চুলের বিরক্তিকর কিছু সমস্যার মধ্যে অন্যতম হলো উকুন। উকুন পরিষ্কার, অপরিষ্কার, লম্বা, ছোট-যেকোনো চুলেই হতে পারে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আর নিয়মিত গোসল না করলে উকুনের সমস্যা বড়ে যায়। নারী-পুরুষ উভয়েই এ সমস্যায় পড়েন।
বড়দের পাশাপাশি বাচ্চাদের চুলেও উকুন দেখা যায়। উকুন খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া উকুন ছোঁয়াচে। একজনের মাথায় উকুন হলে তা পাশাপাশি অন্যের শরীরের ছড়িয়ে পড়তে পারে। অন্যের ব্যবহৃত চুলের ব্রাশ বা চিরুণি, তোয়ালে, টুপি ইত্যাদি ব্যবহারের কারণে উকুন ছড়াতে পারে।
তবে পরজীবীর বিস্তার রোধ করতে কাজ করে যাওয়া লুসফ্রি নরজ নামের একটি সংস্থা জানাচ্ছে আরো একটি কারণে মাথায় বা চুলে উকুনের পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। সংস্থাটির গবেষক অ্যান লুইস লাইকফস জানান, এক জনের মাথা থেকে আরেক জনের মাথায় উকুন ছড়িয়ে পরে। তবে মানুষ যখন একে অপরকে আলিঙ্গন করে, সেলফি তুলে, এক সঙ্গে কম্পিউটার ব্যবহার করে, এক সঙ্গে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে তখন উকুন এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির শরীরে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
ওই গবেষক জানান, বর্তমানে মানুষ সেলফি (মোবাইল ফোনের সামনের ক্যামেরা ব্যবহার করে ছবি তুলা) তুলার প্রতি আসক্ত। এতে করে দু’জন বা কয়েকজন মিলে এক সঙ্গে ছবি তুলে। এর ফলে এক জনের মাথায় থাকা উকুন আরেক জনের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। তিনি আরো জানান, ছেলে-মেয়েরা যখন এক সঙ্গে বসে গেম খেলে তখন উকুন এক জনের মাথা থেকে আরেক জনের মাথায় ঝাঁপিয়ে পড়ে।
অ্যান লুইস লাইকফস জানান, ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের মাথায় সবচেয়ে বেশি উকুন থাকে। তিনি বলেন, ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের মাথায় লম্বা চুল থাকে। এই জন্য উকুন অতি সহজে লুকিয়ে থাকতে পারে। সেই সঙ্গে আশে পাশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এর আগে উকুনের দ্রুত বৃদ্ধির ব্যবহার নিয়ে গবেষণা করে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল। গবেষণাপত্রটি উপস্থাপন করা হয় ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন অব ডার্মাটলজিস্টসের বার্ষিক সম্মেলন। হাসপাতালটির এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের চিকিৎসক টেস ম্যাকফারসন বলেন, স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট ফোন ব্যবহার মাথার উকুন হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
মাথার উকুন দুই থেকে তিন মি.মি বড় হয়। এগুলো মাথার ত্বক থেকে রক্ত চুষে নেয়। এদরে কামড়ে চুলকানি হতে পারে। এদিকে একটি স্ত্রী উকুন দিনে আটটি ডিম দেয়। এর মানে এই যে, উকুনের দ্রুত বংশবৃদ্ধি হয়। তাই গবেষকরা উকুন থেকে সাবধান হতে বিশ্বের মানুষদের আহ্বান জানান।
সূত্র: স্পুটনিক, টেলিগ্রাফ।