১৫ হাজার প্রতিষ্ঠানে ব্রডব্যান্ড সংযোগ স্থাপন করা হবে;
২. মাঠপর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২৫ হাজার ৫০০ টি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন;
৩. পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষায়িত জ্ঞান চর্চা ও গবেষণার জন্য উচ্চপ্রযুক্তির ৭২ টি ল্যাব ও প্রযুক্তিসুবিধাদি স্থাপন করা হবে;
৪. উপজেলা, জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে ৫৫৫টি সরকারি অফিসের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অবকাঠামো স্থাপন, উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা;
৫. অত্যাধুনিক আইসিটি প্রশিক্ষণ সুবিধাদিসহ ২১ তলা ভবন স্থাপন;
৬. পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের আইসিটি সক্ষমতা উন্নয়ন;
৭. সিলিভ রেজিস্টেশন ভাইটাল স্ট্যাটেসস্টিস (সিআরভিএস) বাস্তবায়নের জন্য কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ের অবকাঠামো স্থাপন এবং
৮. স্মার্ট কৃষি ব্যবস্থাপনা প্রচলনের জন্য ১০০ টি ডিজিটাল ডিলেজ স্থাপন করা হবে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দেশের সর্বত্র একই দামে উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিতহ হবে, প্রান্তিক পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীসহ সকলের তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত জ্ঞান ও সক্ষমতা বৃষ্টি পাবে, এছাড়া উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষায়িত জ্ঞান চর্চা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি হবি এবং সর্বোপরি প্রশাসনিক কার্যক্রম ই-গভন্যান্স পক্রিয়া বাস্তবায়ন ত্বরাহবে। প্রকল্পটি সার্বিক অর্থে সকল
নাগরিকদের জন্য ডিজিটাল সেবা গ্রহণ, জ্ঞানভিক্তিত দক্ষ গঠন এবং কর্মসংস্থান ও নতুন কাজে সষ্টিতে প্রকল্পোটি ভ‚মিকা পালন করবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা- ২০১৮ অনুযায়ী- ২০২১ সালের মধ্যে দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (আবাসিক হলসহ) কম্পিউটার ল্যাব, ল্যান প্রতিষ্ঠাসহ উচ্চগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করা হবে। এতে একদিকে নিশ্চিত হবে প্রযুক্তির ব্যবহার, অন্যদিকে শিক্ষকদের যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গবেষণাগার স্থাপন করা হবে। এর ফলে প্রাথমিক শিক্ষা থেকেই শিশুরা প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিতি লাভ করবে এবং ভবিষ্যতে তারা নতুন নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কারে আগ্রহ দেখাবে।
দেশীয় ক্ষেত্র, বিশ্ববাজার ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের দক্ষতার প্রতি লক্ষ্য রেখে চাহিদাভিত্তিক দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে এবং জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে প্রয়োজন শিক্ষার সব স্তরে আইসিটি কারিকুলাম নিয়মিত হালনাগাদকরণ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজে উপযুক্ত আইসিটি অবকাঠামোসহ বাজারচাহিদা-ভিত্তিক আন্ডার গ্র্যাজুয়েট আইসিটি প্রেগ্রাম চালুকরণ নিশ্চিতেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নীতিমালায়। এতে নতুন গ্র্যাজুয়েট বা ইন্টার্নদের শিল্পপ্রতিষ্ঠান-উপযোগী করে গড়ে তোলার পাশাপাশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিকাশে আইসিটির শিক্ষার্থী/গ্র্যাজুয়েটদের আইসিটি শিল্পের সঙ্গে সেতুবন্ধ স্থাপনে উৎসাহ প্রদানের জন্য কার্যক্রম গ্রহণের পাশাপাশি এ লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ইনকিউবেটর স্থাপন ও আইসিটি শিল্পে তাদের জনবলের অন্তত পাঁচ শতাংশ ইন্টার্নশিপের জন্য উম্মুক্ত করা হবে।
এছাড়া ল্যাবের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতে মাঠপর্যায়ে বিদ্যমান আইসিটি ল্যাবগুলোকে বহুমুখী ল্যাবে রূপান্তর করা হবে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরিতে প্রযুক্তির দক্ষতা অত্যন্ত গুরুত্বপূণ। তবে শুধু উদ্যোগ গ্রহণ বা ল্যাব স্থাপন করলেই এটি সম্পূর্ণ হবে না। এর জন্য দক্ষ মনিটরিং ও সুষ্ঠ ব্যবহারও অত্যন্ত গুরুত্ত¡। তবে প্রযুক্তিখাতে উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা-২০১৮ সুষ্ঠভাবে বাস্তবায়ন হলে প্রযুক্তিতে দক্ষ ভ‚মিকা রাখার পাশাপাশি কর্মসংস্থানেও ভ‚মিকা রাখবে।