নাগরিকদের ভোগান্তি এবং কোভিড-১৯ মহামারিতে স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) কোনো কোরবানির হাট বসছে না। এরপরও মানুষ যেন নিশ্চিন্তে কোরবানির পশু কিনতে পারে, সে জন্য ‘ডিজিটাল হাট’-এর আয়োজন করেছে ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ।
ডিজিটাল হাট-এর ক্রেতারা কোরবানির পশু কেনার সময় যাতে কোনো রকম স্বাস্থ্যঝুঁকি ছাড়াই সহজে পেমেন্ট করতে পারেন, সে জন্য ডিজিটাল হাট-এ এক্সক্লুসিভ পার্টনার হিসেবে থাকছে ডাক বিভাগের আর্থিক লেনদেন সেবা ‘নগদ’। রাষ্ট্রীয় আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’-ই প্রথম ডিজিটাল হাটের পেমেন্ট পার্টনার।
এর ফলে একজন বিক্রেতাও কোনো ধরনের ঝুঁকি ছাড়াই খুব সহজে পশু বিক্রির টাকা পেয়ে যাবেন। এই প্রক্রিয়ায় ক্রেতা বা বিক্রেতা কাউকেই ঝুঁকি নিয়ে ঘরের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।
সম্প্রতি চালু হওয়া এই ডিজিটাল হাটে এরই মধ্যে ৩৪টি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের সহায়তায় দেড় হাজারের বেশি পশু সংযুক্ত হয়েছে। তাই ক্রেতারা রঙ, আকার, দেশি, বিদেশি সব জাতের গরু, ছাগল, মহিষ এই হাট থেকে কিনতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে ন্যায্যমূল্যের বিষয়টি তদারকি করছে ডিএনসিসি। তাই দাম নিয়ে ভাবতে হবে না ক্রেতাদের। আর পেমেন্টের জন্য দেশের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল এবং সর্বাধিক নিরাপদ পেমেন্ট পার্টনার ‘নগদ’ তো আছেই।
নতুন ধারার এই ডিজিটাল সেবা বিষয়ে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘এটি পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করলাম আমরা। জানি অনেক চ্যালেঞ্জ আছে, অনেক ভুলত্রুটি হতে পারে। এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে কাজ করতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের আল্টিমেট গোল হচ্ছে, যত্রতত্র পশু বেচাকেনা এবং কোরবানি না দিয়ে একটা সিস্টেমের মধ্যে আনা। ফলে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশু কেনাবেচা করা যাবে।’
ডিএনসিসি-এর উদ্যোগের সাথে থাকার বিষয়ে ‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ মিশুক বলেন, একজন জনমানুষের জীবন সহজ করার জন্য ‘নগদ’ প্রথম থেকে কাজ করছে। কোরবানির পশুর হাটে পশু কেনা- বেচায় অনেক ধরনের সমস্যা পোহাতে হয়। বিশেষ করে একজন বিক্রেতা তার পশু বিক্রির টাকা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন, কিন্তু ‘নগদ’ সেই উদ্বেগ একদম কমিয়ে দিয়ে একটি সহজ সমাধান নিয়ে এসেছে। সবার নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যে লেনদেন করার বিষয়কে বরাবরই প্রাধান্য দেয় ‘নগদ’।
এ পর্যন্ত ১৫ হাজারের অধিক ভিজিটর অনলাইন এই প্ল্যাটফর্মে তাদের পছন্দসই পশুটি যাচাই-বাছাইয়ের চেষ্টা করেছেন। প্রথমবারের মতো ডিএনসিসি ডিজিটাল হাট আয়োজনে সহযোগিতা করেছে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ)।
সম্প্রতি একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘ডিজিটাল হাট’-এর উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
ওই একই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার মুস্তাফিজুর রহমান, এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন।
চাইলেই যেকোনো নম্বরে ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা পাঠানো যায়। কারও যদি ‘নগদ’অ্যাকউন্ট না থাকে, তবুও তিনি টাকা পেতে পারেন। টাকা পাওয়ার পর ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট খুললেই তিনি প্রাপ্ত সেই টাকা তুলতে পারবেন। আর ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট খোলা খুবই সহজ! ঘরে বসে এনআইডি সাথে নিয়ে ‘নগদ’ অ্যাপ ডাউনলোড করে মাত্র ১ মিনিটে ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। এ ছাড়া রবি আজিয়াটা লিমিটেড ও এয়ারটেল-এর গ্রাহকেরা মাত্র ১০ সেকেন্ডে খুলতে পারবেন ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট।