ল্যাপটপের লক খুলতে টেকনিশিয়ানের কাছে গিয়ে যে এত বড় বিপদ হবে, সেটি বুঝতেই পারেননি তরুণী। হবু স্বামীকে পাঠানো তার গোপন ছবি হাতিয়ে গাজীপুরের ওই টেকনিশিয়ান দিনের পর দিন তাকে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে।
প্রতারক শাকিল মাহমুদ (২১) অবশ্য শেষ পর্যন্ত বাঁচতে পারেনি। বাংলাদেশ সাইবার পুলিশের জালে তাকে ধরা পড়তে হয়েছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে শনিবার বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের নামকরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আমরা এমনই একটি অভিযোগ পাই। ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তার হবু বর উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে ইউএসএতে যান। সেখানে থাকাকালীন তাদের ভেতর বেশ কিছু গোপন ছবি আদান-প্রদান হয়। ইউএসএ-তে থাকা অবস্থাতেই এক সন্ত্রাসী হামলায় তার হবু স্বামী নিহত হয়।’
‘তার বেশ কিছুদিন পর থেকেই ভিকটিমকে একটি বিদেশি নম্বর থেকে বার বার ফোন দিয়ে হ্যাকার ও সাইবার বিশেষজ্ঞ পরিচয় দিয়ে বলা হয় তার এবং তার হবু স্বামীর বেশ কিছু গোপনীয় ছবি ও ভিডিও হ্যাকারের হাতে এসেছে এবং এই ছবিগুলো অনলাইন থেকে মুছে দিতে হলে তাকে ইউএস ডলার পাঠাতে হবে। ডলার না দিলে ভিকটিমের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ছড়িয়ে দেয়া হবে।’
ভিকটিমকে সেসব ছবির কিছু স্যাম্পল পাঠায় শাকিল। সেসব ছবি দেখে ভিকটিম বুঝতে পারে সে তার হবু স্বামীর সাথে যেসব ছবি শেয়ার করেছিল এগুলো তারই অংশ। এমনিতেই হবু বরের মৃত্যুতে ভিকটিম খুবই ভেঙে পড়ে; অন্যদিকে হ্যাকারের ঝামেলা।
ওই তরুণী পরে সাইবার পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেন। সিআইডি সাইবার পুলিশ জানতে পারে, ভিক্টিমের হবু স্বামীর মৃত্যু হলে ইউএসএ পুলিশ তদন্ত শেষ করে নিহতের ব্যবহৃত ডিভাইস এবং ল্যাপটপ বাংলাদেশে তার পরিবারের কাছে পাঠায়। যেহেতু ডিভাইসটি লক করা ছিল তাই সেটি ব্যবহার করতে পারছিলেন না পরিবারের লোকজন, ল্যাপটপটি আনলক করতেই একটি দোকানের দ্বারস্থ হন।
তবে ভিকটিমের ধারণা ছিল না এখান থেকে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে; কেননা যে নম্বর থেকে ভিকটিমকে বিভিন্ন ছবি পাঠানো হচ্ছিল সেটি একটি বিদেশি নম্বর।
সাইবার পুলিশের একটি বিশেষ টিম ওই নম্বরের সূত্র ধরে এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত শাকিলকে সম্প্রতি গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করে।
যে রিপেয়ার শপে ডিভাইসটি ঠিক করতে দেয়া হয়েছিল শাকিল সেই দোকানের ম্যানেজার ও দক্ষ টেকনিশিয়ান। তার বিরুদ্ধে ডিএমপি’র নিউমার্কেট থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।
‘ সাধারণ নেটিজেনদের পরামর্শ দিয়ে পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট জানিয়েছে, ‘পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে ৪ বছরের জেল। ফেক আইডি হলেও উপায় নাই, ধরা খেতেই হবে। কোনওভাবেই ব্যক্তিগত ছবি কোথাও রাখবেন না। ‘