আপনার ফোনে কি গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট স্মার্টফোন অ্যাপ ইনস্টল করা আছে? কিংবা আপনি পশ্চিমা কোন দেশে আছেন এবং গুগলের হোম স্মার্ট স্পিকার ব্যবহার করছেন? তাহলে নিশ্চিতভাবে জেনে নিন, গুগল কর্মীরা প্রতিষ্ঠানটির হোম স্মার্ট স্পিকার এবং গুগল
অ্যাসিস্ট্যান্ট স্মার্টফোন অ্যাপের মাধ্যমে আপনার সব কথাই রেকর্ড করেছে, কিছু কিছু রেকর্ড তারা শুনেছেও। অবিশ্বাস্য হলেএ তা সত্যি এবং গুগল তা স্বীকারও করে নিয়েছে যে, তারা আপনার ব্যক্তিগত কথাবার্তা শোনে!
ভয়ঙ্কর এই খবরটি প্রথম প্রথম বেলজিয়ামের পাবলিক ব্রডকাস্টার ভিআরটি প্রকাশ করে। তারা ডাচ ভাষায় রেকর্ড হওয়া কিছু অডিও প্রকাশ করে। তারপরেই গুগল স্বীকার করে নেয় যে, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স-অ্যাসিস্ট্যান্সে রেকর্ড হওয়া কণ্ঠস্বর তারা শোনে থাকে। ভিআরটি তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে যে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সচেতন ভাবে রেকর্ড করা কণ্ঠস্বর শোনে গুগল। কিন্তু তারা এমনও কথাবার্তা শোনে যা কখনও রেকর্ডই করা হয়নি। কিছু ক্ষেত্রে এই সব কথাবার্তার মধ্যে খুব সংবেদনশীল তথ্যও থাকে।
গুগলের প্রোডাক্ট ম্যানেজার অফ সার্চ ডেভিড মনসেস, কোম্পানির একটি ব্লগে স্বীকার করে নিয়েছেন, তাদের ভাষা বিশেষজ্ঞরা সারা বিশ্বে রেকর্ড করা এই সব কথা শোনেন। ভাষা প্রযুক্তি উন্নয়নের জন্য এটা করা হয় বলে দাবি করেন ডেভিড।
গুগলের দাবি, যে সমস্ত অডিও রেকর্ড হয় তার মাত্র ০.২ শতাংশই শোনা হয়। এই অডিও ক্লিপিংগুলি নাকি তারা রেকর্ড করে বক্তার পরিচয় ধরে না রেখে। ব্যবহারকারিদের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করে গুগল বলছে, ফোন ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য গোপনই থাকছে সেই সঙ্গে আরও দাবি করা হয়েছে, যে সামনের কথাই শুধু রেকর্ড হয়, পিছনের কথা বা শব্দ তাদের ভাষা বিশেষজ্ঞরা শোনেন না।
ভিআরটি বলছে, ফোন ব্যবহারকারিদের নাম, বাড়ির ঠিকানা, পরিবারে অন্যান্য সদস্যদের নামের মতো ব্যক্তিগত তথ্যও থাকে গুগলের কাছে। ফলে কোন কথাটি কে বলছে সে তথ্য গুগলের কাছে থাকছেই।
গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট চালু করতে গেলে বলতে হয় ‘ওকে গুগল’, অথবা বোতাম টিপতে হয়। যদিও সংখ্যায় খুব কম, তাও গুগল স্বীকার করেছে অনেক ক্ষেত্রে ‘ওকে গুগল’ না বলা সত্বেও শব্দ রেকর্ড শুরু হয়ে যায়। গুগলের দাবি হচ্ছে, অনেক সময় প্রচুর নয়েজ বা কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে অটো রেকর্ড চালু হয়ে যায়।
চলতি বছরের শুরুর দিকে অ্যামাজন স্বীকার করে ‘খুব কম পরিমান নমুনা’ তারা শোনে। অ্যামাজনের অ্যালেক্সা সিস্টেম ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট পরিসেবা দেয়। অ্যামাজন স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিল কারণ মার্কিন সংস্থা ব্লুমবার্গ জানায়, বিশ্ব জুড়ে হাজার হাজার অ্যামাজনের কর্মী অ্যালেক্সা ব্যবহারকারিদের বাড়ির ও অফিসের কথাবার্তা শোনে। তারপরেই অ্যামাজনকে এই স্বীকারোক্তি দিতে হয়।