বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় (ডব্লিউএইচও) তহবিল সরবরাহ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বজুড়ে চলমান ভয়াবহ কভিড-১৯ মহামারীর মাঝ পর্যায়ে এসে জাতিসংঘের সংস্থাটির বৃহৎ দাতা দেশের এমন সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন বিলিয়নেয়ার জনহিতৈষী বিল গেটস। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তকে শুনতে যতটা খারাপ তার চেয়ে ভয়ংকর আখ্যায়িত করেছেন তিনি। খবর সিএনবিসি।
গত বুধবার টুইটারে পৃথক পোস্টে মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস ও তার স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস ডব্লিউএইচওতে মার্কিন তহবিল সরবরাহ বন্ধের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেন। কভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়া ও মোকাবেলায় ডব্লিউএইচওর ভূমিকা নিয়ে পর্যালোচনা করছে মার্কিন প্রশাসন। এর মধ্যে সংস্থাটি অর্থায়ন বন্ধের সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই ঠিক নয় বলে দাবি করেন বিল গেটস ও মেলিন্ডা গেটস।
টুইটে বিল গেটস লেখেন, বিশ্ববাসী যখন কভিড-১৯ মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে, তখন ডব্লিউএইচওতে মার্কিন অর্থায়ন বন্ধের সিদ্ধান্ত শুনতে যতটা না খারাপ তার চেয়েও ভয়ংকর। কোনো সন্দেহ নেই, ডব্লিউএইচওর সক্রিয় ভূমিকার কারণে কভিড-১৯ ছড়ানোর গতি কমানো সম্ভব হয়েছে। ডব্লিউএইচও এ মুহূর্তে কার্যক্রম বন্ধ করে দিলে দ্বিতীয় আর কোনো প্রতিষ্ঠান এর বিকল্প হয়ে উঠতে পারবে না।
ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেন কভিড-১৯ মোকাবেলায় ডব্লিউএইচও তার ‘প্রাথমিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে’। যে কারণে সংস্থাটিতে অর্থায়ন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তবে বিতর্কিত এ সিদ্ধান্তের ফলে দেশে ও বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন ট্রাম্প।
জাতিসংঘের এ সংস্থাটির বিরুদ্ধে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তোলার পাশাপাশি ট্রাম্প বলেন, চীনে প্রথম নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর সংস্থাটি তা ছড়িয়ে পড়ার তথ্য ‘গোপন করেছিল’। এদিকে পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ডব্লিউএইচওর তহবিল সরবরাহ বন্ধের সময় নয় এটা।
কভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় ভূমিকার জন্য ট্রাম্প নিজ দেশেই সমালোচিত হচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সমালোচনার কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তিনি।
গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার তথ্য গোপন করা ও গুরুতর অব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ডব্লিউএইচওর ভূমিকা নির্ধারণ করতে একটি পর্যালোচনা চলছে। এ সময় সংস্থাটিতে তহবিল জোগান দেয়া বন্ধ রাখতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ডব্লিউএইচও তার প্রাথমিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। যে কারণে সংস্থাটিকে অবশ্যই জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র ডব্লিউএইচওর বৃহত্তম একক দাতা দেশ এবং গত বছর সংস্থাটিকে ৪০ কোটি ডলার দিয়েছিল দেশটি।