হুয়াওয়েকে খুন হতে দেখে বেইজিং চুপচাপ বসে থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের একজন শীর্ষ নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, যদি চীনা প্রতিষ্ঠানটির ওপর আর কোনো নিষেধাজ্ঞা আসে, তবে এর জবাব দেওয়া হবে। গত মঙ্গলবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসিকে এসব কথা বলেন হুয়াওয়ের বর্তমান চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা এরিক যু।
হুয়াওয়ের এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে যদি সে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে হুয়াওয়ের জন্য চিপ তৈরি করতে না দেওয়া হয়, তবে বিকল্প খুঁজে দেখা হবে।
সম্প্রতি বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, ট্রাম্প প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা নতুন নিয়ম জারি করছেন, যাতে মার্কিন চিপ নির্মাতারা সে দেশের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে হুয়াওয়ের জন্য চিপ তৈরি করলে অনুমোদনের প্রয়োজন পড়বে।
একটি সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানায়, তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি (টিএসএমসি) যাতে হুয়াওয়ের কাছে চিপ বিক্রি করতে না পারে, সে লক্ষ্যে এ নিয়ম করা হচ্ছে। হুয়াওয়ের নকশায় চিপ তৈরিতে কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি।
রয়টার্সের ওই প্রতিবেদনের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এরিক যু বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যদি এ ধরনের নিয়ম বাস্তবায়ন করা হয়, তখন বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একবার প্যান্ডোরার বাক্স খুললে তা বৈশ্বিক ইকোসিস্টেমের ওপর চেইন মারাত্মক শৃঙ্খল বিক্রিয়া শুরু করবে। এতে শুধু হুয়াওয়ে ধ্বংস হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে চীনের ৫–জি যন্ত্রপাতি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে যুক্তি দেওয়া হচ্ছে। যু বলেন, চীনও চাইলে মার্কিন যন্ত্রের জন্য একই যুক্তিতে তাদের পণ্য চীনের বাজারে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে। যদি বেইজিং পাল্টা ব্যবস্থা নেয়, তবে এ খাতে চরম বৈশ্বিক প্রভাব পড়বে। হুয়াওয়ে মরলে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোতেও আঁচড় পড়বে।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে হুয়াওয়েকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয় এবং মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোকে হুয়াওয়ের সঙ্গে ব্যবসায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে হুয়াওয়েকে এখনো যন্ত্রপাতি সরবরাহের অনুমতি দিতে হয়েছে দেশটিকে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওই নিষেধাজ্ঞা হুয়াওয়ের আয়ের ওপর প্রভাব ফেলেছে। গত মঙ্গলবার হুয়াওয়ে কর্তৃপক্ষ তাদের বার্ষিক আয় ঘোষণার সময় জানিয়েছে, তাদের অভ্যন্তরীণ পূর্বাভাসের চেয়ে বার্ষিক আয় কম হয়েছে।