সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন সরঞ্জামের বিক্রি ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে ইলেকট্রনিকস উৎপাদন ও ডিজাইন সাপ্লাই চেইন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেমি (এসইএমআই)। সেমির হিসাবে, চলতি বছর সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন সরঞ্জামের বিক্রি ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ কমে ৫২ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে নেমে যাবে। যেখানে ২০১৮ সালে বিক্রি ছিল ৬৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। খবর টেলিকম লিড।
চলমান বাণিজ্য বিরোধ এবং ভূরাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট অনিশ্চয়তার কারণে প্রযুক্তি বাজারের সব খাতেই কম-বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে ২০২০ সাল নাগাদ এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছে সেমি। সেমির হিসাবে, চলতি বছর কমলেও ২০২০ সালে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন সরঞ্জামের বিক্রি ১১ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ৫৮ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে। যদিও তা ২০১৮ সালের তুলনায় বেশ কম।
সেমিকন্ডাক্টর কাঁচামালের মধ্যে ওয়েফার প্রক্রিয়াকরণ সরঞ্জামের বিক্রি ১৯ দশমিক ১ শতাংশ কমে হবে ৪২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। সেমিকন্ডাক্টর ফ্যাব্রিকেশন প্লান্ট (ফ্যাব) ও ওয়েফার প্রক্রিয়াকরণে ব্যবহূত সরঞ্জাম এবং মাস্ক ও বিশেষ চশমার বিক্রি ৪ দশমিক ২ শতাংশ কমে ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে যাবে।
এছাড়া সংযোজন ও প্যাকেজিং সরঞ্জামের বিক্রিও ২২ দশমিক ৬ শতাংশ কমে ৩ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার হবে। পাশাপাশি সেমিকন্ডাক্টর পরীক্ষার সরঞ্জামের বিক্রি ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ কমে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে নামবে।
এ পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারে তাইওয়ান। সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন সরঞ্জামের আন্তর্জাতিক বাজারে দক্ষিণ কোরিয়াকে হটিয়ে দেশটি শীর্ষস্থান দখল করতে পারে। সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন সরঞ্জামের বাজারে চলতি বছর তাইওয়ানের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ২১ দশমিক ১ শতাংশ।
অবশ্য উত্তর আমেরিকারও প্রবৃদ্ধি ঘটবে। তাদের বিক্রি বাড়তে পারে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। পাশাপাশি চীন টানা দ্বিতীয় বছরের মতো দ্বিতীয় শীর্ষস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হবে। মূলধন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে দক্ষিণ কোরিয়া প্রথম থেকে তৃতীয় অবস্থানে নেমে যাবে।
এদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন এক মীমাংসিত ঘটনা নিয়ে বাণিজ্য বিরোধে জড়িয়েছে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। ৪ জুলাই থেকে স্মার্টফোন ও সেমিকন্ডাক্টর তৈরিতে ব্যবহূত মূল্যবান কাঁচামাল দক্ষিণ কোরিয়ায় রফতানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে দেশটি।
স্মার্টফোন ও টেলিভিশনের ডিসপ্লে তৈরিতে ব্যবহূত ফ্লুরিনেটেড পলিমাইড ও সেমিকন্ডাক্টর তৈরিতে ব্যবহূত বিশুদ্ধ হাইড্রোজেন ফ্লুরাইড গ্যাস (ইচিং গ্যাস) ও রেসিস্ট দক্ষিণ কোরিয়ায় রফতানিতে কড়াকড়ি আরোপ করেছে জাপান।
বিশ্ববাজারে প্রযুক্তিপণ্য প্রস্তুতে প্রয়োজনীয় ফ্লুরিনেটেড পলিমাইড ও রেসিস্টের ৯০ শতাংশ এবং ইচিং গ্যাসের প্রায় ৭০ শতাংশই উৎপাদন করে জাপান। এসব কাঁচামালের জন্য জাপানকে বাদ দিয়ে হঠাৎ করে বিকল্প উৎপাদক খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন হবে।