করোনার কারণে নিউইয়র্ক সিটিতে চরম অর্থ সংকটে পড়া ৬ লাখ বাড়িতে বিনামূল্যে অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ দিচ্ছে সিটি কর্তৃপক্ষ। এজন্যে খরচ পড়বে ১৫৭ মিলিয়ন ডলার। ৮৭ মিলিয়ন ডলার পাওয়া গেছে এনওয়াইপিডির বাজেট কর্তনের বিলিয়ন ডলার থেকে। ৬ লাখ সংযোগের মধ্যে দুই লাখ থাকবে পাবলিক হাউজিংয়ের (সিটি বরাদ্দকৃত নামমাত্র ভাড়ার এপার্টমেন্ট) এপার্টমেন্টে।
সিটি মেয়র বিল ডি ব্লাসিয়ো তার নিয়মিত প্রেসব্রিফিংকালে গত ৭ জুলাই এ তথ্য প্রকাশ করেছেন। মেয়র বলেছেন, করোনার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাস, চাকরি এবং ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অনেক কিছুই অনেক লাইনে করতে হচ্ছে। সভা-সমাবেশও হচ্ছে ভার্চয়ালি। এ অবস্থায় স্বল্প আয়ের লোকজনকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে হয়। স্কুল লকডাউনে যাবার পর এসব পরিবারের সন্তানেরা ক্লাস ফলো করতে সক্ষম হয়নি। এভাবে তারা আরো পিছিয়ে পড়ছে। অর্থাৎ সভ্য সমাজের ছোঁয়া থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে। জাতিসংঘের শহর এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে এই সিটিতে এমন অবস্থা কাম্য হতে পারে না।
উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সিটির ৮৩ লক্ষাধিক অধিবাসীর ৪৬% এরই বাসায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সুবিধা নেই। ‘এনওয়াইসি ইন্টারনেট মাস্টার প্ল্যান’ নামক একটি সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই সিটির মোট জনসংখ্যার ১৮% তথা ১৫ লাখ মানুষের বাসায় টেলিফোন নেই। মোবাইল ফোনও নেই। কারণ, এরা দারিদ্রসীমার নীচে জীবন-যাপন করছেন। অথচ সময়ের সাথে সঙ্গতি রেখে নিজেকে আপডেট রাখা তথা অর্থনৈতিক প্রবাহের সাথে জীবন-যাপনের স্বার্থে ইন্টারনেটের বিকল্প নেই। কিন্তু ব্রডব্যান্ড কানেকশনের ফি এতবেশী যে, নিম্নআয়ের মানুষের পক্ষে সেটি ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে মেয়র ব্লাসিয়ো বলেন, আমরা চাচ্ছি সকলের জন্যে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে তাদেরকেও সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলার যোগ্য করতে। বিশেষ করে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া অথবা অন্য কোন জরুরী পরিস্থিতির সতর্কবার্তা তাদের কাছেও পৌছে দিতে। মানুষে মানুষে যে অসমতা রয়েছে, সেটি দূর করতেও অনেকটা ভূমিকা রাখবে এই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সুবিধা।
সংখ্যালঘু এবং নারী মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বা সমাজ সংগঠনের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে ইন্টারনেট সংযোগ প্রদানের এই কর্মসূচির প্রকল্প সাবমিটের জন্যে। তারাই পাবেন অগ্রাধিকার। নেটওয়ার্ক অপারেট করার জন্যে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থাও সে সব সংস্থার কাছেই ছেড়ে দেয়া হবে। এ কাজে আগ্রহীরা ৩১১ নম্বরেও ফোন করে বিস্তারিত জানতে পারবেন।