কম্পিউটার ছাড়া এ যুগে অফিস চালানোর কথা অনেকে ভাবতেই পারেন না। কিন্তু এখনকার স্মার্টফোনগুলো একেকটি কম্পিউটারের কোনো অংশে কম নয়। স্মার্টফোন ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারলে কম্পিউটারের কাজ স্মার্টফোনে সেরে ফেলা যায়।
ক্লাউড কম্পিউটিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান সেলসফোর্সের সহপ্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক বেনিওফ এর প্রমাণ রেখেছেন। কয়েক বছর ধরে পুরো ব্যবসায়িক কাজকর্ম আইফোনে সেরে নিচ্ছেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রে সেলসফোর্সের বার্ষিক সম্মেলন ড্রিমফোর্সে অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুকের সঙ্গে একটি চুক্তির ঘোষণা দেন বেনিওফ। অনুষ্ঠানে টিম কুককে বেনিওফ তাঁর আইফোনপ্রীতির কথা বলেন।
বেনিওফ বলেন, আমার আর কোনো কম্পিউটার নেই। আমার কম্পিউটারের কোনো প্রয়োজন পড়ে না। একটি প্রতিষ্ঠান চালানোর জন্য যা প্রয়োজন সবকিছুই একটি স্মার্টফোনে এখন রয়েছে। এর মধ্যে সেলসফোর্সের অ্যাপও রয়েছে।
অনুষ্ঠানে স্মার্টফোনের ব্যবহার প্রসঙ্গে বেনিওফ আরও বলেন, আমার অফিসের বাড়তি কিছু যুক্ত করেছে স্মার্টফোন। যেখানেই থাকি আমার ফোন সঙ্গে থাকে বলে সব সময় কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকা যায়।
স্মার্টফোনের ভক্ত হলেও নিজের একটি কম্পিউটার ভিডিও ব্যাকআপ রাখার জন্য রাখা আছে বলে জানান তিনি। তবে পুরোনো ধাঁচের কম্পিউটারভিত্তিক কাজে তিনি আর ফিরতে চান না বলেও সরাসরি ঘোষণা দেন।
মার্ক বেনিওফের মতে, স্মার্টফোনের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর প্রডাকটিভিটি বা উৎপাদনশীলতা। সবার সঙ্গে সহজে যোগাযোগ ও দ্রুত কাজ সম্পাদনের জন্য স্মার্টফোন ব্যবহার করার পক্ষে তিনি।
স্মার্টফোনে কাজের কথা বললেও বেনিওফ কিন্তু আবার এতে আসক্ত নন। তিনি স্মার্টফোন ব্যবহার থেকে নিয়মিত বিরতি নেন। গত বছরের জুলাই মাসে প্রায় দুই সপ্তাহ তিনি স্মার্টফোন ব্যবহার বন্ধ করে দেন। এ সময় নিরবচ্ছিন্ন ছুটি কাটান তিনি। জরুরি ফোনকল কেবল ল্যান্ডলাইনে গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে টিম কুক বলেন, সেলসফোর্সের সঙ্গে কাজ করতে পেরে তিনি আনন্দিত।
মার্ক বেনিওফ প্রযুক্তি বিশ্বে অনেকটাই ঠোঁটকাটা হিসেবে পরিচিত। সুযোগ পেলেই ফেসবুকের বিরুদ্ধে দু-চার কথা শুনিয়ে দিতে পছন্দ করেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুককে ‘নতুন সিগারেট’ বলে সমালোচনা করেছেন তিনি। এর আগে ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বেনিওফ বলেছেন, ফেসবুক সিগারেটের মতোই শিশুদের আসক্ত করে তুলছে।
গত বছরের নভেম্বরেও ফেসবুকের সমালোচনা করেছিলেন বেনিওফ। তিনি বলেছিলেন, ‘ফেসবুক হলো নতুন সিগারেট। আপনারা জানেন, এটা আসক্তি সৃষ্টি করে। এটা আপনার জন্য ভালো নয়। আপনাকে অনেক মানুষ এটা ব্যবহার করার জন্য টেনে আনবে। কী ঘটবে, আপনি বুঝতেই পারবেন না। তাই সরকারের এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কী ঘটছে, সে বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরি।’
এক টুইটে বেনিওফ আবার বলেছেন, ‘ফেসবুক একধরনের প্রকাশক হিসেবে কাজ করে। তাই ফেসবুক প্ল্যাটফর্মে ছড়ানো অপপ্রচারের জন্য ফেসবুককেই দায় নিতে হবে। ফেসবুক সিগারেটের মতো, যা আসক্তি সৃষ্টিকারী, আমাদের জন্য ক্ষতিকর এবং শিশুরা এর প্রতি ঝুঁকে পড়ছে।’