এবার হ্যাকিংয়ের কবলে পড়েছে ‘ফেশিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যার’ ক্লিয়ারভিউ এআই। বুধবার খবরটি নিশ্চিত করেছে ক্লিয়ারভিউ নিজেই।
চুরি হওয়া ডেটার মধ্যে রয়েছে গ্রাহকদের পূর্ণ তালিকা, গ্রাহকরা কতোবার সার্চ করেছেন সে সম্পর্কিত তথ্য এবং সবমিলিয়ে কতগুলো অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে সে তথ্যগুলো।
মূলত মানুষের ছবির সঙ্গে সন্দেহভাজনদের ছবি তুলনা করে শনাক্ত করার কাজটি করে থাকে প্রতিষ্ঠানটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি। নেটিজেনদের ছবি নানাবিধ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অন্যান্য ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করে তা ক্ষেত্রবিশেষে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে বিক্রিও করে থাকে ক্লিয়ারভিউ এআই।
সবমিলিয়ে তিনশ’ কোটি ছবির একটি ডেটাবেজ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। ইন্টারনেটে ইউটিউব, ফেইসবুক, ভেনমো এবং লিংকডইনের মতো নানাবিধি সাইট থেকে সংগ্রহ করে গড়ে তোলা হয়েছে ওই ছবির ভাণ্ডার। হ্যাকিংয়ের কবলে ওই ছবির ডেটাবেজ পড়েনি বলেই দাবি করেছে নিউ-ইয়র্ক ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ক্লিয়ারভিউ এআই।
“নিরাপত্তা ক্লিয়ারভিউ এআইয়ের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ডেটায় অনুপ্রবেশ একবিংশ শতাব্দির জীবনের অংশ। আমাদের সার্ভারে কোনো অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেনি। ত্রুটিটি সারিয়ে তোলা হয়েছে, এবং আমরা নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে কাজ করছি।” – বলেন ক্লিয়ারভিউ এআই আইনজীবি টর একেল্যান্ড।
ঠিক কী ধরনের নিরাপত্তা ত্রুটি সৃষ্টি হয়েছিল, সে বিষয়টি এখনও সুনির্দিষ্টভাবে জানায়নি প্রতিষ্ঠানটি। ক্লিয়ারভিউ এআইয়ের ডেটা চুরির খবরটি প্রথমে জানায় সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি বিস্ট। ক্লিয়ারভিউয়ের অধিকাংশই গ্রাহকই বিভিন্ন দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। টরন্টো, আটলান্টা এবং ফ্লোরিডার মতো স্থানের পুলিশ বিভাগগুলো ক্লিয়ারভিউয়ের প্রযুক্তি ব্যবহার করছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে সিনেটের প্রতিবেদনে।
ইন্টারনেট থেকে এভাবে অনুমতি ছাড়া ছবি সংগ্রহ ও সেগুলো ব্যবহার করে ফেশিয়াল রিকগনিশন সেবা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে এর আগে গোপনতা প্রশ্নে সমালোচকদের তোপের মুখে পড়ে ক্লিয়ারভিউ এআই। জানুয়ারির শেষে “ক্লিয়ারভিউয়ের বিরুদ্ধে ব্যক্তি স্বাধীনতায় ছদ্মবেশী দখলদারীর” অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলার অভিযোগে বলা হয়, “পুরোপুরি লোভে পড়ে কর্মকাণ্ড চালায় ক্লিয়ারভিউ এআই”।
মার্কিন ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট ‘নর্দান ডিস্ট্রিক্ট অফ ইলিনয় ইস্ট ডিভিশন’ আদালতে নথিভুক্ত হয় ওই মামলাটি। ‘ক্লিয়ারভিউ এআই’র কর্মকাণ্ড নাগরিক স্বাধীনতার জন্য হুমকি বলেও অভিযোগ তোলা হয় ওই সময়।
গুগল, ফেইসবুক ও মাইক্রোসফটের মতো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোও ক্লিয়ারভিউ এআইয়ের উপর চটেছে। তাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে যাতে প্রতিষ্ঠানটি যাতে এভাবে ছবি না সংগ্রহ করতে পারে, সেজন্য ‘সিস-অ্যান্ড-ডিসিস্ট’ চিঠিও পাঠিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।