ইউরোপজুড়ে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহারকারীদের সার্চ ইঞ্জিন বেছে নেয়ার সুযোগ দেবে গুগল। অর্থাৎ অঞ্চলটির অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে গুগল ছাড়াও অন্য প্রতিষ্ঠানের সার্চ সেবা ব্যবহার করতে পারবেন। গুগলের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য সুযোগ বলা হলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কঠোর নীতিমালা ও জরিমানার কারণে বাধ্য হয়ে এ পরিবর্তন আনছে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর রয়টার্স।
বিশ্বব্যাপী অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে গুগল ব্যবহার হয়ে আসছে। কিন্তু অ্যান্ড্রয়েডের আধিপত্যের সুবিধা নিয়ে সার্চ সেবায় নিজেদের পণ্যকে এগিয়ে রাখার মাধ্যমে অনায্য সুবিধা নিচ্ছে গুগল। ইউরোপে এমন অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। গত বছর এমন একটি অ্যান্টি-ট্রাস্ট মামলায় প্রতিষ্ঠানটিকে ৪৮১ কোটি ডলার জরিমানা করা হয়।
গুগলের এক ব্লগ পোস্টে বলা হয়েছে, ২০২০ সাল থেকে ইউরোপিয়ান অর্থনৈতিক অঞ্চলে যেসব অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট ডিভাইস সরবরাহ করা হবে, সেগুলোয় সার্চ ইঞ্জিন বেছে নেয়ার অপশন থাকবে। যেখানে গুগলসহ মোট চারটি সার্চ ইঞ্জিন দেখানো হবে। সেখান থেকে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহারকারী পছন্দমতো ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন সেট করে নিতে পারবেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে অ্যান্ড্রয়েডচালিত ডিভাইস নির্মাতাদের ওপর অবৈধ কিছু শর্ত আরোপ করে রেখেছে গুগল। এ কারণে বেশকিছু প্রি-ইনস্টল সফটওয়্যারসহ অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস সরবরাহে বাধ্য হচ্ছেন নির্মাতারা। এসব সফটওয়্যার কাজে লাগিয়ে অনলাইন কেনাকাটায় নিজেদের শপিং সেবাগুলোকে এগিয়ে রাখছে প্রতিষ্ঠানটি। গ্রাহকরা নির্দিষ্ট কোনো একটি পণ্যের অনুসন্ধান করলে গুগলের সার্চ ইঞ্জিন আগে নিজেদের শপিং সেবা প্রদর্শন করে, যা ইউরোপের বাজার প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিপন্থী এবং এ ধরনের আচরণের ফলে গ্রাহকদের বিভিন্ন শপিং সাইট থেকে পণ্য পছন্দের পরিসর ছোট হয়ে এসেছে।
বৈশ্বিক মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম খাতে অ্যান্ড্রয়েড দিয়ে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে আছে গুগল। বিশ্বের ৮০ শতাংশের বেশি স্মার্টফোন অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলছে। এ অপারেটিং সিস্টেম অ্যালফাবেট ইনকরপোরেশন নিয়ন্ত্রিত গুগলের রাজস্ব আয়ের অন্যতম উৎসে পরিণত হয়েছে। গ্রাহকরা এখন মোবাইল ডিভাইস দিয়ে অনলাইন কেনাকাটা করছেন বেশি।
বিশ্লেষকদের দাবি, ইউরোপে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহারকারীদের গুগল যে চারটি সার্চ ইঞ্জিন বেছে নেয়ার সুযোগ দেবে, তার একটি নিজেদেরই। বাকি তিনটি থেকে যে প্রতিষ্ঠান বেশি অর্থ দেবে, তাদের সুযোগ দেয়া হবে। তবে গুগল ছাড়া বাকি যে তিনটি সার্চ ইঞ্জিন বেছে নেয়ার সুযোগ থাকবে, সেগুলো ভালো না হলে অঞ্চলটির অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহারকারীদেরই পরাজয় হবে।