এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের ডাক বিভাগগুলোর সংগঠন এশিয়া প্যাসিফিক পোস্টাল ইউনিয়ন বা এপিপিইউ গতকাল বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের আর্থিক লেনদেন সেবা ‘নগদ’-এর ভূয়সী প্রশংসা করেছে।
একইসঙ্গে এপিপিইউ’র শীর্ষ নেতারা ‘নগদ’-কে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সেবা হিসেবে স্বীকৃতি দেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া দেশগুলোর মধ্যে অন্তত নয়টি দেশ ‘নগদ’ বিজনেস মডেল তাদের নিজ দেশে রেপ্লিকেট করার আগ্রহের কথা জানিয়েছে।
‘নগদ’ বিজনেস মডেল নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করা দেশগুলোর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, ভারত, জাপান, ভিয়েতনাম, ইরান এবং সলোমন আইসল্যান্ডের প্রতিনিধিবৃন্দ অভিমত প্রকাশ করেছেন যে, ‘নগদ’-এর মতো সেবা চালু করতে পারলে তাদের দেশের পোস্টাল সেবা আবারও জেগে উঠতে পারবে।
এপিপিইউ’র পোস্টাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকটি গতকাল বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বাংলাদেশ ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র এবং ‘নগদ’-এর নির্বাহী পরিচালক মো. সাফায়েত আলম অংশ নেন।
বাংলাদেশ ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র বর্তমানে এপিপিইউ’র পোস্টাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ওয়ার্কিং গ্রুপের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। অনুষ্ঠানে এপিপিইউ’র সেক্রেটারি জেনারেল লিন হোংলিয়াং এবং ৩২টি সদস্য দেশের সকল প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
‘নগদ’-এর সেবার প্রসার এবং পাবলিক প্রাইভেট মডেলের মাধ্যমে ডিজিটাল আর্থিক সেবার ভূয়সী প্রশংসা করেন এপিপিইউ’র সেক্রেটারি জেনারেল লিন হোংলিয়াং। তিনি বলেন, নিঃসন্দেহে ‘নগদ’ এখন এপিপিইউ সদস্য দেশগুলোর ডাক বিভাগের মধ্যে রোল মডেল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। একইসঙ্গে এমন সেবা দেশগুলোর ডাক বিভাগকে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য শক্তি যোগাতে পারে।
এপিপিইউ সদস্য দেশগুলোর এমন প্রশংসা ও একই সেবা চালু করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করা প্রসঙ্গে সুধাংশু শেখর ভদ্র বলেন, ‘এটি সত্যিই আমাদের জন্য আনন্দের একটি উপলক্ষ্য ছিল যে, এপিপিইউ’র সদস্য দেশগুলো “নগদ”-এর অনেক প্রশংসা করেছেন এবং তারা আমাদের চালু করা মডেলে তাদের দেশেও সেবা চালু করার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।’
‘দেশের ভেতরে এবং আন্তর্জাতিক পরিম-লে ‘নগদ’ আমাদের খুবই গর্বের একটি স্থান দিয়েছে। আমি এ জন্য ‘নগদ’ ম্যানেজমেন্টকে ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি প্রত্যাশা করি এমন একদিন আসবে যে দিন ‘নগদ’ এবং বাংলাদেশের নাম ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সেবার পরিম-লে উদাহরণ হিসেবে ব্যবহৃত হবে,’ যোগ করেন সুধাংশু শেখর ভদ্র।
‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ মিশুক বলেন, ‘এমন প্রশংসা অবশ্যই আমাদের সেবার মান এবং পরিম-লকে আরো বিস্তৃত করতে উৎসাহিত করবে। আমাদের লক্ষ্য যতটা সম্ভব দেশের মানুষের সেবা করা এবং তাদের আর্থিক সেবার মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করা।’ তিনি বলেন, ‘নগদ-এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশের পতাকাটি উন্নীত করতে পেরে আমরা অত্যন্ত গর্বিত।’
একের পর এক উদ্ভাবনী সেবা চালু করার মাধ্যমে এরই মধ্যে দেশের দ্বিতীয় মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে ‘নগদ’। বর্তমানে দেশে ১৫টি প্রতিষ্ঠান মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সেবা দিয়ে যাচ্ছে। জনগণের কাছে সরকারি সহায়তা বিতরণের জন্যও ‘নগদ’ এখন সরকারের প্রথম পছন্দ হয়ে উঠেছে।