সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছিল। ফেসবুকের দাবি, এসব ভুয়া অ্যাকাউন্ট পরিচালনাকারীদের সৌদি আরবের সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। যে কারণে সৌদি আরবের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি অঞ্চল থেকে ২১৭টি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, ১৪৪টি ফেসবুক পেজ, পাঁচটি ফেসবুক গ্রুপ এবং ৩১টি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা ও প্লাটফর্ম থেকে মুছে দেয়া হয়েছে। খবর এএফপি।
সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুকের সাইবার নিরাপত্তা পলিসি বিভাগের প্রধান নাথানিয়েল গ্লাইচার বলেন, আমাদের পর্যালোচনায় দেখা গেছে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার নাগরিকদের লক্ষ্য করে আরবি ভাষায় নানা অপপ্রচার চালাচ্ছিলেন সৌদি সরকারসংশ্লিষ্টরা, যা ফেসবুকের ব্যবসায় নীতিবহির্ভূত। যে কারণে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে ‘সমন্বিত অমানবিক আচরণের’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
ফেসবুকের দাবি, তাদের প্লাটফর্ম থেকে বন্ধ করে দেয়া অ্যাকাউন্ট ও পেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেটররা সাধারণত আরবি ভাষায় আঞ্চলিক সংবাদ এবং রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে নানা পোস্ট দিতেন। প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকেও ইয়েমেন দ্বন্দ্ব নিয়ে নানা বিতর্কিত পোস্ট দিতে দেখা গেছে। শুধু বিতর্কিত ফেসবুক পোস্ট করাই নয়, যেসব অ্যাকাউন্ট ও পেজ বন্ধ করা হয়েছে, সেগুলো থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেশী দেশ ইরান, কাতার ও তুরস্ককে লক্ষ্য করে নানা সমালোচনামূলক মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছিল।
বিবৃতিতে ফেসবুক জানিয়েছে, সৌদি আরব থেকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট ও পেজগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল, যা দেখে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার দেশগুলো থেকে চালানো অ্যাকাউন্ট বা স্থানীয় গণমাধ্যমের মতো মনে হবে। সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের পাশাপাশি সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসর থেকে পরিচালিত বেশকিছু ভুয়া অ্যাকাউন্ট ও পেজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে খোলা এসব অ্যাকাউন্ট থেকেও ভুয়া তথ্য ছড়ানো হচ্ছিল। তবে এসব অ্যাকাউন্ট বা পেজের সঙ্গে ওই অঞ্চলের সরকারের সংশ্লিষ্টতা মিলেনি।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষের দাবি, ভুয়া অ্যাকাউন্ট ও পেজের পেছনের মানুষগুলো খুব কৌশলে নিজেদের পরিচয় গোপন করার চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু আমাদের পর্যালোচনায় তাদের কৌশল ধরা পড়ে যায় এবং সৌদি আরব সরকারের সঙ্গে এসব অ্যাকাউন্টে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়। বেশকিছু অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয়ে আরবিতে ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট করার হচ্ছিল। এর মধ্যে কয়েকটি অ্যাকাউন্ট থেকে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও তার অর্থনৈতিক পরিকল্পনা, সৌদি সেনাবাহিনীর সাফল্য প্রচার করা হতো। এসব ফেসবুক পেজে উল্লেখযোগ্য অনুসারী ছিল। ভুয়া এসব পেজের ভিউ বাড়াতে প্রায় ১ লাখ ৮ হাজার ডলার বিজ্ঞাপনে ব্যয় করা হয়েছে।