ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তে ডিজিটাল শিল্প বিপ্লব উপযোগী শিক্ষা অপরিহার্য।
তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম অত্যন্ত মেধাবী। উপয্ক্তু শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে পরিকল্পিত ভাবে এগুতে পারলে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে নেতৃত্ব দেবে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু জাতিরাষ্ট্র তৈরি করে যে সুযোগ সৃষ্টি করেছেন তা কাজে লাগাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ দেশের সকল শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসতে হবে।
মন্ত্রী আজ ঢাকায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে ঢাকসু আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্নই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রেরণা শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে তাঁর বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড.মো: আখতারুজ্জামান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্ণর আবু হাসান মো: রাজি হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি বিভাগের অধ্যাপক ড. মহসিন আল সাকিব, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো: রাশেদুল হাসান, ডিজিটাল নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ সুফি ফারুক ইবনে আবু বকর, বাংলাদেশ ছাত্র লীগের আইটি বিষয়ক সম্পাদক আশিকুর রহমান রূপক এবং ঢাকসু‘র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আরিফ ইবনে আরিফ বক্তৃতা করেন।
মন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচিকে পৃথিবীতে একটি অনুকরণীয় কর্মসূচি উল্লেখ করে বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যত প্রযুক্তি আসবে তা দেশের মানুষ, জীবন জীবিকা চিন্তা করেই গ্রহণ করা হবে। জেনে বুঝে ব্যবহার করব। তিনি বলেন, আমাদের বড় সম্পদের নাম মানুষ। সুতরাং মানুষের স্বার্থে, দেশের প্রয়োজনে আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করব। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ড্রাইভার বিহীন গাড়ীর জন্য যে প্রযুক্তি জাপানের জন্য কল্যাণের আমাদের জন্য তা মোটেও কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। বিপুল সংখ্যক ড্রাইভারের কর্মসংস্থান আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধুন স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ ছিলো ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত এবং শোষণ ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ। এই রাষ্ট্রের জন্মের প্রথমদিন থেকে তিনি সেই উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ২৫ বিঘা জমির খাজনা মওকুফ, ১০০ বিঘা জমির সিলিং স্থাপন করেন। জাতির পিতার নেতৃত্বে ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন্স ইউনিয়নের সদস্যপদ অর্জন এবং ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূকেন্দ্র স্থাপন, প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয় করণসহ তাঁর গৃহীত কর্মসূচি ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশের অন্যতম ভিত্তি বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি সম্বলিত নির্বাচনী ইশতেহারকে শ্রেষ্ঠ দলীল আখ্যায়িত করে বলেন, বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্নের ভিত্তিতে বাংলাদেশ তৈরি করে গেছেন আমরা সে স্বপ্ন ধারন করতে পেরেছি। ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কম্পিউটারের ওপর থেকে ভ্যাট – ট্যাক্স প্রত্যাহার করে কম্পিউটার সাধারণের নাগালে পৌঁছানোর সুযোগ সৃষ্টি করেন। ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের এ পর্যন্ত বাংলাদেশ কৃষি, মৎস্য কিংবা জিডিপি‘র অভাবনীয় সফলতাই অর্জিত হয়নি বাংলাদেশ সারা দুনিয়ায় ডিজিটাল বিপ্লবের পথ দেখিয়েছে। বাংলাদেশ কেবল ৪জি যুগেই প্রবেশ করেনি আমরা ৫জির পরীক্ষামূলক কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি, ২০২৩ সালের মধ্যে ৫জি চালু করা হবে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।