অ্যাপলের স্মার্টঘড়ি ২০১৪ সালে বাজারে আসার পর অনেক মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে। এই ঘড়ির প্রযুক্তিকে গবেষকেরা মানুষের ভবিষ্যৎ সঙ্গী হিসেবে ভাবছেন।
৬২ বছর বয়সী ব্রিটিশ নাগরিক ডেনিশ অ্যানসেলমো একবার হার্ট অ্যাটাকের সময় অ্যাপল ওয়াচে সতর্ক বার্তা পাওয়ায় সে যাত্রায় তার জীবন রক্ষা পেয়েছিল। সেদিন ‘জ্বর জ্বর’ ভাব শরীরে নেমে আসার সময় তার স্মার্টঘড়ির পর্দায় দেখেন হৃৎস্পন্দন প্রতি মিনিটে ২১০!
সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করে অ্যানসেলমো বলেন, ‘আমার সহকারীর সঙ্গে উঠানে বেড়া ঠিক করছিলাম। দুপুরের খাবার সেরে কাজে ফেরার মিনিট দশেক পরেই সহকারীকে বললাম, আমার খারাপ লাগছে, কিছুক্ষণ বসতে চাই।’
অ্যাপল ওয়াচ কিনেছিলেন সপ্তাহ দুয়েক আগেই। এরই মধ্যে যখন-তখন নাকি স্মার্টঘড়িতে হৃদকম্পনের গতি দেখা ‘মুদ্রাদোষে’ পরিণত হয়েছিল তার। সাধারণত হৃৎস্পন্দন স্বাভাবিকের চেয়ে নিচে থাকে, তবে সেদিন ২১০ উঠেছিল বলে জানান তিনি। অ্যাম্বুলেন্স ডাকার কথা বলতেই সবাই দৌড়ে এসে বুঝতে পারে যে হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা হৃদযন্ত্রের ধমনির বাধা অপসারণ করেন।
ফিলিপ ইশো নামের আরেক ব্যক্তি স্পিডবোটে চড়ে হারবোর থেকে ম্যাককরমি যাচ্ছিলেন শিকাগো শহরের ছবি তোলার জন্য। সেই মুহুর্তে হঠাৎ একটি ঢেউ এসে তাকে পানিতে ফেলে দেয়। পানিতে পড়ে তার ফোনটিও হারিয়ে যায়। কিন্তু সাহায্যে চাওয়ার জন্য তার কাছে বার্তা পাঠানোর কিছু ছিল না। পরক্ষণেই ইশো তার হাতে থাকা অ্যাপেল ওয়াচ থেকে সোফেস্টিকেটেড অপারেটিং সিস্টেম (এসওএস) প্রযুক্তির সাহায্যে জরুরি নাম্বারে (৯১১) তে যোগাযোগ করেন। তার পরেই শিকাগো পুলিশ হেলিকপ্টার নিয়ে তাকে উদ্ধার করতে আসে এবং তিনি প্রাণে বেঁচে যান।
ফিচার: অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ ৪-এ আনা ওয়াচওএস ৫-এ রয়েছে উন্নত কার্যক্ষমতা ও যোগাযোগ ফিচার। এর সঙ্গে আনা হয়েছে নতুন একটি অ্যাকসেলোমিটার আর জাইরোস্কোপ, যোগ করা হয়েছে স্বাস্থ্যসেবা যা অ্যাপলের ভাষায় ‘বৈপ্লবিক’। এতে থাকা হার্ট রেইট সেন্সর এর নতুন ইসিজি অ্যাপ ১ ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাম বা ইসিজি করতে সক্ষম, আর এই প্রযুক্তিকে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ অধিদপ্তর এফডিএ।
ওয়াচওএস ৫-এর মাধ্যমে অ্যাপল ওয়াচ থেমে থেমে ব্যাকগ্রাউন্ডেই হৃৎস্পন্দন মাপে আর যদি কোনো অস্বাভাবিক স্পন্দন পায় তবে একটি ব্যবহারকারীকে একটি নোটিফিকেশনের মাধ্যমে তা জানাতে সক্ষম।
ওয়াচে গ্লুকোজ পর্যবেক্ষণ অ্যাপ ডেক্সকম বা প্রতিদিনের কাজের উন্নতি দেখানো অ্যাপ স্ট্রেকস-এর মতো থার্ড-পার্টি অ্যাপগুলো আরও বিস্তারিত তথ্য দিতে পারে।