ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, প্রযুক্তি দিয়ে সংগঠিত অপরাধ প্রযুক্তি দিয়েই মোকাবেলা করতে হবে। প্রযুক্তি বন্ধ করে দিয়ে নয়। ইন্টারনেট হচ্ছে জ্ঞান ভান্ডার, আগামী দিনের প্রযুক্তির অভাবনীয় বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শিশুদেরকে উপযোগী করে গড়ে তুলতে হলে ইন্টারনেট থেকে শিশুদের সরানো যাবে না বরং শিশুদের জন্য ইন্টারনেট নিরাপদ রাখতে হবে। ইন্টারনেট নিরাপদ রাখতে বাংলাদেশ প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জন করছে। পাশাপাশি শিশুদের জন্য ইন্টারনেট নিরপদ রাখতে প্যারেন্টাল গাইডেন্স ব্যবস্থা প্রবর্তনের উদ্যোগ নেয়া হবে।
মন্ত্রী আজ বুধবার ঢাকায় সিরডাপ মিলনায়তনে আইন ও সালিশ কেন্দ্র আয়োজিত ইন্টারনেটে শিশু যৌন নির্যাতন: ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীদের অধিকার ও কর্তব্য শীর্ষক অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশে ইন্টারনেট প্রসারের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ইন্টারনেটের প্রসার ঘটেছে গত এক দশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারির সংখ্যা ছিল মাত্র ৮ লাখ। গত দশ বছরে তা সাড়ে নয় কোটি অতিক্রম করেছে। দেশে তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশে অভাবনীয় রূপান্তর হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা ডিজিটাল হবো নিরাপদও থাকবো।
তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রসংগ তুলে ধরে বলেন, রাষ্ট্র, সমাজ, পরিবার বা সন্তানের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটা খুব প্রয়োজন ছিল। এটা এখন প্রমাণিত হয়েছে। তিনি ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা এবং পর্নোগ্রাফি আইনটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংযুক্তির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, যারা ইন্টারনেট সেবা দিবে তাদেরকে প্রচলিত আইনের আওতায় না আনলে নাগরিকদের নিরাপদ রাখা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার বড় উদ্বেগের কারণ। তবে সরকারের সফল প্রচেষ্টায় ফেইস বুক কর্তৃপক্ষ আমাদের সংস্কৃতি ও কৃষ্টি এবং প্রচলিত আইন মেনে কন্টেন্ট প্রকাশে সম্মত হয়েছে। ভবিষ্যতে ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনুরূপ ভূমিকা রাখতে সরকারে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ২২ হাজার পর্নো সাইট বন্ধ করাসহ নির্বাচনকালিন সময়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য রাষ্ট্রীয় স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিদের নামে ব্যবহৃত ৭শতাধিক ফেক আইডি বন্ধের প্রসংগ তুলে ধরে বলেন, নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, দেশের দুর্গম অঞ্চলসহ প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে করা হয়েছে। সেজন্য ডিজিটাল অপরাধ নিয়ন্ত্রণে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার প্রয়োজনে আইনশৃঙ্গলা রক্ষাকারি বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির প্রয়োজনীয়তার ওপর মন্ত্রী গুরুত্বারোপ করেন।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক শিপা হাফিজার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি আলিমুজ্জামান, সাইবার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর সাইমুম রেজা তালুকদার, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী এডভোকেট রেজাউল করিম সিদ্দিকী, টিডিএইচ নেদারল্যান্ডের কান্ট্রি ডাইরেক্ট মাহমুদুল কবির এবং বিটিআরসি কমিশনার ইঞ্জিনিয়ার মো: মহিউদ্দিন আহমেদ বক্তৃতা করেন।