চীনভিত্তিক হুয়াওয়ের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) মেং ওয়ানঝুকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন কানাডার অ্যাটর্নি জেনারেল। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করার অভিযোগে মেংকে ২০১৮ সালে ভ্যাংকুভারে গ্রেফতার করে কানাডা সরকার। এ গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে বাণিজ্য বিরোধ নতুন মাত্রায় পৌঁছে। খবর এএফপি।
সম্প্রতি কানাডার বিচার বিভাগের এক মুখপাত্রের প্রকাশিত নথি অনুসারে গ্রেফতার মেং ওয়ানঝুকে কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে হস্তান্তর করা হতে পারে। কারণ তার কার্যক্রম উভয় দেশেই অপরাধ হিসেবে বিবেচিত করা হয়েছে।
২০১৮ সালের শেষ দিকে হুয়াওয়ে প্রতিষ্ঠাতার বড় মেয়ে এবং প্রতিষ্ঠান সিএফও মেং ওয়ানঝুকে মার্কিন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুরোধে কানাডার ভ্যাংকুভার থেকে আটক করা হয়। ২০১৯ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ভ্যাংকুভারে তার প্রত্যর্পণের বিষয়ে শুনানি শুরু হয়।
মেং ওয়ানঝুর আইনজীবীদের দাবি, হুয়াওয়ের এ শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাকে যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তরের সুযোগ নেই। কারণ মেং ওয়ানঝু এমন কোনো অপরাধ করেননি, যার জন্য তাকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ করা যেতে পারে। এমন করা হলে তা কানাডার আইনের পরিপন্থী হবে। যেহেতু মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ছিল ইরানের ওপর, তাই এটা কানাডায় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না।
হুয়াওয়ে বিশ্বের বৃহৎ নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম এবং দ্বিতীয় বৃহৎ স্মার্টফোন নির্মাতা কোম্পানি। এর সরঞ্জামের নিরাপত্তা নিয়ে বরাবরই সন্দেহ প্রকাশ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির অভিযোগ, টেলিযোগাযোগ সরঞ্জামের মাধ্যমে হুয়াওয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ওপর নজরদারির কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং এসব তথ্য সরাসরি চীন সরকারের কাছে হস্তান্তর করছে। এমন অভিযোগে গত বছরের মে মাসে হুয়াওয়ের ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ। একই সময় প্রতিষ্ঠানটিকে যুক্তরাষ্ট্রে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়।
গত শুক্রবার ভ্যাংকুভারে উত্থাপিত নথিগুলো গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পেয়েছে উদ্ধৃত করে কানাডার অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মেংয়ের আর্থিক লেনদেনে প্রতারণার মতো বিষয় উঠে এসেছে, যা কানাডার আইন অনুযায়ী এক ধরনের অপরাধ।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বিমানবন্দর থেকে মেং ওয়ানঝুকে গ্রেফতারের পর থেকে চীন ও কানাডার কূটনৈতিক টানাপড়েন চরম পর্যায়ে পৌঁছে এবং এ সময় তার মুক্তির দাবি তোলা হয়। এর ঠিক নয়দিন পরই চীনে কানাডার সাবেক কূটনীতিক মাইকেল কোভ্রিগ ও ব্যবসায়ী মাইকেল স্প্যাভোরকে আটক করেছিল দেশটি, যাদের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ করা হয়।