ডিভাইস বিক্রিতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে যাচ্ছে রাশিয়া সরকার। এ-সংক্রান্ত একটি খসড়া আইনে বলা হয়েছে, রুশ ভূখণ্ডে কোনো ডিভাইস বেচতে হলে অবশ্যই দেশে তৈরি সফটওয়্যার প্রিইনস্টলড থাকতে হবে। স্মার্টফোন, পার্সোনাল কম্পিউটার, স্মার্ট টেলিভিশনসহ অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইসের ক্ষেত্রে এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে। আগামী বছরের জুলাই থেকে নতুন আইন কার্যকর হবে বলে জানা গেছে। খবর বিবিসি।
নতুন আইনের ব্যাপারে রুশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশীয় প্রযুক্তির উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে প্রণোদনা এবং পছন্দের গেজেট কেনার প্রক্রিয়া আরো সহজ করতেই এমন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
তবে প্রিইনস্টলড ওই দেশীয় সফটওয়্যারের মাধ্যমে সরকারি নজরদারি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাশাপাশি বহু কোম্পানি রাশিয়ার বাজার থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিতেও পারে।
আইনের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, দেশে তৈরি সফটওয়্যার প্রিইনস্টলড থাকা বাধ্যতামূলক মানে এই নয় যে, অন্যান্য দেশ রাশিয়ার বাজারে ডিভাইস বেচতে পারবে না। আসল কথা হলো, ডিভাইসে অবশ্যই বাইরের কোনো সফটওয়্যারের রুশ বিকল্পটি ইনস্টল করা থাকতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার খসড়া আইনটি রাশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে পাস হয়েছে। আইনটি কার্যকর করার আগে এর আওতাধীন গেজেটের বিস্তারিত তালিকা দেয়ার পাশাপাশি কোন কোন সফটওয়্যার প্রিইনস্টল থাকতে হবে, সেটিও নির্ধারণ করে দেবে সরকার।
বিলের অন্যতম প্রস্তাবক ও লেখক ওলেগ নিকোলায়েভ ব্যাখ্যা করেছে, এ আইনের ফলে রুশ গ্রাহকরা কীভাবে উপকৃত হবেন। তিনি বলেন, যখন আমরা জটিল কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস কিনি, তখন সেটিতে অনেক অ্যাপ্লিকেশন আগে থেকেই ইনস্টল করা থাকে। যার অধিকাংশই পশ্চিমা। স্বাভাবিকভাবেই গ্রাহক তখন ভাবেন এসব সফটওয়্যারের কোনো দেশীয় বিকল্প নেই। এজন্য আমরা এসবের রুশ বিকল্পও রাখব। তখন গ্রাহক তার পছন্দেরটি বেছে নিতে পারবে।
তবে এ আইন নিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরেই শুরু হয়েছে সমালোচনা। দেশীয় প্রস্তুতকারক ও ডিস্ট্রিবিউটররা এরই মধ্যে তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছে।
কম্পিউটার সরঞ্জাম ও গৃহস্থালিতে ব্যবহূত ইলেকট্রনিক পণ্যের আমদানি ও প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সমিতি রাতেক বলছে, কিছু ডিভাইসে রুশ সফটওয়্যার ইনস্টল করা অসম্ভব হবে। তাছাড়া এ বাধ্যবাধকতার কারণে অনেক আন্তর্জাতিক কোম্পানি রাশিয়ার বাজার ছেড়ে যেতে পারে।
অন্যদের আশঙ্কা, রাশিয়ায় তৈরি সফটওয়্যার দিয়ে ব্যবহারকারীদের ওপর নজরদারি করা হতে পারে।
গত পাঁচ বছরে রাশিয়ায় সাইবার জগতে সরকারি নিয়ন্ত্রণ অনেকখানি বেড়েছে। রাশিয়ার রাজনৈতিক ও সরকারি কর্মকর্তারা বহুবার নিজস্ব ওয়েব ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলেছেন।