কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শোনার দৃশ্য একেবারের পরিচিত। তবে বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তিও উন্নত হচ্ছে। বর্তমানে হেডফোনের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো- এটি পরলেই বাইরের কোনো শব্দ আর প্রায় কানেই আসে না। ফলে অনেক অদুর্ঘটনার কারণ হয় হেডফোন। এছাড়া অনেকক্ষণ হেডফোন পরে থাকায় কানে ব্যথাসহ অনেক ধরনের সমস্যা হয়। দীর্ঘ সময় হেডফোন লাগিয়ে রাখার দরুন কানের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিও হচ্ছে, ধীরে ধীরে শ্রবণ ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে।
তরঙ্গের মাধ্যমে শব্দ এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় প্রবাহিত হয়। আপনার ডাক আপনার পাশের মানুষ শুনতে পায় কারণ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল। এটাই চাঁদে হলে পাশে বিস্ফোরণ হলেও আপনি শুনতে পাবেন না, কারণ শব্দতরঙ্গ বহনকারী কোনো মাধ্যম সেখানে নেই। এভাবেই এবার আপনি গান শুনবেন কানের মধ্যে দিয়ে নয়, বরং কানের পাশের হাড়ের মাধ্যমে। ২০১৬ থেকেই এ রকম হেডফোন তৈরি করে চলেছে আফটারশক্জ।
এগুলি দেখতে ব্লুটুথ হেডফোনের মতোই। কিন্তু, কানে পরলেই বুঝতে পারবেন বাকি সমস্ত হেডফোনের মতো কানের মধ্যে এই হেডফোন ঢুকে যায় না। বরং, কানের ঠিক সামনেই এঁটে লেগে থাকে এই হেডফোন।
সাধারণ হেডফোনের থেকে আওয়াজ কিছুটা আলাদা, ২০ কিলোহার্জ থেকে ২০০০০ কিলোহার্জ পর্যন্ত এর রেঞ্জ, যা কিনা আমাদের সর্বাধিক শ্রবণ ক্ষমতার সমান। এমনিতে ভাল হেডফোনের ক্ষেত্রে এই রেঞ্জ শুরু হয় ৪ কিলোহার্জ থেকে। এই হেডফোনে রয়েছে ওয়েদার শিল্ড, ফলে ধুলো-বৃষ্টি কোনো কিছুতেই এই হেডফোন ব্যবহারে সমস্যা নেই।
ঘামতে ঘামতে জিম হোক কিংবা রাস্তায় চলতে চলতেও এটি ব্যবহার করতে পারবেন। এমনকি, গাড়ি চালাতে চালাতে ব্যবহার করলেও আইন এবং সুরক্ষার দিক থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ, কারণ এতে আপনার কান থাকে একদম খোলা। বাইরের সমস্ত আওয়াজ শুনতে কোনো বাধা থাকবে না।
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, জোরে গান শোনার ফলে মানুষের শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, যা আফটারশক্জ এর হেডফোনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। কিন্তু কিছুটা সতর্কতার সঙ্গে এটি ব্যবহার করলে সাধারণ হেডফোনের থেকে এর ক্ষতি অনেকটাই কম। অনেক ক্ষেত্রে শান্ত, চুপচাপ কোনো জায়গায় হেডফোনে গান শুনলে তার আওয়াজ পাশের লোকজন শুনতে পায়। কিন্তু এখানে সেরকম হওয়ার সুযোগ নেই। বর্তমানে ৪টি মডেল বাজারে আছে, দাম ৫০০০ থেকে ১২০০০ টাকা পর্যন্ত।