ইরানের একটি সাইবার হ্যাকিং গ্রুপ অয়েলরিগ। ইরান সরকারের সঙ্গে এ গ্রুপের সুসম্পর্ক রয়েছে বলে অনেকের ধারণা। নিজেরাই হ্যাকিংয়ের শিকার হয়ে সম্প্রতি নতুন করে আলোচনায় এসেছে অয়েলরিগ। মার্কিন ও ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের এক যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অয়েলরিগের হ্যাকিং সিস্টেমে অনেক আগেই ঢুকে পড়েছে রুশ হ্যাকাররা। এরপর এ সিস্টেম ব্যবহার করে বিশ্বের ৩৫টির বেশি দেশে সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের তথ্য হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। হ্যাকিংয়ের ঘটনা এত গোপন ও সুকৌশলে সম্পন্ন করা হয়েছে যে এসবের কিছুই জানত না অয়েলরিগের হ্যাকাররা। এ ঘটনা সাইবার নিরাপত্তা জগতে নতুন করে আলোড়ন তুলেছে। খবর বিবিসি ও ফিন্যান্সিয়াল ট্রিবিউন।
২০১৭ সালে ব্রিটেনের একটি স্বনামধন্য একাডেমিক প্রতিষ্ঠান সাইবার হামলার শিকার হয়। হ্যাক করে প্রতিষ্ঠানটির কম্পিউটার সিস্টেম অচল করার পাশাপাশি বিপুল তথ্য হাতিয়ে নেয় হ্যাকাররা। এ ঘটনায় তদন্তে নামে ব্রিটেনের ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি সেন্টার (এনসিএসসি)। পরে একই রকম আরো কয়েকটি ঘটনা সামনে রেখে তদন্তে যুক্ত হয় মার্কিন গোয়েন্দারাও। প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে রুশ হ্যাকিং গ্রুপ ‘তুরলা’র নাম। ধারণা করা হয়, রাশিয়ার গোয়েন্দাদের সঙ্গে এ হ্যাকিং গ্রুপের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে।
তবে ব্রিটিশ-মার্কিন গোয়েন্দাদের দীর্ঘ দুই বছরের যৌথ অনুসন্ধান আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছে। যৌথ তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানি হ্যাকার গ্রুপ অয়েলরিগের সিস্টেম হ্যাক করে সেটা ব্যবহারের মাধ্যমে অত্যন্ত গোপন ও সুকৌশলে কাজ করত রুশ হ্যাকার দল তুরলা। তাদের এমন সাইবার হামলার শিকার হয়েছে ৩৫টির বেশি দেশের সরকারি-বেসরকারি দপ্তর। এসব দপ্তরের প্রয়োজনীয় ও অতিগুরুত্বপূর্ণ নথি নিজেদের দখলে নিয়েছে রুশ হ্যাকাররা। তুরলার এমন অন্তত ২০টি গোপন অভিযানের প্রমাণ মিলেছে। যার অধিকাংশই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আক্রান্তরা মনে করেছে তাদের গোপন তথ্য ইরানের হাতে চলে গেছে। আদতে তা গেছে রুশ হ্যাকারদের হাতে।