স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহকালে পিতা-মাতার সম্মতি গ্রহণ না করায় আবারো মামলার মুখে বৈশ্বিক বৃহত্তম সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগল। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল হেক্টর বাল্ডেরাস অ্যালফাবেট নিয়ন্ত্রণাধীন গুগলের বিরুদ্ধে এ মামলা করেছেন। বিশ্বব্যাপী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় গুগল তার ক্রোমবুক ল্যাপটপ বিনা মূল্যে বা সাশ্রয়ী মূল্যের পাশাপাশি ‘জি স্যুট ফর এডুকেশন সফটওয়্যার’ প্যাকেজে বিক্রি করে।
এ বিষয়ে গুগল কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোকে মারাত্মক ভুল বলে স্বীকার করেছে। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানোর অনুরোধ করা হলে কোনো উত্তর দেয়নি টেক জায়ান্টটি।
এদিকে বাল্ডেরাসের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্রায়ান ম্যাকম্যাথ বলেন, বিষয়টি নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে তার দল ও অন্যান্য কয়েকজন প্রযুক্তিবিদ অনুসন্ধান করেছেন। এতে দেখা যায়, ১৩ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীরা তাদের ক্রোমবুক ব্যবহার করে ওয়েব ব্রাউজিং, অবস্থান, পাসওয়ার্ড ও অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য স্থানান্তর করে গুগলে নেয়া হয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা সুরক্ষা আইনটি লঙ্ঘন করে শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ করেছে সার্চ জায়ান্ট গুগল। তথ্য সংগ্রহের আগে ওইসব শিক্ষার্থীর মা-বাবার কাছ থেকে কোনো ধরনের অনুমতি নেয়নি তারা। এক্ষেত্রে গুগল সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্রায়ান ম্যাকম্যাথ উদ্বেগ প্রকাশ করে আরো বলেন, যদিও এখন পর্যন্ত এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে ওইসব শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত তথ্যের অপব্যবহার করেছে গুগল। তবে এ তথ্য থেকে টেক জায়ান্টটি অর্থ আয় করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
গুগলের মুখপাত্র জোসি কাস্তেনিদা জানান, জি স্যুট ফর এডুকেশন স্কুলগুলোকে অ্যাকসেস নিয়ন্ত্রণ করতে দেয়। এছাড়া প্রয়োজন অনুযায়ী স্কুলগুলো শিক্ষার্থীদের পিতা-মাতার সম্মতি গ্রহণ করে।
অনলাইনে শিশুদের ব্যক্তিগত তথ্যনিরাপত্তা আইনের তদারকি প্রতিষ্ঠান ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) এক বিবৃতিতে জানায়, শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য যখন বিদ্যালয়গুলো সফটওয়্যার ক্রয় করে, তখনই মূলত তারা সব ধরনের সম্মতি গ্রহণ করে।
তবে নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল হেক্টর বাল্ডেরাস ও আরো কয়েকজন রাষ্ট্রীয় অ্যাটর্নি জেনারেল গত বছর এফটিসিকে আহ্বান করেছিল যে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণের এ আইন গুগলের মতো বড় বড় টেক জায়ান্ট খুব বেশি অনুসরণ করতে চায় না। এ প্রতিষ্ঠানগুলো শিশুদের পিতা-মাতার অনুমতি ছাড়াই তাদের তথ্য সংগ্রহ করে।
তাছাড়া ২০১৮ সালে বাল্ডেরাস গুগল ও আরো কয়েকটি প্রযুক্তি সংস্থার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ব্যবহূত মোবাইল অ্যাপ থেকে অবৈধভাবে ডাটা সংগ্রহ করার অভিযোগ তুলে মামলা করেছিল। তবে সে সময় প্রতিষ্ঠানগুলো এ অভিযোগ অস্বীকার করেছিল এবং বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।