বাংলাদেশী ডেভেলপারদের জন্য ‘অ্যাপগ্যালারি’তে অ্যাপ নিবন্ধন ও আপলোডের সুযোগ চালু করেছে হুয়াওয়ে টেকনোলজিস লিমিটেড।এর ফলে বাংলাদেশের জনপ্রিয় অ্যাপগুলো এখন অ্যাপগ্যালারিতে আপলোড করা যাচ্ছে। ব্যক্তি বা কোনো প্রতিষ্ঠান চাইলে নিজেদের অ্যাপ অ্যাপগ্যালারিতে আপলোড করে বিশ্বজুড়ে থাকা হুয়াওয়ের ডিভাইস ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছতে পারবেন।
হুয়াওয়ে বাংলাদেশের তথ্যমতে, তারা বিশ্বজুড়ে ডিভাইস ব্যবহারকারীদের জন্য একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত অ্যাপ ইকোসিস্টেম গড়তে কাজ করছে। এরই মধ্যে নিজেদের অ্যাপগ্যালারিতে ৫৫ হাজারের বেশি অ্যাপ যুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশেরও বেশকিছু জনপ্রিয় অ্যাপ নিজেদের অ্যাপগ্যালারিতে যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া অ্যাপগ্যালারির সমৃদ্ধির জন্য বিশ্বব্যাপী ১৩ লাখ ডেভেলপার ও ৩ হাজার প্রকৌশলীর সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ চলছে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি অ্যাপ বিতরণ ক্ষেত্র বাড়ানোর বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে।
বাংলাদেশে ৩০ লাখের বেশি হুয়াওয়ে এবং অনার ব্র্যান্ডের স্মার্টফোনে অ্যাপগ্যালারি প্রি-ইনস্টল রয়েছে। এখন পর্যন্ত দেশে অ্যাপগ্যালারির সক্রিয় গ্রাহক রয়েছেন চার লাখের বেশি। বাংলাদেশের জনপ্রিয় আরো দেড় শতাধিক অ্যাপ শিগগিরই অ্যাপগ্যালারিতে যুক্ত হবে। এরই মধ্যে বাংলাদেশী ইউটিলিটি, ব্যাংকিং, শিক্ষা, সংবাদ, ই-কমার্স, বিনোদনসহ কয়েকটি ক্যাটাগরির অ্যাপ অ্যাপগ্যালারিতে যুক্ত হয়েছে। এছাড়া শিগগিরই বাংলাদেশের গ্রাহকদের জন্য রাইডশেয়ারিং, মোবাইল ব্যাংকিং, সরকারি-বেসরকারি অ্যাপসহ প্রয়োজনীয় সব অ্যাপ অ্যাপগ্যালারিতে যুক্ত হবে। ফলে দেশের হুয়াওয়ে ও অনার ডিভাইস ব্যবহারকারীরা শিগগিরই একটি সমৃদ্ধ অ্যাপ গ্যালারির সেবা উপভোগ করতে পারবেন। দেশের ডেভেলপাররা http://developer.huawei.com/ consumer/en/ এবং https://developer. huawei.com/consumer/en/devservice/doc/30204 লিংক ভিজিট করে অ্যাপ রেজিস্ট্রার ও অ্যাপগ্যালারিতে আপলোড করতে পারবেন।
চীনভিত্তিক হুয়াওয়ে নিজস্ব অ্যাপ স্টোর অ্যাপগ্যালারির সমৃদ্ধির জন্য গত জানুয়ারিতে ২ কোটি ৬০ লাখ ডলার ব্যয় করার ঘোষণা দেয়। গত বছর মে মাসে প্রতিষ্ঠানটির ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। যে কারণে নিজেদের পণ্য উন্নয়নে মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্টগুলোর কাছ থেকে সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ও সেমিকন্ডাক্টর পণ্য ক্রয়ের পথ বন্ধ হয়ে যায়। এতে নিজেদের স্মার্টফোনে গুগলের অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারের সুযোগ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। ওই সময় হুয়াওয়ে জানায়, তাদের হাতে অ্যান্ড্রয়েডের বিকল্প প্রস্তুত আছে। এরই অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব ‘হারমনি’ অপারেটিং সিস্টেম উন্মোচন করেছে। জনপ্রিয় মেট সিরিজের নতুন দুই ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোনে হারমনি অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে তার প্রমাণও দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
অ্যাপগ্যালারি বিষয়ে হুয়াওয়ে কনজিউমার বিজনেসের গ্লোবাল পার্টনারশিপ ও ইকো-ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রেসিডেন্ট ওয়াং ইয়ানমিন বলেন, মোবাইল ডিভাইস; বিশেষ করে স্মার্টফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতা উন্নত করার মূলেই রয়েছে অ্যাপ্লিকেশন বা বিভিন্ন প্রয়োজনীয় অ্যাপ। ফাইভজির যুগে অ্যাপ মার্কেটপ্লেস এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিদ্যমান বিভিন্ন অ্যাপস মার্কেটপ্লেসের ওপর পরিচালিত একটি গবেষণা থেকে দেখা যায়, গ্রাহকরা এখন মূলত অ্যাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিয়ে সবচেয়ে বেশি সচেতন। বিশ্বব্যাপী নানা ক্যাটাগরির ডেভেলপারদের সঙ্গে নিয়ে হুয়াওয়ে এ রকম একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত অ্যাপ ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে কাজ করছে, যা বিশ্বব্যাপী ডিভাইস ব্যবহারকারী ও ডেভেলপারদের উপকৃত করবে।
সম্প্রতি হুয়াওয়ের বৈশ্বিক ‘ডেভেলপার ডে অনলাইন সামিট’ অনুষ্ঠানে নিজস্ব অ্যাপ গ্যালারির নানা তথ্য তুলে ধরে হুয়াওয়ে জানায়, বিশ্বের শীর্ষ তিনটি অ্যাপ মার্কেটপ্লেসের একটি এখন হুয়াওয়ে অ্যাপগ্যালারি। বর্তমানে সেবাটির ১৭০টি দেশে ৪০ কোটির বেশি মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছেন।
বাংলাদেশে মেট ৩০ প্রো ডিভাইস উন্মোচন বিষয়ে হুয়াওয়ে কনজিউমার বিজনেস গ্রুপের (বাংলাদেশ) জিটিএম ডিরেক্টর বেয়ন্ড ঝেং বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো (এইচএমএস) সমর্থিত ফোন মেট ৩০ প্রো নিয়ে আসা হচ্ছে। ফ্ল্যাগশিপ এ স্মার্টফোনের দারুণ সব ফিচারের কারণে এরই মধ্যে বিশ্ববাজারে ভালো সাড়া ফেলেছে। আশা করছি, ডিভাইসটি বাংলাদেশের গ্রাহকদের প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবে।