দ্রুত বদলে যাচ্ছে জলবায়ু। বাড়ছে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন। জলবায়ু পরিবর্তনের লাগাম টানতে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমানোর বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। এর পরিবর্তে জোর দিতে বলা হচ্ছে পরিবেশবান্ধব নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর। গুগল, মাইক্রোসফট ও অ্যামাজনের মতো প্রযুক্তি জায়ান্টরাও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনার লড়াইয়ে শামিল থাকার কথা বিভিন্ন সময় জানিয়েছে। তবে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিলেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে জীবাশ্ম জ্বালানি খাতের উন্নয়নে এসব কোম্পানির আগ্রহ রয়েছে। বিশেষত জ্বালানি তেল উত্তোলন খাতের কারিগরি আধুনিকায়নে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করছে এসব টেক জায়ান্ট। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
জ্বালানি তেল অনুসন্ধান ও উত্তোলন বরাবরই কঠিন একটি কাজ। এজন্য প্রয়োজন দক্ষ কারিগরি জ্ঞান। আধুনিক প্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহার। প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে একদিকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল অনুসন্ধান ও উত্তোলন কার্যক্রম সহজ হয়ে আসে, অন্যদিকে জ্বালানি পণ্যটির উত্তোলন ব্যয়ও কমিয়ে আনা সম্ভব হয়। ফলে উত্তোলন বাড়ে। আর্থিক লাভ বেশি হয়।
জ্বালানি তেল উত্তোলন খাতের বিকাশকালীন পর্যায়ে ড্রিল ও পাম্পের কাজে প্রযুক্তির ব্যবহার বসার আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল। এ সময় প্রযুক্তি ব্যবহার করে একের পর এক আধুনিক ড্রিলিং যন্ত্র তৈরি হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে পরিস্থিতি। একই সঙ্গে বদলেছে প্রযুক্তিও। এখন অনেক কূপে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার হচ্ছে। বিভিন্ন কূপে নতুন নতুন রিজার্ভ খুঁজতে ব্যবহার হওয়া কম্পিউটার অ্যালগরিদম তুলনামূলক সঠিক প্রাক্কলন করতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলনকারী কোম্পানিগুলোকে এসব প্রযুক্তি সরবরাহ করছে গুগল, মাইক্রোসফট ও অ্যামাজনের মতো টেক জায়ান্টরা। তাই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে টেক জায়ান্টদের লাভের পাল্লা ভারী করতে জ্বালানি তেল খাতের দিকে মনোযোগ আরো জোরালো হচ্ছে।
ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন খাতের কোম্পানিগুলো এআই প্রযুক্তির পেছনে সম্মিলিতভাবে ১৭৫ কোটি ডলার ব্যয় করেছে। ২০২৫ সাল নাগাদ এসব কোম্পানি এআই প্রযুক্তি করায়ত্ত করতে সব মিলিয়ে ৪০০ কোটি ডলার ব্যয় করতে পারে। অর্থাৎ, সাত বছরের ব্যবধানে এআই প্রযুক্তি খাতে অতিরিক্ত ২২৫ কোটি ডলার ব্যয় করতে পারে জ্বালানি উত্তোলনকারী কোম্পানিগুলো। এ পরিসংখ্যান থেকে জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন খাতে টেক জায়ান্টদের দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই আগ্রহের সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়।