বিশ্বজুড়ে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে সৃষ্ট রোগ কভিড-১৯ আক্রান্ত ও মৃত্যের সংখ্যা বাড়ছে। মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসটি মোকাবেলায় ১০০ কোটি ডলার অনুদান দেয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটার ও পেমেন্ট অ্যাপ স্কয়ারের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসি। খবর বিবিসি।
টুইটারে দেয়া জ্যাক ডরসির ঘোষণা অনুযায়ী, তিনি ব্যক্তিগত সম্পদের প্রায় ২৮ শতাংশ কভিড-১৯ মোকাবেলায় অনুদান দিতে যাচ্ছেন। এক টুইটে তিনি লিখেন, ‘নিডস আর ইনক্রিজিংলি আর্জেন্ট’।
চীনের উহান নভেল করোনাভাইরাসের উত্পত্তিস্থল হলেও এখন তা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। কভিড-১৯ দক্ষতার সঙ্গে মোকাবেলায় সক্ষম হয়েছে চীন। ভাইরাসটি এখন ইউরোপের দেশগুলোতে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইতালির পর এখন স্পেন ও যুক্তরাষ্ট্র করোনা মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে অনেক দেশ ও অঞ্চল লকডাউনে থাকায় বৈশ্বিক অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে। অনেক ছোট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি অর্থ সংকটে পড়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে কভিড-১৯ আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা দিতে ভেন্টিলেটরের (কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের যন্ত্র) সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্যসেবাকর্মীরা প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরঞ্জাম ছাড়াই আক্রান্তদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং স্বাস্থ্যসেবাকর্মীদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহে অনুদানের অর্থ ব্যয় করবেন জ্যাক ডরসি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৪৩ বছর বয়সী জ্যাক ডরসি একযোগে টুইটার এবং স্কয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) দায়িত্ব পালন করছেন। অনুদানের অর্থ দিতে তিনি স্কয়ারে নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকা শেয়ার কাজে লাগাবেন, যা ‘স্মার্ট স্মল ফাউন্ডেশনের’ মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।
বিবৃতিতে জ্যাক ডরসি জানান, অনুদানের অর্থ দিতে তিনি স্কয়ারের শেয়ার ছেড়ে দেবেন। কারণ প্রতিষ্ঠানটিতে তার নিয়ন্ত্রণে অনেক শেয়ার রয়েছে। অনুদানের অর্থ জোগাড়ে এসব শেয়ার ধাপে ধাপে বিক্রি করা হবে। কভিড-১৯ মহামারী থেমে গেলে অনুদানের কিছু অর্থ মেয়েদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও শিক্ষার পাশাপাশি গবেষণা খাতে ব্যয় করা হবে।
বিশ্বজুড়ে কভিড-১৯ আক্রান্ত বাড়তে শুরু করায় গত মার্চের শুরুর দিকে কর্মীদের বাসায় থেকে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছে টুইটার। বিশেষত হংকং, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার টুইটার কর্মীদের বাসা থেকে কাজ করতে বলা হয়েছিল। বিশ্বব্যাপী টুইটারের ৫ হাজার কর্মীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে টুইটার কর্তৃপক্ষ।
ওই সময় টুইটারের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান জেনিফার ক্রিস্টি বলেন, আমাদের চারপাশের মানুষের মধ্যে কভিড-১৯ আক্রান্তের ঝুঁকি কমিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য। যে কারণে কর্মীদের বাসায় থেকে কাজ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এভাবে কিছুটা হলেও করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার হার কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
টুইটার এর আগে কর্মীদের বিদেশ ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। জ্যাক ডরসির ‘সাইথ বাই সাউথওয়েস্ট’ সম্মেলনে যোগ দানের কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয়েছিল। অবশ্য পরে করোনা আতঙ্কে ওই সম্মেলনটিই বাতিল ঘোষণা করা হয়েছিল।