ব্যবহারকারীদের স্বার্থে মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির ব্যান্ডউইথ হ্রাসের বিষয়টি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। তবে পাওনা আদায়ে শাস্তির ধরণ পাল্টিয়েছে সংস্থাটি। প্রয়োজনে পাওনা আদায়ে পাওনা আদায়ে প্রশাসক বসানোরও নিয়মের কথাও জানানো হয়েছে। বুধবার বিটিআরসি’র প্রধান সম্মেলনকেন্দ্রে এ ঘোষণা দেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক।
গ্রামীণফোন ও রবি’র ব্যান্ডউইথ ফিরিয়ে দিয়ে তাদেরকে নতুন করে আর কোনো এনওসি (নো অবলিগেশন সার্টিফিকেট) দেয়া বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিলেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক।
বুধবার (১৭ জুলাই) বিটিআরসি’র প্রধান সম্মেলনকেন্দ্রে বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক এই ঘোষণার পাশাপাশি পাওনা আদায়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে কথা বলেন। এসময় বিটিআরসি কমিশনার রেজাউল কাদের, লিগ্যাল ও লাইসেন্স বিভাগের মহাপরিচালক শাহিদুজ্জামান প্রমুখ উপস্থি ছিলেন।
জহুরুল হক বলেন, ব্যান্ডউইথ কমানোয় জনদুর্ভোগ হয় বিবেচনায় গতকাল প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যান্ডউইথ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত আজ থেকে প্রত্যাহার করা হলো।
তবে এটি জনগেণের টাকা তাই এটি মাফ করার কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বেলেন, আমাদের আইনে আরবিট্রেশনের কোনো বিধান নেই। কেননা আমাদের আইনের ৪২ ধারায় এক্ষেত্রে আবার কোর্টে যাওয়ার বিধান রয়েছে।
জহুরুল হক বলেন, এনওসি বন্ধেও যদি কাজ না হয় তবে প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রশাসক বসানোরও নিয়ম রয়েছে। যেভাবেই হোক পাওনা টাকা আদায় করে সরকারের রাজস্ব খাতকে সমৃদ্ধ করা হবে।
এদিকে, মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ পরিদর্শনে যান প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়েক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। মন্ত্রী, বিটিআরসির চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে অপারেটর দু’টির ব্যান্ডউইথ থেকে ব্লক তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
ওই ঠৈকের একদিন পরেই বিটিআরসি সংসাদ সম্মেলন করে ব্যান্ডউইথ থেকে ব্লক তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। তবে বকেয়া আদায় না হওয়া পর্যন্ত অপারেটর দু’টিকে কোনও এনওসি দেওয়া হবে না বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। পাওনা আদায়ে বিটিআরসি আরও কৌশল অবলম্বন করবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, বকেয়া অর্থ পরিশোধ না করায় গত ৪ জুলাই গ্রামীণফোন ও রবির ব্যান্ডইউথ কমিয়ে দেয় বিটিআরসি। গ্রামীণফোনের ৩০ ভাগ এবং রবির ১৫ ভাগ ব্যান্ডউইথ কমিয়ে দিতে ওই দিনই কয়েকটি আইআইজিকে (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) নির্দেশনা পাঠায় বিটিআরসি।
এই নির্দেশনা কার্যকরের পর থেকে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা বড় ধরনের সমস্যায় পড়েন। বিভিন্ন ধরনের যোগাযোগ অ্যাপ ব্যবহারে সমস্যা হচ্ছিল গ্রাহকদের। বাফারিং ছাড়া ইউটিউব দেখা যাচ্ছিল না। অন্যদিকে কল ড্রপের সংখ্যাও বেড়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় বইতে থাকে সমালোচনার ঝড়।