করোনাভাইরাস এখন মহামারি। সারা পৃথিবী এর বিরুদ্ধে লড়ছে। জীবন বাঁচাতে সারা বিশ্বে ভেন্টিলেটর বা অক্সিজেন যন্ত্রের ব্যাপক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় মানবতার ডাকে সাড়া দিলো বাংলাদেশি ইলেকট্র্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন। নিজস্ব কারখানায় ওয়ালটন অক্সিজেন ভেন্টিলেশন যন্ত্রসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকেই এসব জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম তৈরি শুরু করবে ওয়ালটন।
সোমবার (৩০ মার্চ) এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বিশ্বখ্যাত মেডিকেল যন্ত্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মেডট্রনিকের সহায়তায় ওয়ালটন ভেন্টিলেটর তৈরিতে এগিয়ে এসেছে। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে দেশে ভেন্টিলেটর উৎপাদন হবে। এ ব্যাপারে আমরা ভীষণভাবে আশাবাদী।
এ প্রসঙ্গে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ বলেন, কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ভেন্টিলেটর খুবই জরুরি। ওয়ালটন সব সময় দেশের মানুষের চাহিদা ও প্রয়োজনকে প্রাধান্য দিয়ে আসছে। সেজন্য উদ্ভুত পরিস্থিতিতে জীবন রক্ষাকারী ভেন্টিলেটর, পিএপিআর (পাওয়ার এয়ার পিউরিফায়ার রেসপিরেটর), অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, ইউভি ডিসইনফেকট্যান্ট, সেফটি গগলস, প্রোটেকটিভ শিল্ড, রেসপিরেটরি মাস্ক ইত্যাদি চিকিৎসা সরঞ্জাম তৈরিতে কাজ করছে ওয়ালটন।
বর্তমানে এসব চিকিৎসা সরঞ্জামের গবেষণা ও উন্নয়ন (আরএন্ডডি) এবং ডিজাইন নিয়ে কাজ চলছে। কারখানাসহ অফিস ছুটি থাকলেও এ কাজে নিয়োজিত আছেন ওয়ালটনের অর্ধশতাধিক প্রকৌশলী। তারা করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় দেশের জরুরি অবস্থা বিবেচনায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা যন্ত্র তৈরিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
কর্তৃপক্ষ জানায়, ওয়ালটনের উদ্দেশ্য, বিশ্বের ক্রান্তিলগ্নে মানুষের পাশে দাঁড়ানো। ইতোমধ্যেই ওইসব মেডিক্যাল প্রোডাক্ট তৈরিতে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। ডিজাইন এবং গবেষণা ও উন্নয়নের কাজ চলছে। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে সেফটি গগলস এবং প্রোটেকটিভ শিল্ড উৎপাদন শুরু হবে। এরপর ভেন্টিলেটরসহ অন্যান্য ডিভাইস উৎপাদন শুরু হবে। যা হবে দেশের চিকিৎসা খাতের জন্য মাইলফলক। প্রথমবারের মতো দেশ পাচ্ছে বাংলাদেশে তৈরি ভেন্টিলেটর, পিএপিআর এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর।
ওয়ালটনের আরেক নির্বাহী পরিচালক উদয় হাকিম বলেন, দেশ-বিদেশে এখন ভেন্টিলেটরের বিশাল ক্রাইসিস। মানুষের জীবন বাঁচাতে এটি এখন জরুরি। আর তাই প্রয়োজনের তাগিদে আমরা ভেন্টিলেটর উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে মনে রাখতে হবে, এটি একটি উচ্চ প্রযুক্তি নির্ভর পণ্য। এটি উৎপাদন সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। সম্ভাব্য স্বল্প সময়ের মধ্যে আমরা ভেন্টিলেটর উৎপাদনে যাব। অন্যান্য পণ্যের উৎপাদন এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকেই হয়তো শুরু করতে পারব।
উদয় হাকিম এ বিষয়ে সরকারের আইসিটি মন্ত্রণালয় এবং অন্যদের সহযোগিতা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। তিনি যোগ করেন, সরকার এবং ওয়ালটনের এ উদ্যোগের ফলে বাঁচবে অসংখ্য প্রাণ। তার প্রত্যাশা, ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্যের মতো এ খাতেও স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে বাংলাদেশ। রয়েছে রপ্তানির বিশাল সুযোগ।