এমনটা প্রায়ই শোনা যায় যে বিভিন্ন চীনা কোম্পানি স্মার্টফোন ও অ্যাপের মাধ্যমে ভারতীয়দের ডেটা চুরি করে চীনে পাচার করছে। মূলত এই কারণেই দেশে অ্যান্টি-চায়না পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং দেশ থেকে সাধারণ মানুষ চীনা প্রোডাক্ট ও ব্র্যান্ড বহিস্কার করার দাবি তোলে। এবার একটি নতুন খবর পাওয়া গেছে যেখানে বলা হয়েছে চীনের মোবাইল কোম্পানি ভিভো ভারতে একই ইএমইআই নাম্বারের সঙ্গে সাড়ে ১৩ হাজার স্মার্টফোন চালাচ্ছে এবং এটি সম্পূর্ণভাবে বেআইনি।
স্মার্টফোন কোম্পানি ভিভো সম্পর্কে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য লাইভ হিন্দুস্তান সংবাদপত্রের নিউজ পোর্টাল থেকে জানা গেছে। এই ওয়েবসাইট ভিভো সম্পর্কিত এই খবর ছেপে গোটা কেস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছে। ভিভো এর মোবাইল সম্পর্কে এই জোচ্চুরির মামলা উত্তরপ্রদেশের মীরাটে করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ভিভো কোম্পানির মোট ১৩,৫৫৭টি মোবাইল একই আইএমইআই নাম্বারের সঙ্গে চলছে।
আসলে কি ঘটেছে?
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী মীরাটে কর্মরত পুলিশ সাব ইন্সপেক্টর আশারাম বিগত কিছু সময় ধরে ভিভো স্মার্টফোন ব্যবহার করেছিলেন। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে তাঁর ফোনের ডিসপ্লে ভেঙে যায় এবং তিনি তাঁর ফোন রিপেয়ারের জন্য কোম্পানির সার্ভিস সেন্টারে দিয়ে আসেন। কিন্তু ফোনটি সেখান থেকে নিয়ে আসার পরেও ফোনটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয়। তাঁর ফোনে বারবার এরর আসতে থাকে। সাইবার ক্রাইম সেলের পক্ষ থেকে তদন্ত করে দেখা যায় তাঁর ফোনের আইএমইআই নাম্বার এবং তাঁর ফোনের বাক্সের গায়ে লেখা নাম্বারদুটি এক নয়।
এই কথা সার্ভিস সেন্টারে জানালে তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেয় ফোনটির আইএমইআই নাম্বার বদলানো হয়নি। আশারাম তাঁর ফোনে Reliance Jio এর সিম ব্যবহার করতেন তাই জিও কোম্পানির থেকে ফোনটির ডেটা চাওয়া হয়। জিওর থেকে পাওয়া রিপোর্ট দেখে সবাই চমকে যেতে বাধ্য হন। জিওর রিপোর্ট অনুযায়ী গত বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সকাল ১১টা থেকে ১১.৩০টার মধ্যে গোটা দেশের বিভিন্ন এলাকায় মোট ১৩,৫৫৭টি স্মার্টফোনে আশারামের ফোনের একই আইএমইআই নাম্বারযুক্ত ফোন চলতে দেখা গেছে।
মীরাটের এডিজি রাজীব সবরবাল তাঁর বক্তব্যে জানান এটি দেশ ও দেশের নাগরিকদের সুরক্ষার ক্ষেত্রে একটি প্রশ্ন। পুলিশ ভিভো মোবাইল এবং সার্ভিস সেন্টারের বিরুদ্ধে জোচ্চুরির মামলা রুজু করে ভিভো ইন্ডিয়ার প্রমুখ অধিকর্তা হরমনজিৎ সিংহকে নোটিশ পাঠিয়েছে। এই সমস্যার গভীরতা খুব ছোট একটি উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যায়- যদি ওই আইএমইআই নাম্বারযুক্ত কোনো একটি ফোন থেকে কোনো অপরাধ করা হতো তবে সেটি ট্র্যাক করার সময় গোটা দেশের ১৩ হাজারেরও বেশি এলাকায় একই সময়ে একই সঙ্গে ফোনটি চালু দেখাতো।