জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটকের বিরুদ্ধে এবার শিশুদের তথ্য সংগ্রহের অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে। চীনা অ্যাপটি কীভাবে শিশুদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও ব্যবহার করে, সে বিষয়ে তদন্ত করছে যুক্তরাজ্যের ইনফরমেশন কমিশনারস অফিস (আইসিও)। খবর ডিজিটাল ট্রেন্ডস।
২ জুলাই পার্লামেন্টে শুনানিতে আইসিওর প্রধান এলিজাবেথ ডানহাম জানান, টিকটক ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘জেনারেল ডাটা প্রটেকশন আইন’ লঙ্ঘন করছে কিনা, তা যাচাই করতে তদন্ত শুরু হয়েছে। এ আইনের আওতায় কোনো প্রযুক্তি কোম্পানিকে অবশ্যই শিশুদের তথ্যের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
টিকটকে শিশুদের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তাঝুঁকি সম্পর্কে এলিজাবেথ ডানহাম বলেন, এ ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপের মেসেজিং সিস্টেমটি সম্পূর্ণ উন্মুক্ত। ফলে এ ফিচারটির মাধ্যমে প্রাপ্তবয়স্করা ব্যবহারকারী শিশুর সঙ্গে সহজেই যোগাযোগ করতে পারে। এতে ওই শিশুর অভিভাবকের সম্মতির প্রয়োজন পড়ে না।
ডানহাম বলেন, আমরা টিকটকে শিশুদের জন্য ট্রান্সপারেন্সি টুলের দিকে নজর দিচ্ছি। আমরা দেখছি টিকটকের মেসেজিং ফিচারটি, যেটি সম্পূর্ণ উন্মুক্ত, সেটিতে শিশুরা কোন ধরনের ভিডিও অনলাইন থেকে সংগ্রহ ও শেয়ার করছে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) শিশুদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের দায়ে গত ফেব্রুয়ারিতে টিকটককে ৫৭ লাখ ডলার জরিমানা করে। শিশু সুরক্ষা আইনে এটিই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ দণ্ড।
এফটিসি জানায়, টিকটক ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের বিভিন্ন ফিচার ব্যবহারের ক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতি আদায়ের বাধ্যবাধকতা প্রতিপালনে ব্যর্থ হয়েছে।
এদিকে গুগলের মালিকানাধীন ইউটিউবও শিশুদের নিরাপত্তাবিধি প্রতিপালনে অ্যালগরিদমে পরিবর্তন আনার কথা চিন্তা করছে। কারণ এফটিসি এরই মধ্যে ইউটিউবের ব্যাপারেও তদন্ত শুরু করেছে।
২০১৫ সালে এ-সংক্রান্ত একটি অভিযোগ আমলে নিয়ে এফটিসির তদন্ত চলছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, শিশুদের জন্য ভিডিও রিকমেন্ডেশন ও কিউতে অনুপযুক্ত ভিডিও প্রদর্শন বন্ধের ক্ষেত্রে ইউটিউবের অ্যালগরিদম অকার্যকর। পাশাপাশি ইউটিউব শিশুদের তথ্য সংগ্রহ করছে কিনা, সেটিও তদন্ত করে দেখছে এফটিসি।
সম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ইউটিউবের স্বয়ংক্রিয় রিকমেন্ডেশন ব্যবস্থায় যেসব ভিডিও আসে, সেগুলো আপাত নির্দোষ মনে হলেও অনেক ক্ষেত্রে শিশু যৌন নির্যাতন-সংশ্লিষ্ট হয়ে থাকে।